কোহলির অবসর: ‘আসল ঘটনা হয়তো কখনোই জানা যাবে না’

বিরাট কোহলিএএফপি

বিরাট কোহলি টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন তিন দিন আগে। কিন্তু তাঁর অবসর নিয়ে জল্পনাকল্পনা থামেনি।

পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে আগামী জুনে ইংল্যান্ড সফরে যাবে ভারত। এর আগেই কোহলির অবসর ঘোষণাকে অনেকেই স্বাভাবিক চোখে দেখছেন না। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফ যেমন মনে করেন, কোহলি টেস্ট খেলা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচকেরা এই সংস্করণে গত কয়েক বছরের ফর্ম বিচার করে কোহলিকে সম্ভবত বলেছেন, দলে তাঁর আর জায়গা হবে না।

আরও পড়ুন

ভারতের বার্তা সংস্থা আইএএনএসের সঙ্গে আলাপচারিতায় কাইফ এটাও বলেছেন, আসল ঘটনা হয়তো কখনোই জানা যাবে না। পর্দার আড়ালে কী ঘটেছে, সেসব অনুমান করা খুব কঠিন বলে মন্তব্যও করেন ৪৪ বছর বয়সী কাইফ।

নিজে যা মনে করেন, কাইফ সেটাই বলেছেন আইএএনএসকে। টেস্টে কোহলির ফর্ম সাম্প্রতিক সময়ে ভালো না হলেও ভারতীয় ভক্তদের আশা ছিল, রোহিত শর্মা টেস্ট ছাড়ার পর ৩৬ বছর বয়সী কোহলি এই সংস্করণে আরও কিছুদিন খেলা চালিয়ে যাবেন। খেলবেন আগামী মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও।

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফ
কাইফের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল

টেস্টে রানে ফিরতে গত জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির হয়ে রঞ্জি ট্রফিতেও খেলেন কোহলি। কিন্তু হুট করেই গত কয়েক দিন আগে জানা গেল, টেস্ট ছাড়ার ইচ্ছার কথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) জানিয়েছেন কোহলি। এর দু–এক দিন পরই অবসরের ঘোষণা দেন।

আরও পড়ুন

ভারতের হয়ে ১৩ টেস্ট ও ১২৫ ওয়ানডে খেলা কাইফ মনে করেন, বিসিসিআইয়ের সঙ্গে অবশ্যই এ বিষয়ে কথা হয়েছে কোহলির। কাইফের ভাষায়, ‘আমার মনে হয় সে এই (টেস্ট) সংস্করণে খেলে যেতে চেয়েছিল। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে নিশ্চয়ই তার ব্যক্তিগত পর্যায়ে কথা হয়েছে; নির্বাচকেরা হয়তো গত ৫–৬ বছরের ফর্ম দেখে তাকে বলেছেন, দলে আর জায়গা হবে না। আসলে কী ঘটেছে, সেটা আমরা কখনোই জানতে পারব না। পর্দার আড়ালে কী ঘটেছে, তা অনুমান করাও কঠিন।’

টেস্ট ক্রিকেটে আর দেখা যাবে না কোহলিকে
এএফপি

কাইফ ব্যাখ্যা করেন, ‘শেষ মুহূর্তে নেওয়া সিদ্ধান্ত এবং রঞ্জিতে খেলা—আমি অবশ্যই মনে করি সামনের টেস্টগুলোয় সে ফিরতে চেয়েছিল। গত কয়েক সপ্তাহে যা যা ঘটেছে, সেসবের পরিপ্রেক্ষিতে বিসিসিআই এবং নির্বাচকদের কাছ থেকে যে সমর্থন পাওয়ার কথা ভেবেছিল, সেটা হয়তো পায়নি।’

গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতে রান–খরায় ভোগেন কোহলি। পাঁচ টেস্টে ৯ ইনিংসে ২৩.৭৫ গড়ে ১৯০ রান করেন। সিরিজে যে আটবার আউট হয়েছেন, তার মধ্যে সাতবারই অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে কিপার অথবা স্লিপ ফিল্ডারকে ক্যাচ দিয়েছেন। তখন থেকেই তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা চলছিল।

কাইফ সেই সিরিজে কোহলির খেলার ধরন ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, ‘রান করতে তাকে একটু তাড়াহুড়া করতে দেখা গেছে। টেস্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্রিজে থাকতে হয়, যেটা সে অতীতে করেছে। কিন্তু বেরিয়ে যাওয়া বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ধারাবাহিক ক্যাচ দেওয়া বুঝিয়ে দিয়েছে, সে ধৈর্য হারিয়েছে। হয়তো ভেবেছে, ক্যারিয়ারের শেষ দিকে আছি, দৃঢ়তাপূর্ণ সেঞ্চুরি করে কী লাভ! অতীতে তার অন্য রকম ধৈর্য দেখা গেছে। বল ছেড়েছে। সময় নিয়েছে ক্রিজে, বোলারদের ক্লান্ত করে তারপর রান তুলেছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় (সর্বশেষ সফরে) তার কাছ থেকে এসব দেখিনি।’

কাইফ এরপর বলেন, ‘স্লিপে আউট হওয়াটা বুঝিয়ে দেয়, সে ক্রিজে (লম্বা) সময় কাটাতে প্রস্তুত ছিল না। এরপর বিসিসিআইয়ের বার্তা এবং লাল বলের ক্রিকেটে নিজের আত্মোপলব্ধি মিলিয়ে হয়তো এই (অবসর) সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’