ইংল্যান্ড ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, মানতে পারছেন না বাটলার

আহমেদাবাদে গতকাল ‘ক্যাপ্টেনস ডে’ অনুষ্ঠানে ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারছবি : এএফপি

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা যতটা কঠিন, বিশ্বকাপ জয়ের চেয়ে ধরে রাখাও ততটাই কঠিন। ফুটবলে এ কাজ সর্বশেষ করে দেখিয়েছিল পেলে-গারিঞ্চাদের ব্রাজিল (১৯৫৮ ও ১৯৬২), ক্রিকেটে সর্বশেষ স্টিভ ওয়াহ-রিকি পন্টিংদের সেই মহাপরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়া (১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭)।

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দুই খেলায় এরপর এমন ঘটনা আর দেখা যায়নি। ইংল্যান্ডের সামনে এবার সুযোগ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মুকুট ধরে রাখার। ইংল্যান্ড এবারই প্রথম ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন তকমা নিয়ে বিশ্বমঞ্চে নামতে যাচ্ছে। অভিযানের শুরুটা আজ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। সেই নিউজিল্যান্ড, যাদের চার বছর আগে লর্ডসে ‘বেয়ারেস্ট অব অল মার্জিনস’-এ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড।

চার বছর পর কোচ বদলেছে, অধিনায়ক বদলেছে, কজন অবসরে গেছেন, কয়েকজন দৃশ্যপটে নেই। তবু ইংল্যান্ডের শক্তির জায়গাটা অপরিবর্তিত। এউইন মরগানের গুছিয়ে দিয়ে দেওয়া দলটাকে ভালোভাবেই এগিয়ে নিচ্ছেন জস বাটলার। তাই বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এবারও ‘হট ফেবারিট’ ভাবা হচ্ছে।

ক্রিকেটে সর্বশেষ টানা দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া
ছবি : আইসিসি

তা ছাড়া ঘরের মাঠে গত মাসে ওয়ানডে সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েই ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে গেছে ইংল্যান্ড। ইংলিশরা তাই ভালো অবস্থানে থেকেই শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে নামতে যাচ্ছে। তবে বাটলারের কাছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন তকমা পছন্দ নয়।

আরও পড়ুন

গতকাল বিশ্বকাপের ১০ অধিনায়ককে নিয়ে আয়োজিত ‘ক্যাপ্টেনস ডে’ অনুষ্ঠানে ইংলিশ অধিনায়ক বলেছেন, ‘এটা (ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন) আমার কাছে অপ্রাসঙ্গিক লাগে। আমরা কোনো কিছু রক্ষার চেষ্টা করছি না। আমরা মাঠে নেমে বিশ্বকাপ জেতার চেষ্টা করছি।’

চার বছর আগের মধুর স্মৃতি নিয়েও পড়ে থাকতে রাজি নন বাটলার, ‘অতীত অতীতই। আপনি ওই ধরনের কিছু আবার তৈরি করতে পারবেন না বা চিরকাল ধরে রাখতে পারবেন না। (আরেকটি বিশ্বকাপ জিততে হলে) নতুন কিছু করে দেখাতে হবে।’

লর্ডসে ৪ বছর আগে ‘বেয়ারেস্ট অব অল মার্জিনস’–এর সেই মুহূর্ত
ছবি : আইসিসি

‘ডিফেন্ড’ কথাটা কেন অপ্রাসঙ্গিক, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বাটলার। আধুনিক ক্রিকেটের সংজ্ঞা বদলে দেওয়া ইংল্যান্ড দীর্ঘদিন হলো আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছে। আর ডিফেন্ড শব্দের অর্থ পুরোপুরি বিপরীত—প্রতিহত করা বা ঠেকানো।

বাটলারের চাওয়া, তাঁর দল বিশ্বকাপেও আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে খেলবে, ‘আমরা আক্রমণাত্মক খেলতে চাই। তাই “প্রতিহত” শব্দটি পছন্দ নয়। এটা একটি নির্দিষ্ট দলের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে, যখন তারা ওই অবস্থানে (বর্তমান চ্যাম্পিয়ন) থাকবে, কিন্তু আমাদের জন্য নয়।’

আরও পড়ুন

বাটলারের নেতৃত্বে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ইংল্যান্ড। এবার তাঁর সামনে সুযোগ অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতার। আগামী ১৯ নভেম্বর ফাইনাল শেষে সোনালি ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরতে পারলে বাটলার হবেন সাদা বলের দুই সংস্করণেই বিশ্বকাপ জেতা দ্বিতীয় অধিনায়ক। প্রথমজন ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি।

ইংল্যান্ড দলের অনুশীলনে প্রধান কোচ ম্যাথু মটের সঙ্গে জস বাটলার
ছবি : ইসিবি

বাটলার কি পারবেন? তাঁর উত্তর, ‘জয়ের ক্ষুধা তো আছেই। আমরা যা করেছি, সেটা নিয়েই যদি সন্তুষ্ট হতাম, তাহলে এখানে থাকতাম না। আমরা সব সময় নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত থাকি। আমরা সবাই স্বপ্নবাজ।’