ভয় কাটিয়ে জয়ের আনন্দ

সিরিজের জয়ের ম্যাচেও থাকল নীরব অশ্রু। এক মিনিট নীরবতা পালন আর খেলোয়াড়দের কালো আর্মব্যান্ডে মাইলস্টোন স্কুল ট্র্যাজেডিতে নিহতদের প্রতি শোক জানিয়ে শুরু হয় ম্যাচ। মাঝে শঙ্কার সময় পার করে শেষটা অবশ্য সিরিজ জয়ের উৎসব দিয়ে।

ম্যাচ শেষে জয়ের নায়ক জাকের আলী আরেকবার মনে করলেন বিমান বিধ্বস্তে নিহতদের, ‘গতকালের দিনটা বুক ভার নিয়েই কাটাতে হয়েছে…।’ তার আগে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অধিনায়ক লিটন দাস পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়কে উৎসর্গ করেছেন উত্তরার হৃদয়বিদারক ঘটনায় হতাহতদের প্রতি।

আজ শুরুতে বাংলাদেশের জয়টা সহজ মনে হলেও একপর্যায়ে তা দূরেই সরে যাচ্ছিল। ১৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর পাকিস্তানের জন্য যা ছিল একরকম অবিশ্বাস্য, সেটিই প্রায় ঘটিয়ে ফেলছিলেন ফাহিম আশরাফ ও আহমেদ দানিয়েল। শেষ দুই ওভারে ২৮ রানের সমীকরণ তাঁরা দুজন নামিয়ে এনেছিলেন ১৩ রানে।

ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে সে সময়টা মনে করে জাকের বলেছেন, ‘কঠিন সময় ছিল। একটু তো ভয়ও চলে এসেছিল।’ ১৯তম ওভারে ১৫ রান দিয়ে যাওয়া রিশাদ হোসেন শেষ বলে ফাহিম আশরাফকে বোল্ড করেছেন। জাকেরের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে ফাহিম বলে গেছেন, তখনো নাকি পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমে ‘বিশ্বাস’ ছিল ম্যাচ জেতার। সেটি পোক্ত হয় মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ ওভারের প্রথম বলেই দানিয়েলের চারে।

‘ভয়ের’ ওই সময়টায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল মিরপুরের গ্যালারি। মোস্তাফিজের দ্বিতীয় বলে দানিয়েলের ক্যাচ নিয়ে শামীম হোসেন উদ্‌যাপনটা করলেন সেই গ্যালারির দিকে ফিরে দুই হাত তুলে, দর্শকদের উচ্ছ্বাস ফিরে আসে মুহূর্তে। এমন ভয় পেরিয়ে ম্যাচ জেতার একটা ভালো দিকও দেখছেন জাকের, ‘এ রকম কঠিন সময় আসবে। ক্লোজ ম্যাচ জেতা দলের জন্য ভালো লক্ষণ, ভালো আত্মবিশ্বাস দেবে।’

মিরপুরের উইকেটে একটু কম রানের ম্যাচ হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে প্রশ্ন হলো এমন উইকেটে খেলে কি বড় টুর্নামেন্টে ভালো করা যাবে? জাকের বলছেন, পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে জয় পাওয়াটাই তাঁদের কাছে মুখ্য। ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরই দল থেকে বার্তা পেয়েছিলেন—এটা বড় রানের উইকেট নয়। জাকেরের ভাষায় সে উইকেটে ‘লড়াই’ করেই দলকে এনে দিয়েছেন জেতার মতো সংগ্রহ, ‘আমরাও লড়াই করেছি, ওরাও লড়াই করেছে। সবকিছুই এখানে জেতা ও হারের বিষয়—আমরা ম্যাচ জিতেছি।’