টি-টোয়েন্টি লিগের জন্য টেস্ট নিয়ে বিপাকে দক্ষিণ আফ্রিকা
একদিকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ, আরেক দিকে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ এসএ২০। বিপরীতমুখী দুই প্রতিযোগিতা নিয়ে ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ) এখন ভীষণ ধাঁধায়।
ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ এসএ২০ শুরু হবে আগামী বছরের জানুয়ারিতে। একই মাসের শেষ সপ্তাহে বা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তা শেষ হওয়ার কথা। আর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে ৪ ফেব্রুয়ারি। একটির শেষ আর অন্যটির শুরুর সময়ে সাংঘর্ষিক হওয়ায় সমস্যা হবে সেরা ক্রিকেটারদের পাওয়া নিয়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটাররা মূলত সিএসএর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, আবার টি-টোয়েন্টি লিগের জন্য এসএ২০-এর ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গেও তারা চুক্তিবদ্ধ। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে সিএসএ জানুয়ারি উইন্ডোর জন্য খেলোয়াড়দের চুক্তি-স্বত্ব এসএ২০-কে দিয়েছে। অর্থাৎ এসএ২০ যখন চলবে, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা জাতীয় দলের চেয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে খেলতে বেশি বাধ্য থাকবেন।
এসএ২০-কে খেলোয়াড়-প্রাপ্যতা নিশ্চিত করায় টেস্টের জন্য সেরা ক্রিকেটারদের পাবে না সিএসএ। এ ক্ষেত্রে তিনটি পথ খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। প্রথমত, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া সিরিজটি বাতিল করা; দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে সফরে যাওয়া; তৃতীয়ত, সিরিজের সূচি বদলে ম্যাচ পেছানো।
প্রথমটি করার চিন্তাভাবনা নেই সিএসএর। কারণ, চলমান ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনায় (এফটিপি) দুটিই সিরিজ আছে দক্ষিণ আফ্রিকার। দ্বিতীয়টি নিয়ে এখনই খুব বেশি ভাবার নেই, সময় এলে দেখা যাবে। সব দিক বজায় থাকে তৃতীয় পথটি অবলম্বন করতে পারলে। এ জন্য নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (এনজেডসি) সূচি বিবেচনার অনুরোধ পাঠিয়েছে সিএসএ।
গতকাল এনজেডসির জনসংযোগ ব্যবস্থাপক রিচার্ড বুক ইএসপিএনক্রিকইনফোকে জানান, সূচি বদলানো নিয়ে আলাপ করতে তারা রাজি নন, ‘এই দুটি টেস্ট এফটিপির অংশ, যেটা দুই বছর আগেই ঘোষণা করা হয়েছে। সিএসএর সঙ্গে সম্মতির ভিত্তিতে কয়েক সপ্তাহ আগেই সবকিছু চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফ্লাইট নিশ্চিত করা হয়েছে, প্রস্তুতি ম্যাচের দিনক্ষণও ঠিক করা হয়েছে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার চাওয়া অনুযায়ী নিউজিল্যান্ড সূচি বদলাতে না চাওয়ার পেছনেও ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টির ভূমিকা আছে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পরই নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়াকে আতিথেয়তা দেবে। খেলবে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি, যা শেষ হবে ১২ মার্চ। এর পর অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড দুই দলের খেলোয়াড়েরাই চলে যাবেন ভারতের আইপিএল খেলতে, যেটি মার্চের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহের দিকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থাৎ আইপিএলের জন্য নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ পেছানো যাবে না, যে কারণে নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজও হতে হবে যথাসময়ে।
ক্রিকইনফো জানিয়েছে, আইপিএলের সময় সিরিজ আয়োজন করা যায় কি না, এনজেডসির কাছে জানতে চেয়েছিল সিএএসএ। তবে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের আইপিএল খেলার সুযোগ করে দিতে এনজেডসি রাজি হয়নি।
সব মিলিয়ে সিএসএর হাতে এখন একটাই উপায়, দ্বিতীয় সারির ক্রিকেটারদের নিউজিল্যান্ডে পাঠানো।