টি–টোয়েন্টি চার–ছক্কার খেলা। তবে ছক্কার মান যেহেতু বেশি, তাই ছক্কাই সবাই বেশি মারতে চান। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টির যাত্রা শুরুর পর এই দুই দশকে শুধু একজন ব্যাটসম্যানই ন্যূনতম ২০০টি ছক্কা মারতে পেরেছেন। অন্তত ১৫০টি ছক্কা মারা ব্যাটসম্যান মাত্র পাঁচজন। মাত্র ৩০ জন ব্যাটসম্যান ন্যূনতম ১০০টি করে ছক্কা মারতে পেরেছেন। আসুন দেখে নিই আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছেন কোন ১০ ব্যাটসম্যান—
ছক্কা: ১৩৬
ইনিংস: ৪০
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৬৯.২২
দল: অস্ট্রিয়া
টি–টোয়েন্টিতে এক বছরে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড এ বছরই ভেঙেছেন অস্ট্রিয়ার করণবীর সিং। ভারতে জন্ম নেওয়া এই ব্যাটসম্যান চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩২ ইনিংসে মেরেছেন ১২২ ছক্কা। গত বছর মে মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত করণবীর এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ছক্কা মারার তালিকায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে শীর্ষে ১০–এ উঠে এসেছেন। ১৩৬ ছক্কা নিয়ে ১০ম স্থানে ৩০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
ছক্কা: ১৩৯
ইনিংস: ১০৭
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৪২.২৬
দল: মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার তারকা ব্যাটসম্যান। ২০১৯ সালে কুয়ালালামপুরে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে অভিষেক। এই সংস্করণে ১৮টি ফিফটি ও ১টি সেঞ্চুরি আছে সাঈদ আজিজের। তবে সহযোগী দেশের খেলোয়াড় হওয়ায় সাঈদের বেশির ভাগ সাফল্যই সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষে। তাই বলে ২৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের সামর্থ্যকে খাটো করে দেখার সুযোগ খুব সামান্যই। প্রতিপক্ষ যে–ই হোক, ছক্কা মারতে যেহেতু সীমানা পার করতে হয়, তাই শীর্ষ ১০–এ উঠে আসাটা তাঁর জন্য বড় অর্জনই।
ছক্কা: ১৪০
ইনিংস: ৯৪
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১২৯.৫৮
দল: হংকং
বাবর হায়াতের জন্ম পাকিস্তানের পাঞ্জাবে। ২০১৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে নেপালের বিপক্ষে তাঁর অভিষেক। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে হংকংয়ের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান তিনি। এই সংস্করণে রানতাড়ায় নেমে সর্বোচ্চ ১২২ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ডও বাবরের। হংকংয়ের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া বাবর তাঁর দলের হয়ে ৯৮ ম্যাচ খেলেছেন।
ছক্কা: ১৪৮
ইনিংস: ১১৪
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৫৬.০০
দল: অস্ট্রেলিয়া
সংক্ষিপ্ত সংস্করণে তাঁর চেয়ে ভয়ংকর ব্যাটসম্যান খুব বেশি নেই বর্তমান ক্রিকেট–বিশ্বে। বড় ম্যাচে পারফর্ম করতে পারেন বলে তাঁর আরেক নাম ‘বিগ শো’। শুধু আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতেই তাঁর ৫টি সেঞ্চুরি আছে। অস্ট্রেলিয়ান এই তারকার রিভার্স সুইপে মারা ছক্কাগুলো অনেক তরুণের জন্যই উদ্ভাবনী শট খেলার রেফারেন্স পয়েন্ট।
ছক্কা: ১৪৯
ইনিংস: ৯৭
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৩৬.৩৯
দল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ
এ বছর জুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার আগে এই সংস্করণে অন্যতম বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান ছিলেন নিকোলাস পুরান। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের মিড উইকেট দিয়ে মারা ছক্কাগুলো এখনো অনেকের চোখে ভাসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক এ অধিনায়ক এখন বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে ব্যস্ত।
ছক্কা: ১৫০
ইনিংস: ৮৭
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৬৩.৮৪
দল: ভারত
ভারতীয় ক্রিকেটে তিনি ‘স্কাই’ নামে পরিচিত। সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে সুর্যকুমারের দক্ষতাও আসলে আকাশসমান। উদ্ভাবনী সব শটে যেমন ছক্কা মারতে পারেন, তেমনি প্রথাগত স্ট্রোক খেলতেও সিদ্ধহস্ত। ভারতের এই অধিনায়ক ইতিহাসের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই সংস্করণে অন্তত ১৫০ ছক্কা মারার ক্লাবে ঢুকেছেন।
ছক্কা: ১৭২
ইনিংস: ১৩২
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৪৮.৯৭
দল: ইংল্যান্ড
আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে গত এক দশকে সবচেয়ে দাপট ছড়ানো ব্যাটসম্যানদের একজন। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে একসময়ের বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড দলের খুব গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ভালো বল সীমানাছাড়া করতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার।
ছক্কা: ১৭৩
ইনিংস: ১১৮
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৩৫.৭০
দল: নিউজিল্যান্ড
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও মার্টিন গাপটিল দেশের হয়ে সর্বশেষ টি–টোয়েন্টি খেলেছিলেন ২০২২ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে। গাপটিল তাঁর সময়ের বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অন্যতম। সোজা ব্যাটে স্ট্রেট দিয়ে বড় ছক্কা মারায় বিশেষ দক্ষতা ছিল ডানহাতি এ ওপেনারের।
ছক্কা: ১৮৭
ইনিংস: ৯১
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৫১.৭৬
দল: আরব আমিরাত
পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া মোহাম্মদ ওয়াসিম আরব আমিরাতের বর্তমান টি–টোয়েন্টি অধিনায়ক। আইসিসির শর্ত পূরণ করে ২০২১ সালে দেশটির হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে তিনটি সেঞ্চুরি আছে তাঁর।
ছক্কা: ২০৫
ইনিংস: ১৫১
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট: ১৪০.৮৯
দল: ভারত
অনেকের মতেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে সর্বকালের সেরা ওপেনারদের একজন। রোহিতের ব্যাটিং শুধু আক্রমণাত্বক নয়, দেখতেও চোখজুড়ানো। পুল কিংবা হুক, কাভারের ওপর দিয়ে তুলে মারা শট আর স্ট্রেট দিয়ে মারা ছক্কাগুলো যেকোনো ওপেনারের জন্যই শেখার বিষয়।