৩৩ বল, ১৫ রান, ৪ উইকেট – এলোমেলো হয়ে শেষ বাংলাদেশ
প্রথম বলে চার মেরে সেশনটা শুরু করেছিলেন লিটন দাস। চা-বিরতির আগের সেশনটা লিটন ও মেহেদি হাসান মিরাজ যেভাবে শেষ করেছিলেন, চা-বিরতির পর এমন শুরুতে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা বুঝি নড়েচড়ে বসেছিলেন। আরও আশায় বুক বেঁধেছিলেন—কিছু একটা হবে!
হলো বটে। তবে ৬৬ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যাওয়া লিটনের সেঞ্চুরি কিংবা ৫৩ রানে বিরতিতে যাওয়া মিরাজের ব্যাটে দারুণ কিছু নয়, এলোমেলো হলো বাংলাদেশ। ৮ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে চা-বিরতির আগের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা মুহূর্তেই শেষ।
লিটন ফিরলেন, তাঁর দেখানো পথে ফিরলেন মিরাজও। এ দুজনের মাঝে ‘অতিথি ভূমিকায়’ ক্রিজে কয়েক মিনিট সময় কাটিয়ে গেলেন নাঈম। তখন তো শুধু শেষের অপেক্ষা। শেষটা হতে বেশিক্ষণ সময় লাগল না। ২৯৬ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে পেল ১১৩ রানের লিড!
৩৩ বল আর ১৫ রানের মধ্যে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে এলোমেলোভাবেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।
লিটনকে দিয়ে শুরু হঠাৎ ফেরার এই মিছিল। কর্নওয়ালের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সুইপ করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলেন লিটন। আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন বটে, কিন্তু লিটন রিভিউ নেন। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত আসে, লিটনের ব্যাটে লেগেছে বল, ক্যাচ আউট হয়েছেন তিনি।
১৩৩ বল, ২১৪ মিনিট, ৭ চার আর ৭১ রানের ইনিংসটা দারুণ ছিল, কিন্তু বাংলাদেশের যে এর চেয়ে অনেক দারুণ কিছুর দরকার ছিল! সে হতাশা জাগিয়ে ফিরে গেলেন লিটন। সপ্তম উইকেট জুটিটা হলো ১২৬ রানের।
তখনো ক্রিজে মিরাজ ছিলেন, তাঁকে কেউ সঙ্গ দিতে পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসের ৪০৯ রানের সঙ্গে ব্যবধানটা আরও কমিয়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ, এমনটাই ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু নাঈম তো এলেন আর গেলেন। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলে ব্ল্যাকউডের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন, কিন্তু এভাবে ‘বেঁচে থাকা’ তাঁর পছন্দ হলো না। পরের বলেই ব্ল্যাকউডের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। ৬ উইকেটে ২৮১ থেকে তিন বলের মধ্যে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২৮১।
বাংলাদেশ কাল থেকে জোড়ায় জোড়ায় উইকেট হারিয়েছে। একজন আউট হলে তাঁর পথ ধরে আরেকজনও দ্রুতই ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। কিন্তু শেষে এসে জোড়ারও জোড়া হয়ে গেল। লিটন ও নাঈমের জোড়া উইকেটের পর মিরাজও বেশিক্ষণ টিকলেন না। গ্যাব্রিয়েলের বলে ব্রাথওয়েটের হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ হলো তাঁর ৫৭ রানের ইনিংস। আট বলের মধ্যে বাংলাদেশ হারাল ৩ উইকেট।
এরপর তো বাংলাদেশের শেষ কখন হয়, তার আগে বাংলাদেশ কত রান করে নিতে পারে, সেটির অপেক্ষা। ২৮৩ রানে মিরাজের বিদায়ের পর দশম উইকেটে আবু জায়েদ আর তাইজুল ইসলাম ১৩টি রান এনে দিয়েছেন। কিন্তু আলজারি জোসেফের বলে বোনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আবু জায়েদ ফিরতে নিশ্চিত হলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে বড় লিড নিয়েই শুরু করছে।
একটা মাইলফলকও হলো, যদি বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী কারও এ–জাতীয় রেকর্ডে এখন আর আগ্রহ থাকে আর কী! এই প্রথম বাংলাদেশের দশ ব্যাটসম্যানই আউট হলেন টেস্টের কোনো ইনিংসে।