নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪৪ রানে হেরে ওয়ানডে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

ক্রিকইনফোর বল-বাই-বল দেওয়া এক ধারাভাষ্যকার একবার বলেছিলেন, নিউজিল্যান্ডে হওয়া খেলার ধারাভাষ্য দেওয়া মানে যেন প্রায়ই ভূতদের কাছে বর্ণনা করার মতো। উপমহাদেশের সঙ্গে সময় পার্থক্যের কারণে ব্যাপারটি তেমনই।

সেই নিউজিল্যান্ডে আবার বাংলাদেশ, গত কয়েক বছরে যেটি প্রায় নিয়মিত ঘটনা। ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালের ম্যাচটি দিয়ে শুরু হচ্ছে কিউইদের গ্রীষ্ম। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ সিরিজ দেশের বাইরে নিজেদের পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পাওয়ার আরেকটি উপলক্ষ।

যদি আপনি এটি পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আপনি ভূত জাতীয় কিছু নন। কিছুক্ষণের মধ্যেই টস। আমার মতো চা (অথবা কফি) নেওয়ার সুযোগ থাকলে বানিয়ে নিন।

প্রথম আলো লাইভে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি সাইফুল্লাহ্‌ বিন আনোয়ার।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে এর আগে ১৬টি ওয়ানডে খেলে একটিও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপে অবশ্য সেখানে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে একটি জয় আছে তাদের।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফল এসেছে এমন সর্বশেষ ১০ ওয়ানডেতে হেরেছে বাংলাদেশ।

নাজমুল হোসেন জিতেছেন টস। বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সঠিক জায়গায় বল ফেলা গুরুত্বপূর্ণ, মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। টম ল্যাথামও বোলিং নিতেন।

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ দলে ফিরেছেন সৌম্য সরকার, বিশ্বকাপ দলে যিনি ছিলেন না। ছুটি কাটিয়ে ফিরেছেন লিটন দাস। দলে আছেন আফিফ হোসেনও। সাকিব আল হাসানের চোটে বিশ্বকাপ দলে যোগ দেওয়া এনামুলও আছেন একাদশে।

নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ড দলে অভিষেক হচ্ছে দুজনের—জশ ক্লার্কসন ও উইলিয়াম ও’রুর্ক। ক্লার্কসন অলরাউন্ডার, ও’রুর্ক পেসার।

ডানেডিনে হালকা বৃষ্টি নেমেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস এমনিতেও দিনভর সুবিধার নয়। পিচ রিপোর্টে ক্রেইগ ম্যাকমিলান বলছেন, পিচ শক্তই আছে। তবে মেঘাচ্ছন্ন কন্ডিশনে সুইং মিলবে অনুমিতভাবেই। দুই দলের অধিনায়কই টসে জিতলে বোলিং করার কথাও জানিয়েছেন টসে।

এখন ঠিক হালকা বলে পাশ কাটানোর সুযোগ নেই আর। কাভারে ঢেকে দেওয়া হয়েছে পিচ। যদিও গ্রাউন্ডসম্যানরা বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন বলে মনে হচ্ছে তোড়জোড় শুরু করেছেন। খেলা শুরুর নির্দিষ্ট সময়ের আর মিনিট আটেক বাকি। সেটি হবে কি না, জানা যাবে শিগগির।

নির্ধারিত সময়ে শুরু হচ্ছে না প্রথম ওয়ানডে। টসের পরপরই শুরু হওয়া বৃষ্টিতে আপাতত বন্ধ খেলা। যদিও বৃষ্টি খুব বেশি নয়, তবে খেলা শুরু হওয়ার মতো হালকাও নয়।

সুসংবাদ! ইউনিভার্সিটি ওভালের কাভার সরানো হচ্ছে। শিগগির শুরু হতে পারে খেলা।

বিজয় দিবসের রাতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের দিনে জিতেছে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে যেটি তাদের প্রথম ওয়ানডে জয়।

যদিও এখনো শুরু হয়নি, তবে খেলা কোথায় দেখবেন তা জেনে নিতে পারেন এখানে (বাংলাদেশ থেকে)।

ডানেডিনে থেমেছে বৃষ্টি। আকাশের অবস্থাও বেশ ভালো এখন, সেখানে নীলের আভাস। কাভার ফিরে এসেছিল মাঝে, সরানো হচ্ছে সেগুলো। মাঠ শুকানোর কাজ করছে ব্লোয়ার।

