আইপিএলের টাকা নয়, স্টার্ককে টানে ১০০ টেস্টের মাইলফলক

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অন্তত ১০০ টেস্ট খেলতে চান মিচেল স্টার্কছবি : আইসিসি

ক্যারিয়ারে অন্তত একবার আইপিএল খেলা অনেক ক্রিকেটারের কাছে স্বপ্নপূরণের মতো ব্যাপার। কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ উপার্জনের সুযোগ তো আছেই, বিশ্বের নামীদামি তারকাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করে অভিজ্ঞতার ভান্ডারও সমৃদ্ধ করা যায়।

হাশিম আমলা–জো রুটরা বহুবার ‘না’ বলেও আইপিএলের মোহ থেকে শেষ পর্যন্ত দূরে থাকতে পারেননি। অথচ মিচেল স্টার্ক বছরের পর বছর ধরে আইপিএল থেকে দূরে থাকছেন।

অস্ট্রেলিয়ার গতিতারকা স্টার্ক কখনো আইপিএল খেলেননি, তা কিন্তু নয়। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে খেলেছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে। সতীর্থ হিসেবে পেয়েছেন বিরাট কোহলি, ক্রিস গেইল, এবি ডি ভিলিয়ার্সদের।

আইপিএলে দুই মৌসুম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে খেলেছেন স্টার্ক
ছবি : এএফপি

২০১৮ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাঁকে কিনলেও ডান পায়ের পেশিতে ব্যথার কথা জানিয়ে ভারতে যানইনি। না খেলেও পাওনা টাকা পেতে ২০১৯ সালে বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দিয়েছিলেন। পরের বছর সেই মামলা জিতে টাকাও পেয়েছেন। এরপর আর আইপিএলের প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখাননি।

স্টার্ক বারবার আইপিএলকে এড়িয়ে গেলেও তাঁর জাতীয় দলের সতীর্থরা নিয়মিতই খেলে যাচ্ছেন। তাহলে তিনি কেন দূরে থাকছেন? এই প্রশ্নের উত্তর আগেও নানাভাবে দিয়েছেন। এবার বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার।

আরও পড়ুন

ভারতের বিপক্ষে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সামনে রেখে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) ওয়েবসাইটে বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করতে নির্দিষ্ট কিছু জিনিস (আইপিএল) থেকে দূরে থাকি। এ সিদ্ধান্তে আমি অটল থাকার চেষ্টা করি। হ্যাঁ, টাকা উপার্জন করা ভালো ব্যাপার। কিন্তু আমার কাছে ১০০ টেস্ট ম্যাচ খেলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই মাইলফলক ছুঁতে পারব কি না, জানি না। তবে ১০০ টেস্ট খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পারলে ভালো লাগবে। আমি মনে করি, ক্রিকেটকে এখনো কিছু দেওয়ার বাকি আছে।’

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল সামনে রেখে অনুশীলনে স্টার্ক
ছবি : আইসিসি

২০১১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গ্যাবায় টেস্ট অভিষেক হয় স্টার্কের। এখন পর্যন্ত ৭৭ টেস্ট খেলেছেন ৩৩ বছর বয়সী গতিতারকা। ২৭.৫২ গড়ে নিয়েছেন ৩০৬ উইকেট। ফিটনেস ঠিক রাখতে পারলে আগামী দুই বছরেই ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। লন্ডনের ওভালে ভারতের বিপক্ষে আগামীকাল শুরু হতে চলা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে দারুণ কিছু করতে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়া।

আরও পড়ুন

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পেসত্রয়ী স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড ও প্যাট কামিন্স বেশ চোটপ্রবণ। গত আড়াই বছরে অস্ট্রেলিয়া খেলেছে ২১ টেস্ট, তিনজন একসঙ্গে খেলতে পেরেছেন মাত্র ৫টি। হ্যাজলউড তো চোটের কারণে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল থেকে ছিটকে গেছেন। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আঙুল ভেঙে যাওয়ায় স্টার্কও সর্বশেষ ভারত সফরে প্রথম দুটি টেস্ট খেলতে পারেননি। তাঁদের বিকল্প হিসেবে অবশ্য জাই রিচার্ডসন, স্কট বোল্যান্ড, মাইকেল নেসের, ল্যান্স মরিসরা বেশ ভালোই করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ার পেসত্রয়ী (বাঁ থেকে) হ্যাজলউড, স্টার্ক ও কামিন্স গত আড়াই বছরে একসঙ্গে মাত্র ৫টি টেস্ট খেলেছেন
ছবি : এএফপি

এভাবে লাগাতার চোটে পড়তে থাকলে কারও কাছে জায়গা হারাবেন কি না কিংবা অবসর নিয়ে ভাবছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে স্টার্ক বলেছেন, ‘১০ বছরের বেশি সময় ধরে তিন সংস্করণেই খেলে চলেছি। এই যাত্রাপথে অনেক কষ্ট সইতে হয়েছে। তবে আমি কৃতজ্ঞ যে এত দূর আসতে পেরেছি। যখনই আমি নিখুঁত হতে চেষ্টা করেছি, বোলিংয়ে গতি হারিয়ে ফেলেছি। মনে হয়েছে, কেউ আমাকে তাড়া করতে যাচ্ছে। তবে (আমার পরিবর্তে) যখন কোনো নতুন বাঁহাতি ফাস্ট বোলাব আসবে, অবশ্যই জানতে পারব।’