‘আমরা খেলব, বাঘের মতো খেলব’

বাংলাদেশ দলের ওপেনার রনি তালুকদারছবি: শামসুল হক

আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য রনি তালুকদার অনেক আগে থেকেই পরিচিত। কিন্তু তাঁর মতো ‘রোল প্লেয়ার’কে বুঝতে বাংলাদেশের ক্রিকেট একটু বেশিই সময় নিয়েছে। যে কারণে রনির মতো ‘পাওয়ার–প্লের হিটার’ সুযোগও পেয়েছেন দেরিতে। ২০১৫ সালে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বাদ পড়েছিলেন রনি।

এবার আবার যখন সুযোগ পেয়েছেন টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্বটা সাকিব আল হাসানের হাতে। আর দলটির প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এটা কিছুটা হলেও রনিকে তাঁর সহজাত খেলাটা খেলতে সাহায্য করছে। দুজনের যুগলবন্দীতে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ দল। রনি সেই দলে পেয়েছেন নিজের সহজাত খেলার স্বাধীনতা। আর সে কৃতিত্বটা অধিনায়ক ও প্রধান কোচকেই দিচ্ছেন রনি।

আজ চট্টগ্রামে জাতীয় দলের টিম হোটেলে সাংবাদিকদের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রনি একটু অতীতে ফিরে গেলেন, ‘সাকিব ভাই কিংবদন্তি ক্রিকেটার। সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আবাহনীতে একসঙ্গে খেলেছি প্রায় ১২ বছর আগে। তখন একই ইনটেন্ট ওনার ভেতরে ছিল। উনি সব সময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করেন আর ডমিনেট করার চেষ্টা করেন।’

প্রায় সাত বছর পর জাতীয় দলে ফিরে ছন্দে আছেন রনি তালুকদার
ছবি: শামসুল হক

টি-টোয়েন্টি দলেও তিনি সেটা ছড়িয়ে দিয়েছেন, ‘আমরা খেলব, বাঘের মতো খেলব। আমরা ডমিনেট করার চেষ্টা করব। আমাদের ভয়ডর থাকবে না, সব সময় ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই মাঠে যাব। হতে পারে কখনো আমরা ব্যর্থ হব, কখনো আবার সফল হব। যদি আমরা এটা অব্যাহত রাখতে পারি, এটা ধারণ করে চললে আমাদের সাফল্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এটা কোচ-অধিনায়কের চিন্তাভাবনাও একই।’

আরও পড়ুন

হাত খুলে খেলার স্বাধীনতা পেয়ে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলছেন রনি। এতটাই যে মেরে খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হলেও যেন কিছু আসে যায় না, ‘এখন (বাদ পড়ে যাওয়ার) ভয় কাজ করে না। কারণ, টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে ওই সাহসটা দিয়েছে।’

চট্টগ্রামে টিম হোটেলে রনি তালুকদার
ছবি: শামসুল হক

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমার এখানে হারানোর কিছু নেই। কারণ, আমি আট বছর আগেও যেমন খেলা খেলেছি...শুরু থেকেই আমার খেলার ধরনটাই এমন ছিল। কারণ, আমি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মাঠে নামি। আমার টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে যে বার্তা দিয়েছে, আমার খেলার ধরন অনুযায়ী আমাকে খেলতে বলেছে। ইংল্যান্ড সিরিজের আগেও আমাকে বলেছে, তুমি বিপিএলে যে কাজটা করেছ, এখানেও সেটাই করবে।’

আরও পড়ুন

রনির কাজটা সহজ করে দিচ্ছেন তাঁর ওপেনিং সঙ্গী লিটন দাস। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাওয়ার–প্লেতে কমপক্ষে ৭০০ বল খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত রান তুলেছেন লিটন (১৪২ স্ট্রাইক রেট)।

দুজনের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের রসায়ন জানতে চাইলে রনি বললেন, ‘আমি মনে করি, ও (লিটন) এখন বাংলাদেশ দলের মূল ব্যাটসম্যান। ওর সঙ্গে ব্যাটিং করতে পারা সত্যিই অনেক আনন্দের ব্যাপার। কারণ, আমরা চেষ্টা করি সব সময় স্ট্রাইক রোটেট করার। ওর সঙ্গে ব্যাটিং করলে আপনি বুঝতেই পারবেন না, কীভাবে রান হয়ে যাচ্ছে। ওর ব্যাটিং দেখলে মনে হয়, শুধু দেখেই যাই। ওর ব্যাটিং দেখে অনেক কিছু শেখার আছে।’

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই টি–টোয়েন্টিতেই রান পেয়েছেন রনি তালুকদার
ছবি: প্রথম আলো

দুজনের খেলার ধরন একই রকম হওয়ার সুবিধার কথাও জানালেন রনি, ‘এই জিনিসটা (সঙ্গী বদলে পারফরম্যান্সে প্রভাব) প্রতিটা ব্যাটসম্যানের একই উত্তর থাকবে। কারণ, আমিও চাই, আমি যখন আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করি, আমার সঙ্গীও যেন ওই ধরনের খেলা খেলতে পারে। দুজনের জন্যই সহজ হয়ে যায়। এটা লম্বা ইনিংস খেলার জন্য খুবই জরুরি। এ জন্য লিটনের সঙ্গে ব্যাটিং করতে পারার বিষয়ে যে সুবিধার কথা বললাম, বোঝাই যায় না, স্কোরবোর্ডে কখন রান হয়ে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন