অল্প রানের ম্যাচ কঠিন করে জিতল খুলনা

জয় নিশ্চিতের পর মাঠ ছাড়ছেন খুলনার দুই ব্যাটসম্যান ফাহিম ও নাহিদপ্রথম আলো

রাতের ম্যাচে রান হবে। শিশিরের কারণে ব্যাটিং সহজ হবে, বোলারদের জন্য কাজটা হবে চ্যালেঞ্জিং। বিপিএলে রাতের ম্যাচ নিয়ে পূর্বানুমান ছিল এমনই। কিন্তু খুলনা টাইগার্স ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের আজকের ম্যাচটা হলো সম্পূর্ণ উল্টো। দুই দলেরই ব্যাটিং টি-টোয়েন্টিসুলভ হয়নি একদমই। উল্টো ম্যাচজুড়ে দাপট দেখিয়েছেন বোলাররা।

শেষ পর্যন্ত অল্প রানের ম্যাচটা কঠিন করেই জিতল খুলনা টাইগার্স। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সে ১২১ রানে থামিয়ে সে রানটা তাড়া করতে ৬ উইকেট হারিয়েছে খুলনা, অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৮.২ ওভার পর্যন্ত। মাহমুদুল হাসানের হিসাবি ব্যাটিং নিশ্চিত করেছে খুলনার ২ পয়েন্ট।

রান তাড়ার শুরুতে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আল আমিন হোসেনের বলে আউট হন এভিন লুইস। আউট হওয়ার আগে ২ ছক্কায় ৬ বলে ১২ রান করেছেন এই ক্যারিবিয়ান। অধিনায়ক এনামুল হকের ইনিংসও দীর্ঘ হয়নি। ৯ রান করে আউট হয়েছেন শহীদুলকে উইকেট দিয়ে। আল আমিনের শিকার হয়েছেন আরেক ক্যারিবীয় শাই হোপও।

দলীয় ৩২ রানের সময় ৩ উইকেট হারিয়ে বসা খুলনাকে বিপদমুক্ত করেন আফিফ হোসেন ও মাহমুদুল হাসান। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেটে ৫১ বলে ৪৬ রান যোগ করেন। নিহাদউজ্জামানের বলে ২৬ রান করে আফিফ আউট হলেও মাহমুদুল খুলনাকে টেনে নিয়ে যান জয় থেকে ৬ রান দূর পর্যন্ত। শহীদুলের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি ৪৪ বলে ৩৯ রান যোগ করেন। বাকি কাজটা করেন ফাহিম আশরাফ। ৮ বলে ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার।

আরও পড়ুন

আগের রাতে সিলেট স্ট্রাইকার্সের ১৭৭ রান সহজেই টপকে গিয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আজ সেই চট্টগ্রামই খুলনা টাইগার্সের বোলিংয়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছে। শুরুটা করেছেন খুলনার স্পিনাররা। আর শেষটা করেছেন পেসাররা। মাঝে শহীদুল ইসলামের ৪০ রানের ইনিংস চট্টগ্রামের রানটাকে টেনেটুনে ১২১ এ নিতে পেরেছে। ইনিংসের বাকি সময় দাপট দেখিয়েছে খুলনার বোলিং।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের টপ অর্ডার ভেঙে দেন নাহিদুল ইসলাম
প্রথম আলো

নাহিদুলকে দিয়েই শুরু। পাওয়ার প্লেতে দারুণ ধারাবাহিক এই অফ স্পিনার আজ প্রথম স্পেলেই ভেঙেছেন চ্যালেঞ্জার্সের টপ অর্ডার। আভিস্কা ফার্নান্দো (৮), ইমরানউজ্জামানের (০) পর তানজিদ হাসানকে (১৯) আউট করেছেন তিনি। আরেক নতুন বলের বিশেষজ্ঞ নাসুম আহমেদের শিকার গত ম্যাচে অপরাজিত ৫৭ রান করা শাহাদাত হোসেন (৬)।

আরও পড়ুন

ইনিংস বড় হয়নি নজিবুল্লাহ জাদরানেরও। আগের ম্যাচে ৬১ রান করা জাদরান ২২ বলে ২৪ রান করে থিতু হয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু নাহিদুল দ্বিতীয় স্পেলে এলে থামতে হয়েছে এই বাঁহাতিকে। অধিনায়ক শুভাগত হোম ২ রান করে আউট হয়েছেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার ফাহিমের বলে।

খুলনা টাইগার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদুল হাসান
প্রথম আলো

একের পর এক উইকেটে ১০.২ ওভারে ৬৪ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে চট্টগ্রাম। টপ অর্ডারের এমন ব্যর্থতার পর বেশি দূর এগোয়নি চট্টগ্রামের ইনিংস। শহীদুল একাই লড়েছেন। ৩১ বল খেল ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় করেছেন ৪১ রান। খুলনার শেষের উইকেটগুলো ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওশানে থমাস ও ফাহিম। তবে দিনের সেরা বোলার ছিলেন নাহিদুলই। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন এই অফ স্পিনার। ৩ উইকেট নিয়েছেন ফাহিম, ২টি থমাস।

আরও পড়ুন

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৯.৫ ওভারে ১২১ (ফার্নান্দো ৮, তানজিদ ১৯, ইমরান ০, শাহাদাত ৬, নজিবউল্লাহ ২৪, শুভাগত ২, ক্যাম্ফার ৭, শহীদুল ৪০, নিহাদ ৯, বিলাল ১, আল–আমিন ১*; নাহিদুল ৪/১২, থমাস ২/৩৮, নাসুম ১/২৫, ফাহিম ৩/২০, মুকিদুল ০/২৫)।

খুলনা টাইগার্স: ১৮.২ ওভারে ১২২/৬ (এনামুল ৯, লুইস ১২, হোপ ৯, আফিফ ২৬, মাহমুদুল ৩৯, হাবিবুর ৩, ফাহিম ১৫*, নাহিদুল ২*; বিলাল ১/২৮, আল–আমিন ২/২৭, শহীদুল ২/২৬, নিহাদ ১/২০, শুভাগত ০/২০)।

ফল: খুলনা টাইগার্স ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা: নাহিদুল ইসলাম।

আরও পড়ুন