ক্রিস ব্রাউন ও রড টাকার—এ ম্যাচের দুই অন ফিল্ড আম্পায়ার নেমেছেন মাঠ পর্যবেক্ষণে। মূলত কিউরেটরের সঙ্গে কথা বলছেন তাঁরা। বৃষ্টি থেমেছে আগেই, তবে মাঠ এখনো প্রস্তুত নয় খেলার জন্য।

বাংলাদেশ সময় ৫-১০ মিনিটে শুরু হবে প্রথম ওয়ানডে। স্থানীয় সময় যেটি ১২-১০ মিনিট। ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট বিলম্বিত প্রথম ওয়ানডে নেমে এসেছে ৪৬ ওভারে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে ফিরছেন নিউজিল্যান্ডের সীমিত ওভারের নিয়মিত অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন। এ সিরিজের দল ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট।

বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দল

মুভমেন্টের আশায় ফুললেংথে করেছিলেন শরীফুল ইসলাম। সেটির আভাস ছিল, কিন্তু প্যাডের ওপর পেয়ে ফ্লিক করে চার মেরে ইনিংস শুরু করেছেন উইল ইয়াং। লাইন ঠিক করে এনেছেন। এরপর পেয়েছেন সাফল্য! বিশ্বকাপে ‘মধুচন্দ্রিমা’ কাটিয়ে আসা রাচিন রবীন্দ্র খোঁচা দিয়েছেন অফ স্টাম্পে লাইন ধরে রাখা বলে। মুশফিকুর রহিম বাকি কাজটি করেছেন উইকেটের পেছনে। চতুর্থ বলেই সফল শরীফুল।

নিউজিল্যান্ড ৫/১, ০.৪ ওভার।

এবার বাড়তি বাউন্স, অফ স্টাম্পের বাইরে গুডলেংথের বল! এবার হেনরি নিকোলসের ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ গেছে দ্বিতীয় স্লিপে। এনামুল হক ভুল করেননি সেখানে। শরীফুল ইসলাম প্রথম ওভারে করেছেন জোড়া আঘাত, যে ওভার শুরু হয়েছিল চার দিয়ে! এক ওভারের মধ্যে দুই কিউই ব্যাটসম্যানকে ফেরালেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার।

নিউজিল্যান্ড ৫/২, ১ ওভার।

অফ স্টাম্পের বাইরে জায়গা পেয়ে কাট করে চার মেরেছেন টম ল্যাথাম, শরীফুলের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে। সে চারের আগে-পরে আর রান দেননি তিনি, ল্যাথামকে ফেলেছেন অস্বস্তিতে। মাঝে হাসান মাহমুদ তাঁর প্রথম ওভারে ওয়াইড থেকে দিয়েছেন ৫ রান। এমন উইকেটে পেসারদের সহায়তা আছে, তবে ঠিক লাইন-লেংথ থেকে সেটি আদায় করে নেওয়ার ওপরই নির্ভর করছে অনেক কিছু।

আপাতত ল্যাথাম ও ইয়াংয়ের সামনে বাংলাদেশ পেসারদের সামলানোর চ্যালেঞ্জ (সিগালও সমস্যা তৈরি করেছেন, শরীফুলের বলে সরেও গেছেন ল্যাথাম)। এখন পর্যন্ত মূল হুমকি শরীফুলই। হাসান তাঁর প্রথম ২ ওভারে ঠিক ততটা হুমকি তৈরি করতে পারেননি।

ল্যাথাম অবশ্য আছেন সুযোগের অপেক্ষায়। শরীফুলের করা ইনিংসের পঞ্চম ওভারের প্রথম তিনটি বল ডট দেওয়ার পর ফুললেংথে পেয়ে ড্রাইভ করে মেরেছেন চার।

নিউজিল্যান্ড ২৪/২, ৫ ওভার।

শরীফুল হুমকি তৈরি করে যাচ্ছেন, ইনিংসের সপ্তম ও নিজের চতুর্থ ওভারটি করেছেন মেডেন। শেন বন্ডের ভাষায়, অনেক দিন পর তিনি পেয়েছেন এমন পেস সহায়ক কন্ডিশন। প্রথম ২ ওভারের পর উন্নতি করেছেন হাসানও। যদিও ৩ ওভার পর তাঁকে সরিয়ে নাজমুল এনেছেন মোস্তাফিজুর রহমানকে।

