বাবরকে ‘বলির পাঁঠা’ না বানানোর আহ্বান ওয়াসিম আকরামের

পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমরয়টার্স

বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে শেষ ম্যাচে অসম্ভব এক সমীকরণই মেলাতে হতো বাবর আজমদের। সেটি নিয়ে তাই কারোরই আশা ছিল না। তাই বলে পাকিস্তান ইংল্যান্ডের সঙ্গে ৯৩ রানের বিরাট ব্যবধানে হারবে—প্রত্যাশিত ছিল না এটিও। পাকিস্তান এবারের বিশ্বকাপ শেষ করল ৫টি হার দিয়ে। বিশ্বকাপের নির্দিষ্ট কোনো আসরে এটিই পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক হার, যা পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে আসরই নির্দেশ করছে।

এত বাজে ফলের পর বেশির ভাগ পাকিস্তানি বিশ্লেষকই দুষছেন অধিনায়ক বাবর আজমকে। তাঁর অধিনায়কত্বের ধরন আগে থেকেই প্রশ্নের মুখে। এবার প্রশ্নের মুখে তাঁর ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও। ৯ ম্যাচে বাবরের ব্যাট থেকে এসেছে ৩২০ রান। ২০১৯ বিশ্বকাপে এর চেয়ে ১৫৪ রান বেশি করেছিলেন তিনি। অধিনায়কত্ব তো বটেই, ব্যাট হাতে নিজের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও বাবর এবার পিছিয়ে ছিলেন। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা তাঁকে রীতিমতো ধুয়ে দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাঁকে নিয়ে চলছে সমালোচনা।

বাবর আজম কি বলির পাঁঠা হবেন
ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ওয়াসিম আকরাম অবশ্য দলগত বিশ্বকাপ–ব্যর্থতার জন্য এক বাবর আজমকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো উচিত নয় বলে মনে করেন। পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল ‘এ স্পোর্টসে’ বিশ্লেষকের ভূমিকায় থাকা আকরাম পাকিস্তান দলের ব্যর্থতাকে সম্মিলিত ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন, ‘অধিনায়ক একা মাঠে খেলে না। হ্যাঁ, এটা ঠিক, অধিনায়ক হিসেবে বাবর কিছু ভুল করেছে। এশিয়া কাপেও, বিশ্বকাপেও। কিন্তু একা তাঁকে দোষ দেওয়া ঠিক নয়। পাকিস্তানের এবারের ব্যর্থতা গোটা সিস্টেমের সমস্যা। এক বছর ধরে পাকিস্তান ক্রিকেট যেভাবে চলেছে, সেটি এ জন্য দায়ী। ক্রিকেটাররা কেউই জানত না, তাদের কোচ কে! এখন বাবরকে একা যদি সবকিছুর জন্য দায়ী করে “বলির পাঁঠা” বানানো হয়, সেটি খুবই বাজে ব্যাপার হবে।’

পাকিস্তানের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরাম
আইসিসি

ওয়াসিম আকরাম মনে করেন, অধিনায়কত্বের চাপ বাবরের পারফরম্যান্সের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, ‘বাবর আমাদের বড় তারকা। সে যখন রান পায়, তখন পুরো জাতি আনন্দে মেতে ওঠে। পাকিস্তানিরা গর্বিত হয়। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, অধিনায়কত্বের চাপটা বাবরের পারফরম্যান্সের ওপর নেতিবাচক প্রভাব রাখছে। তাঁকে বেশ ক্লান্তও মনে হচ্ছে। বিশ্বকাপ আর এশিয়া কাপ—দুটি টুর্নামেন্টেই এমন মনে হয়েছে। এখন তাঁকে চাপ সামলানোর উপায় জানতে হবে। ব্যাটিংয়ের সময় জানতে হবে, কীভাবে সে শুধু একজন সাধারণ ব্যাটসম্যান হিসেবে ভাববে। তবে এটা বলা যত সহজ, করা তত কঠিন।’