এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি যশপ্রীত বুমরার জন্য হতে পারে প্রায়শ্চিত্তের মঞ্চ।
২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ফাইনালে সেঞ্চুরি করে যিনি ম্যাচসেরা হয়েছিলেন, সেই ফখর জামানকে মাত্র ৩ রানে ক্যাচ বানালেও ‘নো’ বলের জন্য আক্ষেপে পুড়তে হয়েছিল বুমরাকে। আট বছর পর সেই বুমরা এখন অনেক পরিণত। বোলিংয়ে দলকে একাই জিতিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
কিন্তু ৩১ বছর বয়সী পেসার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে পারবেন কি না, এখনো নিশ্চিত নয়। ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার, সাবেক কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী মনে করেন, বুমরা না থাকলে ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমে যাবে।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখা বুমরা কয়েক বছর ধরেই ভারতের বোলিং আক্রমণের প্রধান শক্তি। এর মধ্যে ২০২৪ সালে ছিলেন সেরা ফর্মে। জুনে ভারতের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে ভূমিকা রাখায় হাতে পেয়েছিলেন টুর্নামেন্ট–সেরার স্বীকৃতি, বছরের শেষ দিকে ভারতের টেস্ট দল অস্ট্রেলিয়ার কাছে সিরিজ হারলেও বুমরাও ছিলেন সিরিজ–সেরা। সব মিলিয়ে আইসিসি কর্তৃক ২০২৪ সালের বর্ষসেরার খেতাবই জিতেছেন এই পেসার।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনি টেস্টে পাওয়া পিঠে চোট এখন তাঁকে মাঠের বাইরে আটকে রেখেছে। নির্বাচকেরা তাঁকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে রাখলেও প্রথম কয়েকটি ম্যাচে না খেলাটা এরই মধ্যে নিশ্চিত। আট দলের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ভারত গ্রুপ পর্বে খেলবে তিন ম্যাচ, এরপর সম্ভাব্য সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। যার অর্থ, বুমরা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ফিরলেও শেষ দিকে এক–দুই বা সর্বোচ্চ তিনটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন। কিন্তু নির্বাচকেরা সেই ঝুঁকি নেবেন কি না, আপাতত স্পষ্ট নয়।
ভারতের সাবেক কোচ শাস্ত্রীর মতে, বুমরার না খেলাটা ভারতের জন্য ধাক্কা হবে। আইসিসি রিভিউয়ে সঞ্জানা গনেষনকে তিনি বলেন, ‘বুমরা ভালোভাবে ফিট না হলে ভারতের সুযোগ ৩০ শতাংশ, আক্ষরিক অর্থে ৩০–৩৫ শতাংশই কমে যাবে। আর বুমরা যদি সম্পূর্ণ ফিট হয়ে খেলতে পারে, তাহলে ডেথ ওভারে (ভারতের ভালো খেলার) নিশ্চয়তা থাকবে। তখন ব্যাপারটা ভিন্ন হবে।’
বুমরা সম্পূর্ণ হয়ে ফিট হয়ে খেললে ভারতের সম্ভাবনা বাড়বে, সেটি তাঁর বিভিন্ন সময়ের বোলিং কীর্তিই বলে দিচ্ছে। তবে ৩১ বছর বয়সী এই পেসারকে অল্প কটি ম্যাচের জন্য খেলানো কতটা সঠিক হবে কি না, ভাবতে বলেছেন শাস্ত্রী, ‘এটা খুব বড় ঝুঁকি হয়ে যাবে। সামনেও ভারতের বড় ব্যস্ততা আছে। এখন সে ক্যারিয়ারের যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, আমার মনে হয় এক ম্যাচের জন্য খেলানো এবং ভালো কিছু আশা করাটা খুব বেশি হয়ে যায়। কারণ, সবার প্রত্যাশা থাকবে অনেক বেশি। সবাই মনে করবে বুমরা মাঠে নেমেই খেলা বদলে দেবে, কিন্তু পিঠের চোট থেকে ফিরে ভালো করা সহজ কিছু নয়।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের প্রথম ম্যাচ ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বিপক্ষে। ‘এ’ গ্রুপে গতবারের রানার্সআপদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান (২৩ ফেব্রুয়ারি) ও নিউজিল্যান্ড (২ মার্চ)।