বাদ ব্যানক্রফট: বল টেম্পারিং কাণ্ডের সম্পর্ক নেই, দাবি প্রধান নির্বাচকের

এবারও দলে সুযোগ পাননি ক্যামেরন ব্যানক্রফটইনস্টাগ্রাম

ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে দলে না নেওয়ার ক্ষেত্রে ২০১৮ সালের বল টেম্পারিং-কাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো রকমের ‘ষড়যন্ত্র-তত্ত্ব’-এর ব্যাপার উড়িয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি। এদিকে টম মুডি বলেছেন, তাঁর আশা, ব্যানক্রফটকে ঠিক কোন কারণে দলে নেওয়া হয়নি, সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে কথা বলে নেওয়া হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতা শেফিল্ড শিল্ডের সর্বশেষ মৌসুমে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক ছিলেন ব্যানক্রফট, এ মৌসুমেও সবার চেয়ে এগিয়ে তিনি। ডেভিড ওয়ার্নার অবসরে যাওয়ার পর এ ওপেনারের হওয়ার কথা ছিল দলে আসার ক্ষেত্রে যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে অস্ট্রেলিয়া সামনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে স্টিভেন স্মিথকে দিয়ে ওপেন করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দলে ডাকা হয়েছে আরেক ওপেনার ম্যাট রেনশকে।

২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে স্মিথ ও ওয়ার্নারের সঙ্গে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ব্যানক্রফটকেও। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২০১৯ সালের অ্যাশেজে দুটি টেস্টের জন্য দলেও ফিরেছিলেন ব্যানক্রফট। তবে এরপর আর সুযোগ পাননি। কিন্তু ২০২১ সালে এক সাক্ষাৎকারে ব্যানক্রফট বলেছিলেন, বোলাররা বল টেম্পারিংয়ের ‘কৌশল’-এর ব্যাপারে জানতেন না, এমন হতে পারে না। এরপর পাল্টাবিবৃতিও দিয়েছিলেন বোলাররা। কেপটাউনে খেলা চার বোলার-প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড ও নাথান লায়ন এখনো অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় বোলার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও একাদশে আছেন তাঁরা, কামিন্স তো এখন অধিনায়কই।

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ও প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি
রয়টার্স

এমন কোনো কিছু ব্যানক্রফটকে না নেওয়ার ক্ষেত্রে কাজ করেছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক বেইলি বলেছেন, ‘নির্দিষ্ট করে বললে, না। কয়েকবারই ক্যামেরনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে। (নির্বাচক) প্যানেলের দিক থেকে কোনো পর্যায়েই এ নিয়ে কথা হয়নি। এটা পুরোপুরিই ক্রিকেটীয় একটি সিদ্ধান্ত।’

আরও পড়ুন

সম্প্রতি ব্যানক্রফট নিজেও বলেছিলেন, কামিন্সদের সঙ্গে এখন আর কোনো ঝামেলা নেই তাঁর। একই কথা বলেছেন বেইলিও, ‘দলে একজন সদস্যও নেই, যার ক্যামের খেলা নিয়ে কোনো ঝামেলা থাকতে পারে, আমাদের তো অবশ্যই নেই। মানুষ যদি এমন কিছুকে কারণ হিসেবে দেখে, তাহলে আমি হতাশ হব। আপনাদের এবং ক্যামকে আবারও আশ্বস্ত করতে চাই, ব্যাপারটি এমন নয়; কখনো ছিল না এবং কখনো হবেও না।’

তবে রান করে যে ব্যানক্রফট তাঁর জোরালো দাবি জানিয়েছেন, সেটি স্বীকার করে নিয়েছেন বেইলি। কিন্তু এ মুহূর্তে রেনশই পরবর্তী ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁদের ভাবনা। সঙ্গে বেইলি এটিও বলেছেন, কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা মার্কাস হ্যারিসও নিজেকে অভাগা ভাবতেই পারেন। বেইলির মতে, ‘গত কয়েক বছরে ক্যামের রেকর্ড অসাধারণ এবং এ কারণে সিদ্ধান্তটিও বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল, একেবারে সূক্ষ্ম একটা সিদ্ধান্ত। সে দরজার কড়া নাড়ছে। আমার তো মনে হয় কয়েকজনই এমন দরজায় কড়া নাড়ছে, যেটি দারুণ।’

কদিন আগে ব্যানক্রফট বলেছিলেন, ওয়ার্নার বিদায় নেওয়ার পর তাঁর মতো স্বীকৃত কোনো ওপেনারকে বাদ দিয়ে মেকশিফট ওপেনারকে নেওয়া হলে তিনি হতাশ হবেন। শেষ পর্যন্ত হয়েছে সেটিই। এ সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না সাবেক অলরাউন্ডার টম মুডিও। এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘দল নির্বাচন কখনোই সহজ কোনো কাজ নয়, কিন্তু ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে উপেক্ষা করে যাওয়াটা মেনে নেওয়া কঠিন। সমসাময়িক অন্যদের চেয়ে তার প্রথম শ্রেণির পরিসংখ্যান এতটাই শক্তিশালী যে দেখে মনে হবে, এখানে অন্য কোনো ব্যাপার আছে। আশা করি, তার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা হয়েছে!’

আরও পড়ুন

অবশ্য বেইলি ব্যানক্রফটকে উপেক্ষা করার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, ‘কোনো সংশয় নেই, ক্রিকেটে নির্বাচনের একটা অংশ হচ্ছে ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় উপস্থিত থাকা, সঠিক সময়ে নিজের সেরার কাছাকাছি খেলা। এদিক থেকে মার্কাস হ্যারিসের জন্যও খারাপ লাগছে, যে বেশ কয়েকটি সফরে ছিল, শেষ যখন টেস্ট ক্রিকেট খেলছিল, তখনো বাদ পড়েও দুর্ভাগা ছিল। আমি বুঝি তাদের জন্য ব্যাপারটি খারাপ লাগার মতো এ মুহূর্তে। তবে যা করছেন, সেটিই করে যেতে হবে—এটিই অনেক পুরোনো নিয়ম।’

এদিকে অ্যারন হার্ডি এবং নাথান ম্যাকসুইনির কথাও উল্লেখ করেছেন বেইলি। ওয়ার্নারের ওপেনিং সঙ্গী উসমান খাজা চলে গেলে বা মার্চে নিউজিল্যান্ড সিরিজে আরও ব্যাটসম্যান প্রয়োজন হলে তাঁদের বিবেচনা করা হবে, বেইলির কথায় আছে এমন ইঙ্গিত। ফলে ব্যানক্রফট যে আপাতত তাঁদের পরিকল্পনায় নেই, সেটিও স্পষ্টই।