সুপার সিক্সের দৌড়ে এগিয়ে যেতে একটা জয় খুব দরকার ছিল শাইনপুকুরের। কিন্তু সেটা যে এমন দাপুটে পারফরম্যান্সে আসবে, তা কে ভেবেছিল! মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ১১০ রানে অলআউট করে সেই রান মাত্র ৯ ওভারে টপকে যায় শাইনপুকুর। ফতুল্লায় দিনের অন্য ম্যাচে সিটি ক্লাব ২০ রানে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে।
রূপগঞ্জ-শাইনপুকুর
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সকালের কন্ডিশনে পেসাররা সুইং পাচ্ছিলেন। তবে শাইনপুকুরের রবিউল হক ও মুকিদুল ইসলামের চেয়ে দাপটটা বেশি দেখিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার মুরাদ। ৯.৪ ওভার বল করে মাত্র ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে ধস নামান রূপগঞ্জের ব্যাটিংয়ে। আরেক বাঁহাতি আরাফাত সানি ও অফ স্পিনার এস এম মেহরব দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। তাতে ৩৯.৪ ওভারে ১১০ রানে থামে রূপগঞ্জের ব্যাটিং। ওপেনিংয়ে আবদুল্লাহ আল মামুনের ২০ রান ছিল রূপগঞ্জ ইনিংসের সর্বোচ্চ।
বৃষ্টির কারণে রূপগঞ্জ ইনিংসের সময় খেলা বন্ধ থাকায় রান তাড়ায় ওভার কমিয়ে ৪৮-এ আনা হয়। কিন্তু শাইনপুকুরের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও জিশান আলম খেলাটা শেষ করতে একদমই সময় নেননি। দুজনের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ৯ ওভারেই রূপগঞ্জের রান টপকে যায় শাইনপুকুর। তানজিদ ২৬ বল খেলে অপরাজিত ৪৮ রান করেছেন। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ছিল তাঁর ১৮৮ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস। তানজিদের চেয়েও দ্রুতগতিতে এগিয়েছে জিশানের ইনিংস। ২৮ বল খেলে ৫৮ রান করা জিশানের স্ট্রাইক রেট ২০৭, ৪টি চার ও ৬টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রূপগঞ্জ টাইগার্স: ৩৯.৪ ওভারে ১১০ (মামুন ২০, ফরহাদ ১৯, আসাদুল্লাহ ১৭; মুরাদ ৪/২১, সানি ২/১০, মেহরব ২/৮)
শাইনপুকুর: ৯ ওভারে ১১১/০ (জিশান ৫৮, তানজিদ ৪৮; অনিক ০/১৫, সোহাগ ০/২২, রোহানাত ০/২২)
ফল: শাইনপুকুর ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: হাসান মুরাদ।
সিটি ক্লাব-ব্রাদার্স ইউনিয়ন
রূপগঞ্জের মতো সকালের কন্ডিশন ভুগিয়েছে সিটি ক্লাবকেও। ফতুল্লায় ব্রাদার্সের বিপক্ষে ব্যাটিং করতে নেমে ৩০ রানে ৩ উইকেট হারায় সিটি ক্লাব। ওপেনার হাসানুজ্জামান ও পাঁচে নামা সাজ্জাদুল হক টিকে থাকায় রক্ষা। দুজন মিলে পঞ্চম উইকেটে ৮৩ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কাটা সামলে নেন। হাসানুজ্জামান ৪০ রান করে আউট হলেও সাজ্জাদুল ষষ্ঠ উইকেটে আরও একটি ফিফটি পার্টনারশিপ (৫৯) গড়েন মইনুল ইসলামের সঙ্গে।
ইনিংসের ৩৭তম ওভারে ৮৪ বলে ৭০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন সাজ্জাদুল। মইনুল টিকে ছিলেন ৪৯তম ওভার পর্যন্ত। ছোট ছোট জুটি গড়ে তিনি সিটি ক্লাবের রানটাকে নিয়ে গেছেন ৯ উইকেটে ২৫১–তে। ৭৪ বলে ৫৩ রান করেছেন মইনুল। ব্রাদার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
রান তাড়ায় ব্রাদার্স ভালো শুরু করলেও মাঝের ওভারে খেই হারিয়ে ফেলে। ওপরের সারির ৬ ব্যাটসম্যানের মধ্যে ৪ জন ২০–এর বেশি রান করে আউট হয়েছেন। উদ্বোধনে নেমে রহমত আলী ৬৯ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন। ব্রাদার্সের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান এসেছে রহমতের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ রান এসেছে আসিফ আহমেদের ব্যাট থেকে। ব্রাদার্স ৫০ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে তুলেছে ২৩১ রান। ২০ রানের জয়ের দিন ৫ উইকেট নিয়েছেন পেসার ইফরান হোসেন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এবারই প্রথম ৫ উইকেট পেলেন চট্টগ্রামের এই পেসার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিটি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৫১/৯ (সাজ্জাদুল ৭০, মইনুল ৫৩, হাসানুজ্জামান ৪১; জায়েদ ৪/২৪, মাহমুদুল ২/৪২, মিরাজ ১/২৬)
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৫০ ওভারে ২৩১/৮ (রহমত ৬০, আসিফ ৪৪, রাহাতুল ৩০; ইফরান ৫/৪৭, মইনুল ১/৩৬, আসাদুল্লাহ ১/৪৮)
ফল: সিটি ক্লাব ২০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইফরান হোসেন।