বিমান ভূপাতিত আর ‘৬-০’ ইঙ্গিতে কী বোঝালেন হারিস রউফ

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে হারিস রউফের এমন কাণ্ডের সমালোচনা করা হচ্ছে আর পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে ঘটনাটিকে দেখা হচ্ছে ট্রল হিসেবে।

ভারতীয় সমর্থকদের উদ্দেশে কাল এমন অঙ্গভঙ্গি করেন পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার হারিস রউফছবি: এএফপি

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে আগের সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। তাই বলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল মুখোমুখি হবে, কিন্তু বিতর্কিত ঘটনা ঘটবে না, এমনটা কল্পনাও করা যায় না।

দুবাইয়ে কাল রাতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে যেমন নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন হারিস রউফ। বাউন্ডারির কাছে ফিল্ডিং করার সময় পাকিস্তানের এই ফাস্ট বোলার গ্যালারিতে থাকা ভারতীয় সমর্থকদের উদ্দেশে ‘৬-০’ ও ‘ফাইটার জেট ক্র্যাশ’ প্রদর্শন করেছেন।

স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে হারিস রউফের এমন কাণ্ডের সমালোচনা করা হচ্ছে আর পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে ঘটনাটিকে দেখা হচ্ছে ট্রল হিসেবে।

এখন প্রশ্ন হলো হাতের আঙুল দিয়ে ‘৬-০’ ও অঙ্গভঙ্গিতে ‘ফাইটার জেট ক্র্যাশ’ প্রদর্শন করে হারিস রউফ আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন?

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত এপ্রিলে হামলার ঘটনা নিশ্চয় মনে আছে! যার জেরে মে মাসে সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। কদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ এখনো গলেনি। বরং সেটির প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটে।

সামরিক সংঘাতের পর দুই দেশই নিজেদের জয়ী দাবি করে। পাকিস্তান সরকার জানায়, তারা ভারতীয় বিমানবাহিনীর ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। বিপরীতে, ভারতের হামলায় পাকিস্তানের কোনো বিমানের ক্ষতি হয়নি। রউফ তাঁর ‘৬-০’ ও ‘ফাইটার জেট ক্র্যাশ’-এর অঙ্গভঙ্গিতে ভারতীয় সমর্থকদের সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন।

উসকানিটা অবশ্য ভারতীয় সমর্থকেরাই আগে দিয়েছিলেন। রউফ বাউন্ডারির কাছে ফিল্ডিং করতে গেলেই তারা ‘কোহলি-কোহলি’ বলে চিৎকার করছিলেন।

পাকিস্তানের বিপক্ষে সেদিন ভারতকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দেন বিরাট কোহলি
ছবি: এএফপি

বিরাট কোহলি গত বছর ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর এই সংস্করণ থেকে অবসর নিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই তিনি টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপে নেই। এরপরও হারিস বাউন্ডারির কাছে ফিল্ডিং করতে যেতে কোহলির নাম ধরে তাঁকে রাগিয়ে দেওয়ার কারণ ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ।

আরও পড়ুন

মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে কোহলির অপরাজিত ৮২ রানের সুবাদে শেষ বলে জেতে ভারত। অথচ এক সময় ভারতের দরকার ছিল ৮ বলে ২৮ রান। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, ম্যাচটি পাকিস্তান জিততে চলেছে। কিন্তু রউফের শেষ দুই বলে চোখধাঁধানো দুটি শটে ছক্কা মারেন কোহলি।

কাল গ্যালারিতে থাকা ভারতীয় সমর্থকেরা ‘কোহলি-কোহলি’ চিৎকার করে রউফের তিন বছর আগের ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা’ দিয়েছেন। রউফও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে দাবি করেছেন, ক্রিকেট মাঠের লড়াইয়ে ভারত জিতলেও সামরিক লড়াইয়ে পাকিস্তানই জিতেছে।

বিরাট কোহলির কাছে টানা দুই ছক্কা খেয়ে হতাশা লুকাতে পারেননি হারিস রউফ
ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের দেওয়া ১৭২ রানের লক্ষ্য কাল ভারত সহজেই তাড়া করেছে। তবে ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেওয়া রউফই ছিলেন দলের সফলতম বোলার।