শ্রীলঙ্কা যেন ‘একাদশ মিলে করি কাজ’

শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলফাইল ছবি

বিশ্বকাপের দল

•দাসুন শানাকা (অধিনায়ক) •দানুস্কা গুনাতিলকা •পাতুম নিশাঙ্কা •কুশল মেন্ডিস •চারিত আসালাঙ্কা •ভানুকা রাজাপক্ষে •ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা •ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা •মহীশ তিকশানা •জেফরি ভ্যান্ডারসে •চামিকা করুনারত্নে •কাসুন রাজিথা •লাহিরু কুমারা • বিনুরা ফার্নান্দো •প্রমদ মাদুশান

ক্রিকেটে সুপারস্টার বললে যাঁদের নাম আসে, এ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কা দলে তেমন কেউ নেই। একাদশে মিলে করি কাজ—এটাই এখন শ্রীলঙ্কা দলের মূলনীতি এবং এ নীতি মেনেই সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দলটা। আফগানিস্তানের কাছে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পর টানা পাঁচটি ম্যাচ জিতেছে লঙ্কানরা। এই পাঁচ ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন শ্রীলঙ্কান চার খেলোয়াড়। বোঝাই যাচ্ছে, দলটা নির্দিষ্ট কারও পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভরশীল নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তাই শ্রীলঙ্কার ওপর আলাদা দৃষ্টি রাখতেই হবে।

ব্যাটিং লাইনআপ যথেষ্ট গভীর শ্রীলঙ্কার। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, চামিকা করুনারত্নে ও দাসুন শানাকার মতো একঝাঁক অলরাউন্ডার দলে। এর মধ্যে ৬, ৭ ও ৮ নম্বরে ব্যাট করেন শানাকা, হাসারাঙ্গা ও করুনারত্নের মতো স্ট্রোক মেকার। টপ অর্ডার তাই খেলতে পারে নিশ্চিন্তে, খুবই স্বাধীনভাবে, যে স্বাধীনতা অন্য অনেক দলেরই নেই। দুই ওপেনার পাতুম নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস এশিয়া কাপেও খেলেছেন দারুণ। অস্ট্রেলিয়ায় সেই ফর্মটা টেনে নিতে পারলেই হয়।

অধিনায়ক দাসুন শানাকা
ফাইল ছবি

টি-টোয়েন্টির জন্য একেবারে মানানসই দুজন স্পিনার আছেন শ্রীলঙ্কা দলে—হাসারাঙ্গা ও মহীশ তিকশানা। পাওয়ারপ্লে হোক, মাঝের ওভার কিংবা ডেথ ওভার, দুজনের হাতেই ইনিংসের যেকোনো সময় নিশ্চিন্তে বল তুলে দেওয়া যায়। সঙ্গে দরকার পড়লে দু-এক ওভারে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার স্পিনও দেখা যেতে পারে। স্পিন ধরছে, এমন উইকেটে তাঁরাই হতে পারেন শ্রীলঙ্কার তুরুপের তাস।

পেস বোলিং ইউনিট ঠিক অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড বা পাকিস্তানের মতো বারুদঠাসা নয়। তবে দিলশান মাদুশঙ্কা, প্রমোদ মাদুশান ও চামিকা করুনারত্নে বেশ কার্যকর বোলিং করতে পারেন। সঙ্গে লাহিরু কুমারার দলে ফেরা লঙ্কান পেস আক্রমণকে আরও ধারালো করেছে।

দাসুন শানাকার মতো একজন পারফর্মিং অধিনায়ক পাওয়া যেকোনো দলের জন্যই ভাগ্যের ব্যাপার। বল হাতে বৈচিত্র্যময়, ডেথ ওভারেও বেশ কার্যকর। ব্যাট হাতে দারুণ ফিনিশার। ২০১৯ সালে তাঁকে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক করার সময় প্রায় সাদামাটা একটা দলই ছিল শ্রীলঙ্কা। সেই দলের মধ্যে শানাকা যেভাবে এতজন ম্যাচ উইনার তৈরি করেছেন, সেটা বিস্ময়কর।

শ্রীলঙ্কা যেভাবে সব হিসেব ওলট-পালট করে দিয়ে এশিয়া কাপ জিতেছে, বিশ্বকাপে সেটাই হতে পারে দলটার সবচেয়ে বড় প্রেরণা। সঙ্গে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর একটা বাড়তি চেষ্টা তো থাকবেই। দেশকে আনন্দের উপলক্ষে এনে দেওয়ার চেষ্টা সব দলেরই থাকে, তবে শ্রীলঙ্কা সাম্প্রতিক কালে যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেটার সঙ্গে বিশ্বকাপে থাকা অন্য কোনো দেশের আসলে তুলনা চলে না। এ রকম পরিস্থিতি একটা দলকে ভালো খেলার জন্য কতটা তাতিয়ে দিতে পারে, সেটা এশিয়া কাপেই দেখিয়েছে শ্রীলঙ্কা, দেখাতে পারে বিশ্বকাপেও।

সূচি

১ম রাউন্ড

১৬ অক্টোবর   সকাল ১০টা   গিলং            নামিবিয়া

১৮ অক্টোবর বেলা ২টা       গিলং            আরব আমিরাত

২০ অক্টোবর   সকাল ১০টা   গিলং            নেদারল্যান্ডস

সবচেয়ে বেশি ফাইনাল খেলেছে শ্রীলঙ্কা।
  ২৭
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছে শ্রীলঙ্কা।  
২৬০/৬
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২৫০ ছাড়ানো একমাত্র ইনিংসটি শ্রীলঙ্কার, ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে।