বাবা–ছেলের ডাবল সেঞ্চুরিতে হানিফ মোহাম্মদদের পাশে চন্দরপলরা

ডাবল সেঞ্চুরির পর তেজনারায়ণ চন্দরপলছবি: উইন্ডিজ ক্রিকেট

বাবা শিবনারায়ণ চন্দরপলের মতো লম্বা ক্যারিয়ার হবে কি না তেজনারায়ণ চন্দরপলের, কে জানে! তবে ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টেই একটি কীর্তিতে বাবাকে ছাড়িয়ে গেলেন তেজ। আজ বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনে ডাবল সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন গত নভেম্বরে টেস্ট অভিষিক্ত তেজনারায়ণ। বাঁহাতি ওপেনারকে ২০৭ রানে রেখে ইনিংস ঘোষণা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তেজের বাবা শিবের টেস্ট সর্বোচ্চ ইনিংস ২০৩। দুবার ২০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন শিব। প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেতে অবশ্য ৮১ টেস্ট খেলতে হয়েছিল চন্দরপল সিনিয়রকে।

বাবার পর ছেলের টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি! ক্রিকেট ইতিহাসের বিরল এক কীর্তিতেও নাম উঠে গেছে চন্দরপল পরিবারের। টেস্ট ইতিহাসে চন্দরপলদের আগে বাবা-ছেলের ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি ছিল শুধু পাকিস্তানের মোহাম্মদ পরিবারের। কিংবদন্তি হানিফ মোহাম্মদ একটি ট্রিপল সেঞ্চুরিসহ দুবার ২০০ পেরিয়েছিলেন টেস্টে। তাঁর ছেলে শোয়েব মোহাম্মদও টেস্টে দুবার ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছেন। কাকতালীয়ভাবে চন্দরপলের মতো শোয়েব মোহাম্মদও দুবারই ২০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। হানিফ মোহাম্মদের দুটি ২০০ ছাড়ানো ইনিংসের একটিও অপরাজিত ২০৩ রানের!

বাবা শিবনারায়ণ চন্দরপলের সঙ্গে ছেলে তেজনারায়ণ চন্দরপল। ছবিটা ২০১৫ সালের
ছবি: ফেসবুক

তেজনারায়ণ আজ দিন শুরু করেছিলেন ১০১ রান নিয়ে। দিনের দ্বিতীয় সেশনের পানি পান বিরতির পর কিছু পরেই ডাবল সেঞ্চুরি পেয়ে যান ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। সেটিও কী রাজকীয়ভাবেই! ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ছক্কা মেরেই পেয়ে গেলেন ডাবল সেঞ্চুরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দশম খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটাকে ‘ডাবল’ বানালেন তেজনারায়ণ। ওই ওভার শেষেই ইনিংস ঘোষণা করেন উইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেগ ব্রাফেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৬ উইকেটে ৪৪৭।

বাবা হানিফ মোহাম্মদ ও ছেলে শেহজার মোহাম্মদের সঙ্গে শোয়েব মোহাম্মদ
ফাইল ছবি

৪৬৫ বলে ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া তেজনারায়ণ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২০৭ রানে। তাঁর ৪৬৭ বলের ইনিংসটি সাজানো ১৬টি চার ও ৩টি ছক্কায়। ৩৩৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে তাঁর সঙ্গী ব্রাফেট আউট হয়েছেন ১৮২ রানে। ৩১২ বলের ইনিংসে ১৮টি চার মেরেছেন উইন্ডিজ অধিনায়ক।

ব্রাফেট-চন্দরপল জুটির যত কীর্তি

• টেস্টে উদ্বোধনী জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এটিই প্রথম ৩০০ ছাড়ানো জুটি। পেছনে পড়ল ১৯৯০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গর্ডন গ্রিনিজ ও ডেসমন্ড হেইন্সের ২৯৮ রান।
• যেকোনো উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এটি ১০ম ট্রিপল সেঞ্চুরি। সর্বশেষ ২০১২ সালে খুলনায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে ৩২৬ রান যোগ করেছিলেন ড্যারেন ব্রাভো ও মারলন স্যামুয়েলস জুটি।
• টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ ২৮১, ২০০৪ সালে মারভান আতাপাত্তু ও সনাৎ জয়াসুরিয়া জুটির।
• ৬৮৫ বল খেলেছে ব্রাফেট-চন্দরপল জুটি। টেস্টে বলের হিসাব আছে এমন ইনিংসে এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ। শুধু প্রথম উইকেট হিসাব করলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

ব্রাফেট আউট হওয়ার পর ৯৯ রানের মধ্যে আরও পাঁচ উইকেট তুলে নেন জিম্বাবুয়ের বোলাররা। ওই ৫ উইকেটই পেয়েছেন মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলা লেগ স্পিনার ব্রেন্ডন মাভুতা। এই প্রতিবেদন লেখার সময় জিম্বাবুয়ে বিনা উইকেটে ২১ রান তুলেছে।

আরও পড়ুন