অ্যাডাইরের ৫ উইকেট, আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আয়ারল্যান্ড

৫ উইকেট নেন মার্ক অ্যাডাইরক্রিকেট আয়ারল্যান্ড

মার্ক অ্যাডাইরের ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেটের পর কার্টিস ক্যাম্ফারের ৪৯ রানের ইনিংসে আবুধাবির টলারেন্স ওভালের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে এগিয়ে গেছে আয়ারল্যান্ড। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তানকে ১৫৫ রানেই অলআউট করে দেয় আয়ারল্যান্ড। জবাবে ১০০ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়েছে তারা, ৩২ রানে অপরাজিত হ্যারি টেক্টরের সঙ্গে অপরাজিত আছেন পল স্টার্লিং।

এ ম্যাচ দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় তিন বছর পর ফিরল টেস্ট ক্রিকেট। প্রাথমিকভাবে শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে এ ম্যাচ হওয়ার কথা থাকলেও কয়েকদিন আগে বদলে ফেলা হয় ভেন্যু। ফলে আজ ১২২তম টেস্ট ভেন্যুর মর্যাদা পায় টলারেন্স ওভাল। এমনিতে এ মাঠ আফগানিস্তানের কাছে পরিচিতই, প্রস্তুতি ক্যাম্পের পাশাপাশি এখানে ম্যাচও খেলেছে তারা।

টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে সেখানেই অস্বস্তিতে পড়ে আফগানিস্তান। অ্যাডাইরের দারুণ সিম বোলিংয়ে ১১ রানের মধ্যেই ওপেনার নুর আলী জাদরানের পর তিনে আসা রহমত শাহকে হারায় তারা। নুর স্লিপে ক্যাচ দেন অধিনায়ক অ্যান্ডি বলবার্নির হাতে, রহমত হন বোল্ড। প্রথম সেশনে ব্যারি ম্যাকার্থির ডাউন দ্য লেগের বলে কট বিহাইন্ড হন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদিও। তার আগে অবশ্য ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়ে শুরুর চাপ অনেকটাই সামাল দিয়েছিলেন শহীদি।

প্রথম দিনই এগিয়ে গেছে আয়ারল্যান্ড
ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড

তবে মধ্যাহ্ন বিরতির পর আফগানদের ইনিংসে নামে ধস। যার শুরুটা হয় অভিষিক্ত রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট দিয়ে। অ্যাডাইরের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড হন গুরবাজ। ক্রেগ ইয়াংয়ের পরপর ২ ওভারে ফেরেন ইব্রাহিম ও নাসির জামাল। ৪ রানের মধ্যে সে সময় ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ওপেনিংয়ে নামা ইব্রাহিম ৮৩ বলে করেন ৫৩ রান, আফগানিস্তানের ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোর হয়ে থেকেছে সেটিই।

আরও পড়ুন

১১১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পরও আফগানিস্তান ১৫৫ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে করিম জানাতের অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংসে। নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই করেন তিনি, তবে তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার মতো কেউ শেষ পর্যন্ত আর ছিলেন না। শেষ ব্যাটসম্যান জহির খানকে বোল্ড করে পঞ্চম উইকেটটি পান অ্যাডাইর। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ও টিম মারটাহর পর তৃতীয় আইরিশ বোলার হিসেবে টেস্টে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি হলো এ পেসারের।

আরও পড়ুন

নতুন বলে এরপর সফল হয় আফগানিস্তানও। নাভিদ জাদরানের ফুললেংথের বলে প্রথম এলবিডব্লু হন বলবার্নি। পিটার মুরও জাদরানের শিকার। অবশ্য দশম ওভারে বোল্ড হওয়ার আগে নাভিদের বলেই দুবার বাঁচেন মুর। একবার বোল্ড হয়েছিলেন, তবে নাভিদ করেছিলেন নো। পরের বার আম্পায়ারের এলবিডব্লুর সিদ্ধান্ত রিভিউ করে সফল হন। তবে সেসব সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থই হয়েছেন তিনি।

আফগানিস্তানের একমাত্র ফিফটিটি করেন ইব্রাহিম জাদরান
ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড

৩২ রানে ২ উইকেট হারানো আয়ারল্যান্ডকে চাপ থেকে বের করে আনেন মূলত ক্যাম্ফার। সুযোগ পেলেই শট খেলতে থাকেন তিনি, টেক্টরের সঙ্গে তাঁর জুটিতে বেশ শক্ত একটা ভিতই পায় দল। বাঁহাতি স্পিনার জিয়া-উর-রহমানের টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে অবশ্য ফিফটির ১ রান আগেই থামতে হয় ক্যাম্ফারকে। পরের ওভারে নাইটওয়াচম্যান থিও ফন ওরকোমকে আরেকটি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড করেন জিয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস: ৫৪.৫ ওভারে ১৫৫ (ইব্রাহিম ৫৩, নুর ৭, রহমত ০, শহীদি ২০, গুরবাজ ৫, জামাল ০, জানাত ৪১*, জিয়া ৬, নাভিদ ১২, নিজাত ০, জহির ০; অ্যাডাইর ৫/৩৯, ম্যাকার্থি ১/২৮, ইয়াং ২/৩১, ম্যাকব্রাইন ০/২২, ফন ওরকোম ০/১২, ক্যাম্ফার ২/১৩)।  
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩১ ওভারে ১০০/৪ (মুর ১২, বলবার্নি ২, ক্যাম্ফার ৪৯, টেক্টর ৩২*, ফন ওরকোম ১, স্টার্লিং ২*; নিজাত ০/২৮, নাভিদ ২/৩২, জানাত ০/৯, জিয়া ২/১৩, জহির ০/১৭)।
—প্রথম দিন শেষে।