আকবরদের বিপক্ষে সুপার ওভারে সূর্যবংশীকে কেন নামানো হয়নি

বৈভব সূর্যবংশী। ছবিটি যুব ওয়ানডে ম্যাচে তোলাএএফপি

ওপেনিংয়ে নেমে করেন ১৫ বলে ৩৮ রান। তাতে ছিল চারটি ছক্কা ও দুটি চার। বৈভব সূর্যবংশীকে তবু সুপার ওভারে কেন নামানো হলো না?

দোহায় গতকাল এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারসের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের কাছে সুপার ওভারে হেরেছে ভারত ‘এ’ দল। এরপর এ প্রশ্ন উঠেছে। ভারত ‘এ’ দলের অধিনায়ক জিতেশ শর্মা এর জবাবে বলেছেন, সূর্যবংশীর সুপার ওভারে না নামানোটা তাঁর নিজের ও দলীয় সিদ্ধান্ত।

কাল আগে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে ১৯৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দল। তাড়া করতে নেমে শেষ বলে জয়ের জন্য ৪ রান দরকার ভারত ‘এ’ দলের। হার্শ দুবের শট লং অনে গেলেও সেখান থেকে দৌড়ে ২ রানের বেশি নেওয়া যেত না। নেহাল ওয়াধিরা ও হার্শ দৌড়ে দুটি রান নেনও।

কিন্তু মানসিক চাপের কারণেই সম্ভবত বোকামি করে বসেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অধিনায়ক আকবর আলী। হার্শকে রানআউট করতে বল স্টাম্পে মারেন। কিন্তু বল স্টাম্পে তো লাগেইনি, ফিল্ডারও ছিলেন না কাছাকাছি। তাতে ভারতের দুই ব্যাটসম্যানই সুযোগ পেয়ে তৃতীয় রান নিয়ে নেন। অথচ আকবর বলটা হাতে রেখে দিলেও ১ রানে জিতত বাংলাদেশ। কিন্তু ভারত ‘এ’ দল তৃতীয় রানটি নিয়ে নেওয়ায় ম্যাচ হয় টাই। খেলা গড়ায় সুপার ওভারে।

ম্যাচসেরা হন রিপন মন্ডল
এসিসি

সেখানে ভারত ‘এ’ দলকে কোনো রানই তুলতে দেননি পেসার রিপন মণ্ডল। ওপেনিংয়ে নামা জিতেশকে প্রথম বলেই বোল্ড করেন ইয়র্কারে। পরের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আশুতোষ শর্মা। বাংলাদেশ ‘এ’ দল একটি উইকেট হারিয়ে ম্যাচটি জিতে উঠেছে ফাইনালে।

আরও পড়ুন

তরুণদের মধ্যে সূর্যবংশী সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত ব্যাটসম্যানদের একজন। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের জন্য ১৪ বছর বয়সেই বেশ ভালো খ্যাতি কুড়িয়েছেন। এই টুর্নামেন্টেও এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান তাঁর। একটি সেঞ্চুরিসহ ৪ ইনিংসে ২৩৯ রান। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ২২টি ছক্কাও তাঁর। এমন ব্যাটসম্যানকে সুপার ওভারে কেন নামানো হলো না—সেই প্রশ্ন ওঠা মোটেই অমূলক নয়।

হারের পর সুপার ওভারে ব্যাটিংয়ের লাইনআপ নিয়ে পুরস্কার বিতরণীতে জিতেশ বলেন, ‘তারা পাওয়ারপ্লের মাস্টার (সূর্যবংশী ও প্রিয়াংশ আর্য)। কিন্তু ডেথ ওভারে মারার খেলোয়াড় আশু (আশুতোষ শর্মা), রমন (রমনদীপ সিং) ও আমি। এটা ছিল আমার ও দলীয় সিদ্ধান্ত।’

রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপে সেঞ্চুরিও পেয়েছেন সূর্যবংশী
এসিসি

হারের দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন জিতেশ, ‘দায়টা আমার। সিনিয়র হিসেবে ম্যাচটা আমার শেষ করে আসা উচিত ছিল। ব্যাপারটা হার নয়, শেখার বিষয়। কে জানে এই খেলোয়াড়েরাই হয়তো একদিন ভারতের হয়ে বিশ্বকাপ জিতবে। প্রতিভার বিচারে তারা আকাশসমান উচ্চতায়। এটা শেখা ও অভিজ্ঞতার বিষয়। আমার উইকেটই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।’

আরও পড়ুন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীরা সুপার ওভারে সূর্যবংশী না নামানোর সমালোচনা করছেন। জিতেশ আউট হওয়ার সময় ড্রেসিংরুমে সূর্যবংশীর চিন্তা ক্লিষ্ট মুখের ছবি অনেকে পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, জিতেশ আলোটা নিজের করে নিতেই কি সুপার ওভারে সূর্যবংশীকে ব্যাটিংয়ে পাঠাননি? যদিও শেষ পর্যন্ত জিতেশও পারেননি। শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দলই। দোহায় আগামীকাল ফাইনালে পাকিস্তান ‘এ’ দলের মুখোমুখি হবে আকবর আলীর দল।