সাকিব-তাসকিনকে ছাড়া নেমে আবাহনীর কাছে বিশাল হার মোহামেডানের

আবাহনীর হয়ে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন মুশফিক।ছবি: প্রথম আলো

পরিবারকে সময় দিতে মোহামেডানের হয়ে সুপার লিগ খেলছেন না সাকিব আল হাসান। চোটের কারণে নেই ফাস্ট বোলার তাসকিন আহমেদ। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির সুপার লিগে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে সেই উত্তাপও নেই, যেমনটা ছিল এই দুই দলের লিগ পর্বের ম্যাচে। ফলাফলও হলো প্রত্যাশিত। কাগজে-কলমে পিছিয়ে থাকা মোহামেডান মুশফিকুর রহিমের আবাহনীর কাছে হেরে গেল ৬০ রানের বিশাল ব্যবধানে।

মুশফিকুর রহিমের ফিফটি ও ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারের ৪৩ রানে আগে ব্যাট করে আবাহনী করেছে ১৯৩ রান। জবাব দিতে নেমে সপ্তম ওভারের মধ্যে ৪২ রানেই ৬ উইকেট হারানো মোহামেডান শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার খেলে ৭ উইকেট হারিয়ে করেছে ১৩৩ রান। মোহামেডানের হয়ে ফিফটি করেছেন বাঁহাতি মিডিয়াম পেসার আবু হায়দার!

সাকিব ও তাসকিনকে এই ম্যাচে পায়নি মোহামেডান।
ছবি: মোহামেডান

চোটের কারণে লিগে এর আগের ম্যাচগুলোতে মাঠের বাইরে থাকা লিটন দাস আজ মোহামেডান ম্যাচ দিয়ে ফিরেছেন আবাহনীর একাদশে। তবে ফেরার ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ওপেনিংয়ে নেমে রুয়েল মিয়ার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন মাত্র ৪ রান করে। তবে আরেক ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ২৭ বলে ৪৩ রান করায় লিটনের রান না পাওয়া খুব একটা চোখে পড়েনি।

চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে লিটনকে হারানোর সময় আবাহনীর রান ছিল ২৮। সেখান থেকে তিনে নামা নাজমুল হাসানের (১৭ বলে ২৭ রান) সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ২৬ বলে ৪০ রানের জুটি গড়েন মুনিম। এরপর চারে নেমে মুশফিকুর রহিম দেখিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে ঝুঁকিহীন ক্রিকেট খেলেও কীভাবে দ্রুত রান তোলা যায়।

আবাহনীর ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ২৭ বলে করেছেন ৪৩ রান।
ছবি: প্রথম আলো

মুশফিকের ৩২ বলে ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংসটিতে ছিল ৮টি চার ও ১টি ছক্কা। মুশফিক ও মুনিম—দুই ডানহাতির ব্যাটিংয়ে আবাহনী গড়ে এবারের প্রিমিয়ার লিগের এক ইনিংসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

মুশফিক ক্রিজে আসার পর মুনিম অবশ্য দ্রুতই ফিরে যান, নবম ওভারের পঞ্চম বলে মুনিম আউট হওয়ার সময় আবাহনীর রান ছিল ৩ উইকেটে ৭৭। এরপর মোহাম্মদ নাঈম (১৮ বলে ২৪), আফিফ হোসেন (৯ বলে ১০) ও মোসাদ্দেক হোসেনের (৭ বলে ৩ চারে ১৪) সঙ্গে ছোট ছোট জুটিতে আবাহনীকে এগিয়ে নিয়ে যান মুশফিক। মোহামেডানের বোলারদের মধ্যে ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নজর কেড়েছেন তরুণ বাঁহাতি পেসার রুয়েল মিয়া।

মোহামেডানের বাঁহাতি বোলার আবু হায়দার আজ ব্যাট হাতে করেছেন ফিফটি!
ছবি: প্রথম আলো

আবাহনীর বিশাল লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে ইনিংসের শুরুতেই পথ হারায় মোহামেডান। ৪২ রান তুলতেই মোহামেডান হারায় ৬ উইকেট। এর মধ্যে অধিনায়ক শুভাগত হোমসহ চার ব্যাটসম্যানই আউট হয়েছেন কোনো রান করার আগেই! এই ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে রান পেয়েছেন শুধু চারে নামা ইরফান শুক্কুর, ১৮ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় করেছেন ২৭ রান।

সেখান থেকে ব্যাট হাতে চমক দেখান আটে নামা আবু হায়দার। ছয়ে নামা মাহমুদুল হাসান তখনো ক্রিজে ছিলেন, তাঁর সঙ্গে মিলে আবু হায়দার সপ্তম উইকেটে ৭৮ রান যোগ করেন ৭১ বলে। তবে জুটিটা মোহামেডানের অলআউট হওয়া ঠেকানোর পাশাপাশি শুধু পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমিয়েছে।

১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে মাহমুদুল আউট হওয়ায় জুটিটা ভাঙে, ৩৬ বলে ৩৭ রান করেছেন তিনি। আবু হায়দার ৪২ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ম্যাচসেরা হন আবাহনীর অধিনায়ক মুশফিক।