স্পিন আর হোপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ‘হ্যাটট্রিক’

টানা তৃতীয় সিরিজ জয়ের উদ্‌যাপন ওয়েস্ট ইন্ডিজের, ত্রিনিদাদে ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামেএএফপি

ক্রিস ওকসকে পয়েন্টের ওপর দিয়ে মারা শাই হোপের ছক্কার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ডাগআউটে উদ্‌যাপনটাই বলে দিচ্ছিল, জয়টা ক্যারিবীয়দের কাছে বিশেষ কিছু। এক সময় ২-০-তে এগিয়ে থাকলেও সিরিজের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নেমেছিল সে লিডটা খুইয়ে। ত্রিনিদাদে ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে ১৩২ রানে থামিয়েও পথ হারাতে ধরেছিল তারা। তবে ‘কুল’ থেকেছেন হোপ, তাঁর ৪৩ বলে ৪৩ রানের ইনিংসই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এনে দিয়েছে ৪ উইকেটের জয়।

এই জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই বাঁহাতি স্পিনার—গুড়াকেশ মোতি ও আকিল হোসেইন। দুজন মিলে ৮ ওভারে দেন মাত্র ৪৩ রান, নেন ৫ উইকেট। পাওয়ারপ্লেতে আকিল আর পরে মোতি লাগাম পরিয়ে রাখেন আগের ম্যাচেই ২৬৭ রান তোলা ইংলিশদের। ঠিক নিজেদের উপযোগী উইকেট না হলেও হোপ ধরে রাখেন ইনিংস। তাতেই টানা তৃতীয় সিরিজ জয় নিশ্চিত হয় তাদের। এ বছর দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতের পর ইংল্যান্ডকে হারাল তারা, নিজেদের ইতিহাসেই প্রথমবারের মতো কমপক্ষে দুটি ম্যাচের তিনটি সিরিজ টানা জিতল ক্যারিবীয়রা।

আরও পড়ুন

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ড প্রথম ধাক্কা খায় চতুর্থ ওভারে, জেসন হোল্ডারকে স্কুপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে জস বাটলার ধরা পড়ায়। সিরিজজুড়েই রান খুঁজে ফেরা উইল জ্যাকস সফল হননি এদিনও। এরপরও পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে তারা ৫০ রান তোলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ফিল সল্টের সৌজন্যে। তবে পাওয়ারপ্লের ঠিক পরের ওভারে মোতিকে ছক্কা মারার ঠিক পরের বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হন আগের দুই ম্যাচেই শতক পাওয়া এ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, ২২ বলে ৩৮ রান করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে ‘আনুষ্ঠানিকভাবে’ এগিয়ে যায় তাতেই।

৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা মোতি
এএফপি

হ্যারি ব্রুকও ফেরার পর লিয়াম লিভিংস্টোন ও মঈন আলীর জুটি মাঝে একটা ভিত এনে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ইংল্যান্ডকে, কিন্তু অসময়েই থামেন তাঁরা। দুই বাঁহাতি স্পিনারের বিপক্ষে ম্যাচআপ পক্ষে আনতে ব্যাটিং অর্ডারে ভালোই এদিক-ওদিক করে ইংল্যান্ড, কিন্তু সফল হয়নি সে সব। শেষ দিকে আন্দ্রে রাসেল ও জেসন হোল্ডার যথেষ্টর চেয়ে বেশ কম রানেই ইংল্যান্ডকে আটকে রাখা নিশ্চিত করেন। ম্যাচশেষে বাটলার যেমন বলেছেন, ‘কন্ডিশন ভিন্ন ছিল, দ্রুত মানিয়ে নিতে পারিনি। ১৬০ করলে সত্যিই ভালো হতো।’

তবে সে সম্বল নিয়েও ইংলিশ বোলাররা লড়াই করেছেন ঠিকই। তাতে নেতৃত্ব দেন রিস টপলি ও আদিল রশিদ। বাঁহাতি পেসার টপলি ও টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর বোলার রশিদ মিলে ৮ ওভারে মাত্র ৩৮ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। পাওয়ারপ্লেতে ব্র্যান্ডং কিং ও নিকোলাস পুরানের পর মাঝের ওভারে জনসন চার্লস ও শেরফ্যান রাদারফোর্ডকে হারায় স্বাগতিকেরা। কিন্তু হোপকে টলাতে পারেনি ইংল্যান্ড।

জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন শেই হোপ
এএফপি

১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে রাসেলকে থামিয়ে ইংল্যান্ডকে আরেকবার আশা দিয়েছিলেন বটে স্যাম কারেন। কিন্তু পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে ক্রিস ওকসকে ছক্কা মেরে হোপ নিশ্চিত করেন, ৫০ ওভারের পর ২০ ওভারের সিরিজও হচ্ছে তাঁদেরই। স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল কৃতিত্ব দিয়েছেন হোপকে, ‘গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট পড়েছে, তবে শেই হোপই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। মিডল অর্ডার ধরে রেখেছে। আমাদের ব্যাটিং বিভাগের কাজ করে দিয়েছে।’

যে ম্যাচে কোনো ব্যাটসম্যানই ১৩০ স্ট্রাইক রেটে কমপক্ষে ৩০ রানও করতে পারেননি, সে ম্যাচে হোপের ১০০ স্ট্রাইক রেটের ৪৩ রানের ইনিংসই তো গড়ে দেবে পার্থক্য।