৭ ওভারে ২৫/২।

৪৬ ওভারের ম্যাচে প্রথম পাওয়ারপ্লে ৯ ওভার। এর মধ্যে ৫ ওভার করেছেন শরীফুল। তাঁর প্রথম ওভারের জোড়া আঘাতের পর অবশ্য আর সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। ল্যাথাম ও ইয়াং সময় নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করছেন আপাতত। দুজন মিলে মেরেছেন ৫টি চার। নিউজিল্যান্ড তুলেছে ২ উইকেটে ৩৫ রান।

দারুণ লাইন ও লেংথ, ল্যাথাম পা দিয়েছিলেন মোস্তাফিজের ফাঁদে। তবে স্লিপে হাত বাড়িয়ে নাগাল পেলেও ক্যাচটি নিতে পারেননি সৌম্য সরকার। একটু সরে একমাত্র স্লিপে ছিলেন তিনি। ল্যাথাম জীবন পেয়েছেন ১৮ রানে। ম্যাচে কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে এটি?

১০ ওভারে ৩৭/২।

ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালের সাইটস্ক্রিন প্রয়োজনের তুলনায় বেশ ছোট। ল্যাথামরা সেটির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণের পর অস্থায়ী সাইটস্ক্রিন বসানোর কাজ চলছিল। এরই মধ্যে আবার সমস্যা তৈরি হয়েছে ডিআরএস বা ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমে। দেখে মনে হয়েছে, হকআইয়ের কোনো ক্যামেরায় টেকনিক্যাল ত্রুটি।

প্রথম ওভারে ২ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড পেরিয়ে গেছে ৫০ রান, ১২ ওভারশেষে ৫৩/২। ল্যাথাম ও ইয়াং ইনিংস মেরামতের কাজ করে চলেছেন।

ডিআরএস ফিরে এসেছে। ২ সেকেন্ড বাকি থাকতে হাসানের বলে ইয়াংয়ের বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়েছিলেন নাজমুল। মূলত উৎসাহী ছিলেন উইকেটকিপার মুশফিকই। তবে আল্ট্রা-এজ মুশফিকের আত্মবিশ্বাসের সপক্ষে কিছু দেখায়নি।

১৩ ওভারে ৫৬/২।

ডানেডিনে ফিরে এসেছে বৃষ্টি। ১৩.৫ ওভার হওয়ার পর আম্পায়াররা বন্ধ করে দিয়েছেন খেলা। প্রায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর শুরু হওয়া ম্যাচ নেমে এসেছিল ৪৬ ওভারে। এখন সেটি কমবে আরও।

নিউজিল্যান্ড ৬৩/২।

...না, ডানেডিনে বৃষ্টি থামেনি এখনো। অফিশিয়াল ব্রডকাস্টিংয়ে দেখানো হচ্ছে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম ম্যাচ। যাতে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান হারিয়েছিল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড সেটি পেরিয়ে গিয়েছিল ৮ উইকেট ও ১৩ বল বাকি রেখেই। সে ম্যাচের বাংলাদেশ একাদশ থেকে আজকের ম্যাচে আছেন—নাজমুল, মিরাজ, লিটন, আফিফ ও হাসান।

ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টিতেও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কখনো তাদের হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।

প্রথমে ৪৬, এরপর ৪০ ওভারে নেমে এসেছে প্রথম ওয়ানডে। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ৭-১০ মিনিটে।

বাংলাদেশ এ ম্যাচে খেলছে চার জন স্বীকৃত বোলার নিয়ে। তবে একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ আসেননি এখনো। চতুর্থ বোলার হিসেবে এসেছেন সৌম্য সরকার, পঞ্চম বোলার হিসেবে তাঁর সঙ্গে নাজমুলের হাতে বিকল্প আছেন আফিফ হোসেন।

‘ডিবলি-ডবলি’দের দেশে মিডিয়াম পেসার সৌম্য এ দফা তাঁর প্রথম ওভারে দিয়েছেন ২ রান। ১৫ ওভারে ৬৫/২।

স্লটে পেয়ে মোস্তাফিজকে টানা দুটি চার মেরেছেন উইল ইয়াং, ১৬তম ওভারে এসেছে ১২ রান—এখন পর্যন্ত ইনিংসে সর্বোচ্চ। পরের ওভারে প্রথমবারের মতো এসেছেন মিরাজ। তাঁর শেষ ২ বলে টানা দুটি চার মেরেছেন ল্যাথাম। বৃষ্টির পর গতি বাড়ানোর আভাস কিউইদের।

