সাদা বলে লিটন: টি-টোয়েন্টির জন্যও রান চান নির্বাচকেরা

ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েছেন লিটনপ্রথম আলো

সাদা বলের ক্রিকেট মানে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। সাদা বলের ক্রিকেটে লিটন দাসের নিকট ভবিষ্যৎ নিয়ে যে সংশয়াচ্ছন্ন আবহ, সেটিও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি—দুই সংস্করণের ক্রিকেটেই।

এটুকু পড়ে কারও মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, টি-টোয়েন্টি কেন? টি-টোয়েন্টিতে তো লিটনের ফর্ম ওয়ানডের মতো খারাপ নয়। তা ঠিক। সর্বশেষ পাঁচ ওয়ানডেতে তিনি রান করেছেন ২২, ৬, ১*, ০ ও ০। আর সর্বশেষ পাঁচটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৩৫, ৪১*, ০, ৩৬ ও ৭। অনেক বেশি ভালো না হলেও ওয়ানডের তুলনায় ভালো তো বটেই। এবারের বিপিএলের পারফরম্যান্সটা সঙ্গে যোগ করে নিলে টি-টোয়েন্টি থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার কোনোই কারণ নেই।

কিন্তু ক্রিকেট যতটা না সংখ্যা আর পরিসংখ্যানের খেলা, তার চেয়ে অনেক বেশি কৌশল ও মানসিকতার। সে ক্ষেত্রেও নির্বাচকেরা বেশি বিবেচনায় রাখতে চাইছেন সর্বশেষ পরিস্থিতিটাকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে লিটন যেভাবে আউট হয়েছেন, তাতে সাদা বলের ক্রিকেটে ভালো করতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়াটা তাঁর জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করে নির্বাচক কমিটি। ব্যাটে রান না এলে টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কী করেছিলেন, সেটা লিটনের চিন্তায়ও ততটা থাকবে না, যতটা ভেসে বেড়াবে গত দুই ম্যাচের দুঃস্মৃতি। লিটনের ব্যাটে নির্বাচকেরা তাই রান চাইছেন সাদা বলের দুই সংস্করণ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির কথা ভেবেই।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে লিটন যেভাবে আউট হয়েছেন, তাতে সাদা বলের ক্রিকেটে ভালো করতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়াটা তাঁর জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করে নির্বাচক কমিটি
প্রথম আলো

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বসে প্রিমিয়ার লিগের খেলা দেখতে দেখতে আজ এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন, ‘আমরা লিটনকে পরিষ্কার বার্তা দিতে চেয়েছি যে তাকে দলে ফিরতে হলে আগে ফর্মে ফিরতে হবে। একজন খেলোয়াড়ের ফর্ম ভালো না থাকলে কোনো সংস্করণেই তার কাছ থেকে ভালো কিছু পাওয়ার চান্স থাকে না। তাই যেকোনো ফরম্যাটেই হোক, তার রান পাওয়াটা জরুরি।’

আরও পড়ুন

সাদা বলে লিটনকে আপাতত বিবেচনা না করার চিন্তাটা শুধু ওয়ানডের জন্য, নাকি ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি দুই সংস্করণের জন্যই—জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচকের মন্তব্য, ‘রানে ফেরাটা ইমপর্ট্যান্ট, সেটা যেকোনো খেলায়ই হোক। আর রানে না ফিরতে পারলে কোনো সংস্করণেই সে স্বচ্ছন্দ থাকবে না বলে আমরা মনে করি। কাজেই বার্তাটাকে দুই ক্ষেত্রেই ধরে নেওয়া যায়।’

প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন
প্রথম আলো

টি-টোয়েন্টিতে লিটনের ফর্ম ওয়ানডের তুলনায় অত খারাপ নয় মনে করিয়ে দিলে প্রধান নির্বাচকের মন্তব্য, ‘সেটা হতে পারে। তবে আমরা এখনকার ফর্মটাই আগে দেখব।’ রানে ফেরার একটা সুযোগ অবশ্য আজ প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগেই পেয়ে গিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আবাহনীর হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে ১৯ বলে ৫ রান করে বোল্ড হয়ে গেছেন আরাফাত সানির বলে।

আরও পড়ুন

কাল চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশ দল চলে যাবে সিলেটে, ২২ মার্চ সেখানেই শুরু প্রথম টেস্ট। এরপর দ্বিতীয় টেস্ট আবার চট্টগ্রামে। প্রধান নির্বাচকের আশা, টেস্টে ঠিকই দেখা যাবে আগের লিটনকে, ‘লিগে ও মাত্র একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেল। আরও দু–একটা ম্যাচ খেলতে পারলে ভালো হতো। তবে আশা করি, টেস্ট সিরিজে তার কাছ থেকে রান পাব আমরা। যেকোনো ফরম্যাটেই হোক, আমরা তার ব্যাটে রান চাই।’

সাদা বলের ক্রিকেট বলতে বাংলাদেশ দলের সামনে আপাতত টি-টোয়েন্ট ক্রিকেটই বেশি। শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ টি-টোয়েন্টির হোম সিরিজ এবং এর পরপরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে নির্বাচকেরা যখন সাদা বলের ক্রিকেট নিয়ে কিছু বলেন, সেটা টি-টোয়েন্টি মাথায় রেখেই বলবেন স্বাভাবিক। আর সে আলোচনায় সংস্করণের চেয়ে সাম্প্রতিক ফর্মটাই বেশি প্রাধান্য পাবে; কারণ, সংস্করণ যেটাই হোক, মানুষ তো লিটন একজনই!