৬২ কর্মী ছাঁটাইয়ের পর ২৪ কোটি টাকা বোনাস নিচ্ছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা

হ্যারিসন (ডানে) বেশ বড় বোনাস নিচ্ছেনফাইল ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস ক্রিকেটকে বড় ধাক্কা দিয়েছিল। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার মতো ক্রিকেট বোর্ডও ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডও (ইসিবি) আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে একটি ছিল ৬২ কর্মীকে ছাঁটাই করা। আর্থিক ক্ষতি কমাতে বেতনের খরচ কমানোর উপায় হিসেবে ২০ ভাগ কর্মী ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসিবি।

সে খবর এক বছরের পুরোনো। কিন্তু পুরোনো খবর নতুন করে প্রাণ পেয়েছে বোর্ডের আরেকটি সিদ্ধান্তে। গত বছর খরচ কমাতে ৬২ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা বোর্ড থেকেই এবার ২১ লাখ পাউন্ড (বাংলাদেশি অর্থে ২৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা) বোনাস নিতে যাচ্ছেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মী।

ইসিবির সর্বশেষ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদি এক ভাতা প্রকল্পের অধীন ২০২২ সালে কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ২১ লাখ পাউন্ড দেওয়া হবে। এটা ছয় বা সাতজনের মধ্যে বণ্টন করা হবে বলে জানা গেছে। সবার নাম জানানো হয়নি। তবে প্রধান নির্বাহী টম হ্যারিসন ও দ্য হানড্রেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় প্যাটেলের নাম থাকার কথা নিশ্চিত করেছে ইসিবি।তাঁদের মধ্যে হ্যারিসন গত বছর বেতন কমিয়েছেন। তারপরও বছরে ৫ লাখ ১২ হাজার পাউন্ড বেতন নিয়েছেন হ্যারিসন।

পাঁচ বছর মেয়াদি এই ভাতা প্রকল্প ২০১৭ সালে আগের প্রধান কলিন গ্রেভস চালু করে গেছেন। বোর্ডের দাবি, ‘গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ কর্মকর্তাদের ধরে রাখতে’ এবং ‘প্রতিষ্ঠানের উন্নতি ধরে রাখতে ও দীর্ঘমেয়াদি পারফরম্যান্স ধরে রাখতে’ এ ভাতা প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা।

গত বছর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে ২০ ভাগ কর্মীকে ছাঁটাই করেছে ইসিবি। ২০২০–২১ মৌসুমে ১ কোটি ৬৫ লাখ পাউন্ড ক্ষতি হয়েছে বোর্ডের। ২০১৬ সালে যে বোর্ডের তহবিলে ৭ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড ছিল, সেটা গত বছর মাত্র ২০ লাখে নেমে এসেছে। তবু ইসিবি প্রধান ইয়ান ওয়াটমোর এই তহবিল প্রকল্প চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে কর্মী ছাঁটাই করার দুই মাস পরই এই প্রকল্পের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ওয়াটমোর।

এর পেছনে কারণ হিসেবে ওয়াটমোর বলেছেন, ‘মহামারির সময় বোর্ডের নেতৃত্ব অনন্য ছিল এবং তারাই সবার আগে নিজ থেকে বেতন কাটার কথা বলেছে। এই প্রকল্প ২০১৭ সালে শুরু হয়েছে এবং ২০২২ সালের জানুয়ারিতে মেয়াদ পূর্ণ হবে। আমরা বরং ২০২২ সাল থেকে নতুন কী দেওয়া যায়, সেটা ভাবছি।’

হান্ড্রেড ক্রিকেট বানিজ্যিক সাফল্য এনে দিয়েছে ইসিবিকে
ছবি: টুইটার

বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তের পেছনে প্রথমবারের মতো আয়োজিত দ্য হানড্রেডের সাফল্য ভূমিকা রাখতে পারে। ১ কোটি ৬১ লাখ মানুষ স্কাই স্পোর্টস ও বিবিসিতে হানড্রেড দেখেছেন। এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ মানুষ ২০২১ সালে অন্য কোনো ক্রিকেট দেখেননি। ৫ লাখ ১০ হাজার বিক্রীত টিকিটের ৫৫ শতাংশ দর্শকও নাকি প্রথমবারের মতো ক্রিকেট খেলা দেখতে এসেছিলেন। এ ছাড়া নতুন সম্প্রচারস্বত্বে ১১০ কোটি পাউন্ড পাচ্ছে বোর্ড। সে কারণেই হয়তো শীর্ষ কর্তাদের বোনাসের ব্যাপারে আর আপত্তি নেই তাদের।