এমন ইনিংসের পরও একটু হতাশ রয়

১২৪ বলে ১৩২ রানের ইনিংস খেলেছেন রয়ছবি: প্রথম আলো

দুই দিনে দুটি ভিন্ন ধরনের উইকেট, তবে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা তাঁদের স্কিলের দারুণ প্রয়োগ দেখালেন দুটিতেই। প্রথম ম্যাচে ডেভিড ম্যালানের সেঞ্চুরির পর আজ ইংল্যান্ডের জয়ের ভিত গড়ে দিল জেসন রয়ের সেঞ্চুরি।

ম্যালানের ৭৮.৪৫ স্ট্রাইক রেটের পর রয় খেললেন ১০৬.৪৫ স্ট্রাইক রেটে। নিজেদের স্কিলের প্রয়োগের তৃপ্তি যেমন আছে, তেমনি এমন ইনিংসের পরও একটু হতাশা আছে রয়ের। তিনি যে আরেকটু বেশি ব্যাটিং করতে চেয়েছিলেন!

রয়ের সময়টা খুব একটা সুবিধার যাচ্ছিল না। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন, তবে পরের তিন ম্যাচে আউট হয়েছেন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তো ফিরতে হয়েছিল প্রথম ওভারেই।

আরও পড়ুন

এ সেঞ্চুরিটা তাই দারুণ স্বস্তির উপলক্ষ হয়েই এসেছে রয়ের কাছে। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এ ওপেনার বলেন, ‘প্রতিবারই দারুণ অনুভূতি হয়। প্রথম ম্যাচের ভুল শোধরাতে কঠোর পরিশ্রম করেছি। বাজে একটা ভুল করেছিলাম, রান করতে ক্ষুধার্ত ছিলাম। অতীতে এমন সেঞ্চুরি পেয়েছি, ৪০ পেরোলেই মনে হয়েছে উড়তে পারব। প্রতিটি বাউন্ডারিই আজ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। জসের (বাটলার) সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েছি আজ।’

প্রথম ম্যাচে ম্যালানের ইনিংসও শিক্ষা দিয়েছে রয়কে, ‘প্রথম ম্যাচে আকাশে বল তোলার পর দ্রুতই উপলব্ধি হয়েছে। ম্যালান যেভাবে খেলেছে, আমি বুঝেছি—মাথা ঠান্ডা করতে হবে, সময় নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে।’

এ ম্যাচে রয় সেটিই করেছেন। যখন আউট হন, দল চলে গেছে দারুণ একটি অবস্থানে। ১৩২ রানের ইনিংস খেলার পরও অবশ্য একটু হতাশা কাজ করছে তাঁর। সেটির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ইতিহাসের যৌথভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক বলেন, ‘আমি তখন একটু মেরে খেলা শুরু করেছি, তখন পর্যন্ত তো কঠিন ছিল। ৩৬ ওভারের মতো হয়েছে, আমি জসকে বলছিলাম, নতুন কারও জন্য কঠিন হবে। যদিও হয়নি সৌভাগ্যক্রমে। পরে ছেলেরা দারুণ মেরেছে। ভবিষ্যতে ৪৫ বা ৪৬তম ওভার পর্যন্ত থাকতে পারলে ভালো লাগবে। এটা একটু হতাশার। তবে বেশ খুশি আমি।’

আগের ম্যাচের সঙ্গে এ ম্যাচের উইকেটেরও একটু পার্থক্য আছে, মনে করেন রয় নিজেও, ‘আগের দিন তো চার বল খেলেছি মাত্র। তবে পরিষ্কারভাবেই আজ ব্যাটিং করা অনেক সহজ ছিল। তবে স্পিন একটু বেশি হচ্ছিল, যদিও সেটা ধারাবাহিক ছিল। আগের দিন অসম বাউন্স ছিল, স্পিনও হুট করে হচ্ছিল। আমার মনে হয় এমন একটা সংগ্রহ আনতে ছেলেরা বেশ ভালো রকমের স্কিল দেখিয়েছে।’

আরও পড়ুন

রয় দেখিয়েছেন তাঁর সুইপ আর রিভার্স সুইপের স্কিলও। ইনিংসে সাতটি রিভার্স সুইপ করেছেন, যার মধ্যে চারটিতেই পেয়েছেন বাউন্ডারির দেখা। এটা পরিকল্পনার অংশ ছিল বলেই জানিয়েছেন তিনি, ‘যেমন টার্ন হচ্ছিল, তাতে এটাই পরিকল্পনা ছিল। পয়েন্টের ওপর দিয়ে খেলা আমার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ছিল। কাভারের ওপর দিয়ে কয়েকবার মারতে চেয়েছিলাম, তবে গতি ছিল না, বাঁকও অনেক বেশি থাকায় সেগুলো সফল হয়নি। সেটি থেকে দ্রুতই সরে এসেছি। সাকিব যখনই আন্ডার-কাটার পাচ্ছিল, আমার হয়তো সাইটস্ক্রিনের ওপর দিয়ে মারা উচিত ছিল, কিন্তু আমি সুইপের চেষ্টা করেছি। সেটা একটু বাজে সিদ্ধান্ত ছিল। বাউন্ডারি মারার ক্ষেত্রে পরিকল্পনা সরল রাখতে হয়, যেখানে সবচেয়ে বেশি রান পাবেন সেখানেই মারবেন। সুইপ ও রিভার্স সুইপই আমার বাউন্ডারির একমাত্র উপায় ছিল আজ।’

আরও পড়ুন