নিউজিল্যান্ড ৮৭/২।

মিরাজের বলে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে লং অনের ওপর দিয়ে ইনিংসের প্রথম ছক্কাটি মেরেছেন ইয়াং। ওই শটেই ১০০ হয়ে গেছে নিউজিল্যান্ডের। সর্বশেষ ৪ ওভারে এসেছে ৩৯ রান। দুজনই বেশ থিতু হয়ে গেছেন, এবার গতি বাড়ানোর দিকে মনযোগ ইয়াং ও ল্যাথামের। দুজনই পেরিয়েছেন ৪০ রান।

১২তম নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪ হাজার রান পূর্ণ করেছেন ল্যাথাম। ইয়াংয়ের সঙ্গে তাঁর জুটিতে উঠেছে ১০০ রান। এরপর তিনি পেয়েছেন অর্ধশতক। এরপর ফিরে এসেছে বৃষ্টি। আবার বন্ধ খেলা!

নতুন কিছু নেই, আগেরটিই। বৃষ্টি থামেনি এখনো। এ দফা আধাঘণ্টা পেরিয়ে গেছে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার।

এখন পর্যন্ত ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে তিন সংস্করণ মিলিয়ে পুরুষদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে ২২টি। পরিত্যক্ত হয়নি কোনো ম্যাচ।

এখন পর্যন্ত এ ম্যাচে হয়েছে ১৯.২ ওভার।

ডানেডিনে থেমেছে বৃষ্টি। মাঠ পর্যবেক্ষণে নেমেছেন দুই আম্পায়ার ব্রাউন ও টাকার। আবারও কিউরেটরের সঙ্গে কথা হচ্ছে তাঁদের। উইকেটের পাশের অঞ্চল পরীক্ষা করে দেখছেন তাঁরা। সরানো হয়েছে কাভার।

বাংলাদেশ সময় ৯-১৫ মিনিটে শুরু হবে খেলা। আর বৃষ্টি না হলে খেলা হবে ৩০ ওভার করে। মানে নিউজিল্যান্ড আর ১০.৪ ওভার ব্যাটিং করবে। ১৯.২ ওভারে তাদের স্কোর ১০৮/২।

পরিবর্তিত প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, একজন বোলার সর্বোচ্চ ৬ ওভার বোলিং করতে পারবেন। বাংলাদেশের জন্য যেটি খুব একটা স্বস্তির নয়। শরীফুল ও মোস্তাফিজের বাকি ১ ওভার করে, হাসানের ৪ বল। ফলে মিরাজ, সৌম্য এবং এখন পর্যন্ত বোলিংয়ে না আসা আফিফকে করতে হবে বাকি ৮ ওভার।

প্রথমে ল্যাথাম। এরপর ইয়াং। দুজনই স্কুপ করে ছক্কা মারলেন সৌম্যকে। তৃতীয় ওভার করতে এসে তিনি দিয়েছেন ১৩ রান। ২১ ওভারে ১২৪/২।

এবার ৫০ পেরোলেন ইয়াং। বিরতির পর সর্বশেষ ২ ওভারে এসেছে ২৩ রান। ৫ রানে ২ উইকেট পড়েছিল নিউজিল্যান্ডের, সেটিকে এখন মনে হচ্ছে অনেক পেছনের কোনো স্মৃতি।

সর্বশেষ সৌম্যকে টানা তিনটি চার মেরেছেন ল্যাথাম। শেষ ৪ ওভারে উঠেছে ৪৫ রান। ৭ ওভার বাকি থাকতে ২ উইকেটে নিউজিল্যান্ড তুলে ফেলেছে ১৪৯ রান।

বাধ্য হয়েই শেষবারের মতো শরীফুলকে ফিরিয়েছিলেন নাজমুল। তবে অধিনায়কের মুখে হাসি ফোটাতে পারলেন না এ বাঁহাতি পেসারও। তাঁর শেষ ৩ বলে ইয়াং মেরেছেন ২টি চার। ৬ ওভারে ২৮ রান দিয়ে বোলিং শেষ করলেন শরীফুল, যিনি প্রথম ওভারেই নিয়েছিলেন ২ উইকেট। তবে এরপর থেকে বদলে গেছে ইনিংসের দৃশ্যপট।

