১২৬ দিন পর টেস্ট অধিনায়কত্বে ফিরে নাজমুল বললেন, ‘ভালো সময় কেটেছে’
বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিল গত জুলাইয়ে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তখনো অধিনায়ক ছিলেন নাজমুল হোসেন। আগামীকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু হওয়া দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজেও নেতৃত্ব দেবেন তিনিই। কিন্তু মাঝে টেস্ট নেতৃত্ব নিয়ে ঘটে গেছে অনেক কিছু।
শ্রীলঙ্কা সিরিজ চলাকালে টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন নাজমুল। আইরিশদের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে তাঁকে আবার দায়িত্ব চালিয়ে যেতে রাজি করায় বিসিবি। মাঝে অধিনায়কত্ববিহীন ১২৬ দিনের অভিজ্ঞতাটাই আজ সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে শুনিয়েছেন নাজমুল, ‘কত দিন যেন মাঝে অধিনায়ক ছিলাম না, ওই সময়টা রিল্যাক্স করেছি, উপভোগ করেছি। ভালো সময় কেটেছে।’
কেন অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া আর কেনই–বা ফিরে আসা, নাজমুল দিয়েছেন সেই ব্যাখ্যাও, ‘ক্রিকেট বোর্ড যেভাবে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, সবার সঙ্গে সুন্দর আলাপচারিতা হয়েছে। একটা সময় গিয়ে মনে হয়েছে আমি নাজমুল হোসেন ব্যক্তির চেয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট অনেক বড়। আমার নিজের চিন্তার থেকে বড় চিন্তা হলো বাংলাদেশ দলের কী প্রয়োজন।’
নাজমুলকে রাজি করানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিসিবির সহসভাপতি ফারুক আহমেদকে। প্রায় ঘণ্টাখানেকের আলাপে তাঁকে পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েই আবার টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে ফেরানো হয়েছে। তিনিও জানিয়েছেন, বোর্ডে থাকা সাবেক ক্রিকেটারদের কথাকে সম্মান দিয়েই টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আবার ফিরেছেন।
এ নিয়ে নাজমুল বলেছেন, ‘সাবেক ক্রিকেটাররা এখন বোর্ডে আছেন, তাঁরা যখন একটা পরামর্শ দিচ্ছেন, সেটা দল ও আমার ভালোর জন্যই। সেই আলাপচারিতাকে আমি পুরোপুরি সম্মান দিয়েছি। এক কথায় যদি বলি, আমি ব্যক্তির চেয়ে বাংলাদেশ দলকে আগে রাখা উচিত (এজনই সিদ্ধান্ত বদলেছি)।’
ভবিষ্যতে কোনো সমস্যায় পড়লে বোর্ডের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়া নিয়েও আশাবাদী নাজমুল, ‘যে সমস্যাগুলো হতে পারে বা যে যে সমস্যা হচ্ছে ওই জিনিসগুলো কীভাবে সবাই মিলে সামলে নিতে পারি, এই বিষয় নিয়ে সবাই নিজের জায়গা থেকে ইতিবাচক ছিলাম। আশা করছি সামনের দিকে খুব ইতিবাচকভাবে দলটা এগোবে। আমি বিশ্বাস করি ক্রিকেট বোর্ড এই জায়গাতে আমাকে পুরোপুরি সমর্থন দেবে।’
শ্রীলঙ্কায় অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময় নাজমুল বলেছিলেন, বোর্ডের তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক তত্ত্বের সঙ্গে একমত নন তিনি। গত বছর তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করা নাজমুল এ বছরের শুরুতে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন নিজেই। পরে তাঁকে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব সরিয়ে দেয় বিসিবিই।
শ্রীলঙ্কায় অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময় নাজমুল বলেছিলেন, বোর্ডের তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক তত্ত্বের সঙ্গে একমত নন তিনি।
মূলত হঠাৎ করে কোনো আলোচনা ছাড়া তাঁকে ওয়ানডে থেকে সরিয়ে দেওয়ার জেরেই টেস্টে নেতৃত্ব ছেড়ে দেন নাজমুল। এই মুহূর্তে নাজমুল শুধু টেস্টেরই অধিনায়ক, টি-টোয়েন্টিতে লিটন দাস আর ওয়ানডেতে মেহেদী হাসান মিরাজ। তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক তত্ত্ব যেহেতু বহালই আছে, নাজমুল কেন ফিরে এলেন?
উত্তরে বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান টেনেছেন বিসিবির সঙ্গে আলাপকেই, ‘এটা আমার মনে হয়েছিল (তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক সমস্যা তৈরি করবে), মনে হওয়ার পেছনে যথেষ্ট কারণও ছিল। ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে খুব ভালো আলাপ হয়েছে। কী কী সমস্যা হতে পারে, এগুলো কীভাবে সমাধান করতে পারি অথবা সমস্যাগুলোই যেন না হয়। সেই বিষয়গুলো নিয়ে (এখন) আমরা খুবই পরিষ্কার। আমি একদমই আশাবাদী এ ধরনের সমস্যা হবে না।’
এ নিয়ে নাকি বাকি দুই অধিনায়কের সঙ্গে কথাও হয়েছে নাজমুলের, ‘বাকি যে দুই অধিনায়ক আছে, তাঁদের সঙ্গে বোঝাপড়া খুবই ভালো। আমরা একসঙ্গে বসেছিলাম, বসে আলাপ করেছি কীভাবে তিন সংস্করণকে দলকে এগিয়ে নিতে পারি, কোন কোন জায়গায় উন্নতির দরকার আছে। আমরা তিনজনই আশাবাদী দলের যা প্রয়োজন, সেটি ঠিকভাবে বুঝে এগিয়ে নিতে পারব। আমি যে কারণে বিশ্বাস করেছি, ক্রিকেট বোর্ড আমাকে ওই সাহায্যটুকু করবে।’