আমিরের তৃতীয় অধ্যায়, আবারও কি ট্রফির ছোঁয়া

মোহাম্মদ আমির এবার কোন রূপে দেখা দেবেন?পিসিবি

‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ (পরম করুণাময়, অসীম দয়াবান আল্লাহর নামে শুরু করছি)—গত ৯ এপ্রিল পাকিস্তানের নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলে ডাক পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় শুধু এটুকুই লিখেছিলেন মোহাম্মদ আমির। সেই ২০০৯ সালেই প্রথমবার পাকিস্তানের জার্সি গায়ে চড়েছে তাঁর। তবু ১৫ বছর পরও ‘শুরু’র অনুভূতির কারণ ছিল সহজেই অনুমেয়—এই ডাক পাওয়া যে সাড়ে তিন বছর পর!

২০২০ সালের শেষ দিকে পিসিবির সে সময়ের ম্যানেজমেন্টের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে অবসর নিয়েছিলেন আমির। লম্বা সময় পর ৩২ বছর বয়সী এই বাঁহাতি পেসারকে দলে ফেরানোর বিষয়ে পিসিবির বক্তব্য ছিল স্পষ্ট—টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। চলতি শতাব্দীতে দুটি আইসিসি টুর্নামেন্ট জিতেছে পাকিস্তান, একটি ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আরেকটি ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। দুটিতেই প্রভাববিস্তারী অবদান ছিল আমিরের। বড় মঞ্চে সাফল্য ও কার্যকারিতার অতীতই এবারের বিশ্বকাপেও তাঁকে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে।

২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় আমিরের বয়স ছিল ১৭ বছর। দলের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়টিই ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবচেয়ে বড় কাজটি করে দিয়েছিলেন। লর্ডসের ফাইনালে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক তিলকারত্নে দিলশানকে আমির ফিরিয়ে দিয়েছিলেন প্রথম ওভারেই। শুরুতেই আমিরের বেঁধে দেওয়া সেই সুরে উজ্জীবিত পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটের জয় পায়, হাতে তোলে ট্রফি।

আট বছর পর ইংল্যান্ডেরই ওভালে আরেকটি ফাইনালে আমির হয়ে ওঠেন নায়ক। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে সেবার পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। ওয়ানডে সংস্করণের সেই ম্যাচে বিরাট কোহলির দল ৩৩৮ রান তাড়া করতে নেমে খেই হারিয়ে ফেলে শুরুতেই। কোহলি, রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান—আমিরের বাঁহাতি পেসে প্রথম তিনজনই আউট ৩৩ রানের মধ্যে। ১৮০ রানের জয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতে পাকিস্তান।

আরও পড়ুন

ইংল্যান্ডে আমিরের সেবারের পারফরম্যান্সের ছিল বিশেষ মাহাত্ম্য। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডেরই লর্ডসে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে জেল খেটেছেন, পাঁচ বছর নিষিদ্ধ থেকেছেন ক্রিকেটে। কলঙ্কিত সেই অতীত ছাপিয়ে ক্রিকেট-জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের সবচেয়ে রঙিন মুহূর্তটাও তৈরি করেন তিনি একই দেশে।

বিশ্বকাপে মোহাম্মদ আমিরের দিকে তাকিয়ে থাকবে পাকিস্তান
এক্স

আমির এবার তৃতীয় অধ্যায়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে তাঁর সাফল্যও দারুণ। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) তিন মৌসুমে সাড়ে ৬ ইকোনমি রেটে উইকেট ৪৩টি। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটিতে অন্তত ৪০ ওভার বল করা কোনো বিদেশি পেসারদের মধ্যে যা সবচেয়ে ভালো ইকোনমি। আমির প্রথম অধ্যায়ে জিতেছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, দ্বিতীয় অধ্যায়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এবারের অধ্যায়েও আরেকটি ট্রফি তিনি নিশ্চয়ই চাইবেন।

আরও পড়ুন