এবার আফিফকে এনেছিলেন নাজমুল। ল্যাথাম স্লগ সুইপে মেরেছেন বিশাল ছক্কা। এরপর ইয়াং। আফিফের প্রথম ওভারে এসেছে ১৭। শেষ ৫ ওভারে উঠেছে ৬৫ রান।

বিরতির পর পঞ্চম গিয়ারে থেকে শুরু করেছিলেন ল্যাথাম। এবার থামলেন তিনি। মিরাজের বলে ইনসাইড-এজে বোল্ড হয়েছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। কিন্তু তার আগে খেলেছেন ৭৭ বলে ৯২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। ইয়াংয়ের সঙ্গে তাঁর জুটিতে উঠেছে ১৭১ রান।

বিরতির পর সময় নিচ্ছে না স্বাগতিকেরা। ২৭তম ওভারে ২০০ পেরিয়ে গেছে তারা। ইনিংসে বাকি ৩ ওভার। মনে রাখতে হবে, ডিএলএস পদ্ধতিতে নিউজিল্যান্ড যা করবে, বাংলাদেশের লক্ষ্য বদলাবে আরও।

লেগ সাইডে ডিপে ফিল্ডার নেই। সৌম্য করলেন শর্ট লেংথে। ইয়াং সে সুযোগ ছাড়েননি। নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে না কোনো সুযোগই, তৈরিও করে নিচ্ছে নিজেদের মতো করে। সৌম্যর সর্বশেষ ওভারে এসেছে ১৭ রান। ৫ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৫৫ রান। ২ ওভার বাকি থাকতে নিউজিল্যান্ড তুলে ফেলেছে ২১৯ রান। ডানেডিনে লড়াই থেকে ছিটকে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

মিরাজকে স্লগ করে মারা ছক্কায় গিয়েছিলেন ৯৯ রানে। এরপর সিঙ্গেল নিতে গিয়েও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সঙ্গী চ্যাপম্যানকে। চ্যাপম্যান হয়েছেন রানআউট। পরের বলে গ্যাপ খুঁজে পেয়েছেন ঠিকই। ৮২ বলে ইয়াং পূর্ণ করেছেন তাঁর ক্যারিয়ারে তৃতীয় শতক।

২৯ ওভারে ২৩১/৪।

ডাবলস চুরি করতে গিয়ে রানআউট হয়ে থেমেছেন ইয়াং। ৮৪ বলে ১০৫ রানে থেমেছে তাঁর ইনিংস। তৃতীয় কিউই ব্যাটসম্যান হিসেবে এরপর রানআউট টম ব্লান্ডেলও। এবং শেষ বলে রানআউট হয়েছেন অ্যাডাম মিলনেও। শেষ ওভারে উঠেছে ৮ রান, হয়েছে ৩টি রানআউট।

দ্বিতীয় দফা বৃষ্টি বিরতির আগে ১৯.২ ওভারে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিল ১০৮/২। ৩০ ওভারে তারা থেমেছে ২৩৯/৭-এ। মানে শেষ ১০.৪ ওভারে তারা তুলেছে ১৩১ রান!

ডিএলএস পদ্ধতিতে প্রথম ওয়ানডে জিততে ৩০ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৪৫ রান।

দিনটা কোনোভাবেই সৌম্যর হলো না আর!

ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ ছেড়েছিলেন। বোলিংয়ে ৬ ওভারে দিয়েছেন ৬৩ রান। এবার ৪ বল খেলে কোনো রান না করেই আউট! অ্যাডাম মিলনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট আর খোঁচার মাঝামাঝি কিছু করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। চতুর্থ বলেই প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ১ রান।

ডাফিকে তুলে মারতে গিয়ে ওপরে তুলেছিলেন এনামুল। প্রায় ডিপ স্কয়ার লেগের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন উইকেটকিপার টম ব্লান্ডেল। শেষের ঠিক আগে গিয়ে বলের গতিপথ বুঝে উঠতে পারেননি। শেষ মুহূর্তে ডাইভ দিয়ে হাতে লাগাতে পারলেও গ্লাভসে রাখতে পারেনি। ৮ রানে বেঁচে গেছেন এনামুল। ক্যাচটি ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা ফিল্ডার নিতে পারতেন কি না, প্রশ্ন সেটিও। তবে সেটির উত্তর আপাতত খুঁজতে যাবেন না এনামুল।

বাংলাদেশ ৪ ওভারে ২০/১।

বোলারের মাথার ওপর দুই চার। ওভারের শেষ ২ বলে নাজমুল মেরেছেন ওই ২ চার, অভিষিক্ত উইল ও’রর্কের বলে। তরুণ কিউই পেসারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ওভারে এসেছে ১৪ রান। প্রথম পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ৪৪ রান।

একটা জুটি গড়ে উঠছিল। সেটির অপমৃত্যু হলো। ইশ সোধিকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল। মোটেও সুইপ করার লেংথে ছিল না সোধির বলটি। একেবারে ফুললেংথ থেকে সেটিই করতে গিয়েছিলেন নাজমুল। নিজের উইকেটটাও দিতে হলো তাই। সপ্তম ওভারে ৪৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

বেশ ভালোভাবে এগোচ্ছিলেন এর আগে জীবন পাওয়া এনামুল। লিটনের সঙ্গে জুটি আশা জোগাচ্ছিল বাংলাদেশকে। কিন্তু অভিষিক্ত ক্লার্কসনের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে খাড়া ওপরে ক্যাচ তুললেন তিনি। নিজেই সে ক্যাচ নিয়েছেন ক্লার্কসন। ৩৯ বলে ৪৩ রানে থেমেছে এনামুলের ইনিংস। ৮০ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।

১১.২ ওভারে ৮০/২।

ইশ সোধির গুগলি মিস করে গিয়েছিলেন তাওহিদ হৃদয়। আলোচনা করলেও আম্পায়ারের দেওয়া নট আউটের সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত রিভিউ করেনি নিউজিল্যান্ড। তবে বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, রিভিউ নিলে সফল হতো সেটি। ১ রানে তাই বেঁচে গেলেন হৃদয়। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন তিনি?

১৩ ওভারে ৮৯/৩।

শট খেলবেন। না, খেলবেন না। না, খেলেই ফেলবেন।

এক বলে এত কিছু করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত আউটই হয়ে গেলেন লিটন। ক্লার্কসনের স্লো বাউন্সারে শুরুতে শট খেলতে উদ্যত হলেও মাঝে আটকে রেখেছিলেন নিজেকে, শেষ মুহূর্তে আবার ব্যাট চালালেন। তবে তাঁর ব্যাট নাগাল পায়নি বলের। গ্লাভসে লেগে বল বরং গেছে পেছনে, উইকেটকিপার টম ব্লান্ডেল নিয়েছেন সহজ ক্যাচ। বাংলাদেশ পথ হারিয়েছে আরেকটু।

১৪ ওভারে ৯২/৪।

নাজমুল হোসেন—রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড।

লিটন দাস—গ্লাভসে লেগে ওঠা ক্যাচে আউট।

মুশফিকুর রহিম—রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে গ্লাভসে লেগে ওঠা ক্যাচে আউট।

নাজমুল ও লিটনের আউটের সমন্বয় যেন মুশফিকেরটি!

রাচিন রবীন্দ্রর বলে টম ব্লান্ডেলের হাতে ধরা পড়েছেন মুশফিক। ১০৩ রানে অর্ধেক উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ।

২০ ওভারশেষে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিল ১১১/২। বাংলাদেশের সেখানে ১৩৮/৫।

বৃষ্টি বিরতির পর নিউজিল্যান্ড ঝড় শুরু করেছিল মূলত ২১তম ওভার থেকে। তবে বাংলাদেশ আগেভাগেই সেটি করতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছে উইকেট। যদিও আফিফ-হৃদয়ের পর আসতে বাকি মিরাজ। এ দুজনের জুটিতে ২৩ বলে উঠেছে ৩৫ রান, আফিফ সেখানে ১৫ বলে করেছেন ২৬ রান। এখনো ওভারপ্রতি বলের প্রায় দ্বিগুণ রান দরকার বাংলাদেশের।

ইশ সোধির ফুললেংথের বল সুইপ করতে গিয়ে মিস করে যাওয়া আফিফ হোসেনকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে আফিফ নেন রিভিউ। বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, সোধির গুগলি মিস করে যেত আফিফের অফ স্টাম্প।

অবশ্য আফিফ বেঁচে গেলেও হৃদয় ঠিকই আউট হলেন। সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েছেন তিনি। ২৭ বলে ৩৩ রান করে ফিরে গেলেন হৃদয়। ৩৮ বলে ৫৬ রানের জুটি শেষ এখানেই।

৪৫ বলে দরকার ৮৬ রান, বাকি ৪ উইকেট। ক্রিজে আফিফের সঙ্গে শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মিরাজ।

শর্ট লেংথের বল। তবে ঠিক পুল করার মতো ছিল না। জোরের ওপর সেটিই করতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়লেন ২৮ বলে ৩৮ রান করা আফিফ। সম্ভবত তাতে শেষ হয়ে গেল প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের শেষ আশাটুকুও। ৩৬ বলে দরকার ৮০ রান।

অ্যাডাম মিলনের শর্ট বলে ক্যাচ তুলে উঠেই গিয়েছিলেন শরীফুল। নতুন ব্যাটসম্যান হাসান মাহমুদও চলে এসেছিলেন। তবে টেলিভিশন আম্পায়ার শর্ট বল দেখেছেন এরপর। তা দেখার পর সিদ্ধান্ত দিয়েছেন নো বলের, কারণ ওভারে এটি তৃতীয় কাঁধসমান উচ্চতার শর্ট বল!

ফিরে এসে শরীফুল তুলে মেরেছেন আবার। এবার বল উঠেছে বেশি। দূরত্বও গেছে বেশি। কিন্তু ডিপ মিডউইকেটে উইল ইয়াং নিয়েছেন অসাধারণ এক ক্যাচ! বলের গতিপথ পড়তে মাঝে ভুল করে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেটি পুষিয়ে দিয়েছেন দুর্দান্তভাবে। ডাইভ দিয়ে একেবারে দড়ির কাছে চলে গিয়েছিলেন ক্যাচ নিয়ে। আবার টেলিভিশন আম্পায়ারের কাছে ছিল সিদ্ধান্তের ভার। ইয়াং সেই ক্যাচ নিয়েছেন ঠিকঠাক, সিদ্ধান্ত এসেছে এমন।

এবার শরীফুলকে উঠে যেতে হয়েছে। ইয়াংয়ের স্মরণীয় দিন হয়ে উঠেছে আরও স্মরণীয়।

ডিএলএস পদ্ধতিতে ৩০ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২৪৫ রান। ৯ উইকেটে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ২০০ রান। ইনিংসের শেষ বলে বোল্ড হয়েছেন হাসান মাহমুদ, অভিষেকে উইকেটের দেখা পেয়েছেন উইলিয়াম ও’রর্ক।

ম্যাচ শুরুর আগেই প্রথম ওয়ানডে নেমে এসেছিল ৪৬ ওভারে। এরপর ৪০, এরপর ৩০ ওভারে। ৬০ ওভার খেলাশেষে ফিরে তাকালে এখন বলাই যায়—আদতে বাংলাদেশ লড়াই থেকে ছিটকে গেছে প্রথম ওভারের পরই! যে ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে স্মরণীয় এক দিনের আভাস দিয়েছিলেন শরীফুল ইসলাম। কিন্তু টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াংয়ের জুটি, ল্যাথামের ৯০ ও ইয়াংয়ের ১০০-পেরোনো ইনিংস, এ দুজনের সঙ্গে মার্ক চ্যাপম্যানের শেষের ঝড়ে বাংলাদেশকে কঠিন সমীকরণের সামনে ফেলে দেয় নিউজিল্যান্ড। স্বীকৃত পঞ্চম বোলার ছাড়াই খেলতে নামার সিদ্ধান্তও বাংলাদেশের জন্য হয়ে গেছে বুমেরাং।

সে সমীকরণ মেলাতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। লম্বা ব্যাটিং লাইন আপ হলেও ঠিক পরিকল্পনার ছাপ ছিল না তাতে। এনামুল হক, তাওহিদ হৃদয়, আফিফ হোসেন বা শেষে এসে মেহেদী হাসান মিরাজের ইনিংস তাই পার্থক্য গড়তে পারেনি কোনো। ইনিংসে একটিই ৫০-পেরোনো জুটি, সেটিও এসেছে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে। ততক্ষণে সমীকরণ হয়ে উঠেছে আরও কঠিন।

এবারের নিউজিল্যান্ড সফরও তাই শুরু হলো হার দিয়ে। নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে সাদা বলে হারানোর অপেক্ষাও বাড়ল আরেকটু। অন্যদিকে টিকে থাকল ডানেডিনে সব সংস্করণ মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের অপরাজিত থাকার রেকর্ডটি।