অ্যান্ডারসন–টেন্ডুলকারের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন গাভাস্কারের
ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে পাঁচ টেস্টের সিরিজ শেষ হয় ২-২ সমতায়। এবারই এই সিরিজের নামকরণ করা হয় অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি। কিন্তু যাঁদের নামে এই সিরিজের নামকরণ, সেই জেমস অ্যান্ডারসন ও শচীন টেন্ডুলকারকে দেখা যায়নি সিরিজের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে। ভারতের সংবাদমাধ্যম স্পোর্টসস্টারে লেখা কলামে টেন্ডুলকার ও অ্যান্ডারসনের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার।
এর আগে এই দুই দলের ইংল্যান্ডে খেলা টেস্ট সিরিজকে বলা হতো পতৌদি ট্রফি। ইংল্যান্ড-ভারত দুই দলের হয়েই খেলা ইফতিখার আলী খান পতৌদি ও তাঁর ছেলে ভারতের সাবেক অধিনায়ক মনসুর আলী খান পতৌদির সম্মানে সিরিজের নামকরণ করা হয়েছিল। কিন্তু এবার নামের পরিবর্তন করা হয়।
সিরিজ শুরুর আগের দিন অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি উন্মোচন করেন টেন্ডুলকার ও অ্যান্ডারসনই। কিন্তু সিরিজ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কেন তাঁরা ছিলেন না, এ নিয়ে প্রশ্ন গাভাস্কারের।
কলামে ভারতের সাবেক অধিনায়ক গাভাস্কার লিখেছেন, ‘প্রথমবারের মতো এই সিরিজের নাম শচীন টেন্ডুলকার ও জিমি অ্যান্ডারসনের নামে রাখা হয়েছে। এমন সিরিজে স্বাভাবিকভাবেই অনেকে আশা করে দুই অধিনায়কের হাতে ট্রফিটি তারাই তুলে দেবে। বিশেষ করে সিরিজটি ড্র হওয়ার পর।’
অ্যান্ডারসন তো এখনো ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলছেন। গাভাস্কারের দাবি, টেন্ডুলকারও তখন ইংল্যান্ডে উপস্থিত ছিলেন। গাভাস্কার এই ঘটনাকে অস্ট্রেলিয়ায় বছরের শুরুতে ঘটে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যেখানে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি অস্ট্রেলিয়া জেতায় শুধু অ্যালান বোর্ডারকেই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল।
গাভাস্কার লিখেছেন, ‘আমার জানামতে, তখন দুজনে ইংল্যান্ডে ছিলেন। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁরা কি আমন্ত্রণই পাননি? নাকি এটা অস্ট্রেলিয়ায় ঘটে যাওয়া ঘটনার মতোই, যখন বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি শেষে শুধু অ্যালান বোর্ডারকে ডাকা হয়েছিল, কারণ অস্ট্রেলিয়া সিরিজ জিতেছিল? যেহেতু এই সিরিজ ড্র হয়েছে, তাই কাউকেই ডাকা হয়নি।’
সিরিজে বিজয়ী অধিনায়ককে দেওয়ার কথা ছিল পতৌদি মেডেল। অথচ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পতৌদি পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এরও সমালোচনা করেছেন গাভাস্কার। তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে ক্রীড়া প্রশাসকেরা মূলত মুনাফার দিকটা দেখেন, তাঁরা এতে ভালোও। কিন্তু তাঁরা যে খেলাধুলার দায়িত্বে আছেন, তার ইতিহাস বা ঐতিহ্যের ব্যাপারে তাঁদের অনেক সময় খুব একটা ধারণা থাকে না। তাই ছোটখাটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তাঁদের পরিকল্পনার মধ্যে থাকে না। পতৌদি মেডেল দেওয়ার সময় পতৌদি পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না, অথচ ওই মেডেলটি বিজয়ী দলের অধিনায়ককে দেওয়ার কথা ছিল।’
গাভাস্কার আরও লিখেছেন, ‘সিরিজ ড্র হওয়ায় স্পষ্ট হয়ে গেছে, পতৌদি পরিবারের নামে ট্রফি বন্ধ করার পর এভাবে তা পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কতটা অযৌক্তিক ছিল। সিরিজ ড্র হলে তো মেডেল দেওয়া যায় না, তাই না? তাই আমার মনে হয়, সিরিজে সেরা খেলোয়াড়কে মেডেল দেওয়া উচিত, বিজয়ী দলের অধিনায়ককে নয়। আর যদি অধিনায়ক নিজে সাদামাটা পারফরম্যান্স করেন এবং দলের ফলাফলে খুব একটা প্রভাব না ফেলেন, তখন কী হবে?’