বাংলাদেশের আরেকটি ব্যাটিং–ব্যর্থতার গল্প

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৩ রানের ইনিংস খেলেছেন নাজমুল হোসেনছবি: এএফপি

যাহাই বায়ান্ন, তাহাই তিপ্পান্ন—টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির ক্ষেত্রে এটাই যেন বাস্তবতা। লিটন দাস–পারভেজ হোসেন, লিটন দাস–মুনিম শাহরিয়ার, মোহাম্মদ নাঈম–এনামুল হক; গত কিছুদিনে বেশ কয়েকটি উদ্বোধনী জুটি দিয়ে পাওয়ার–প্লের ৬ ওভারের ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না।

এ কারণেই প্রথাগতের বাইরে গিয়ে তারা উদ্বোধনীতে নিয়ে আসে মেহেদী হাসান মিরাজ–সাব্বির রহমান জুটি। কিন্তু ৩ বছর পর টি–টোয়েন্টি দলে ফেরা সাব্বির ৪টি ম্যাচ খেলে করতে পেরেছেন মাত্র ৩১ রান। ফল, আবার বদল ওপেনিং জুটিতে। এবার মিরাজের সঙ্গে নাজমুল হোসেন। কিন্তু ওই যে বলা হলো—যাহাই বায়ান্ন, তাহাই তিপ্পান্ন। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি স্থায়ী হলো ১.৪ ওভার। ১২ রানের জুটি ভেঙেছে ৫ রান করে মিরাজের বিদায়ে।

বাংলাদেশ দলের স্কোরবোর্ডের অবস্থাও সেই তথৈবচ। পুরো ২০ ওভার খেলেও ৮ উইকেটে তুলতে পেরেছে মাত্র ১৩৭ রান। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেছেন নাজমুল।

এভাবেই বারবার উইকেট পাওয়ার আনন্দে মেতেছে নিউজিল্যান্ডের বোলাররা
ছবি: এএফপি

টি–টোয়েন্টি চার–ছক্কার খেলা। এখানে ধুম–ধারাক্কা মারমুখী ব্যাটিং করতে হয়। টি–টোয়েন্টির এ মন্ত্রটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা জানেন। আর জানেন বলেই শুরু থেকে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মারার চেষ্টাও করেছেন মিরাজ, লিটন, আফিফ হোসেনরা। কিন্তু সেই চেষ্টায় তারা শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেননি।

টিম সাউদির বলে বিগ হিট করতে গিয়ে ঠিকঠাক টাইমিং করতে পারেননি মিরাজ। মিডঅনে ক্যাচ তুলে ফিরেছেন ৫ বলে ৫ রান করে। এর আগের বলেই অবশ্য ‘জীবন’ পেয়েছিলেন তিনি। উইকেটে এসে কোনো রান করার আগেই ‘জীবন’ পেয়েছেন লিটনও। কিন্তু সেই জীবন খুব বেশি কাজে লাগাতে পারেননি। অফ স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েলকে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে সরাসরি ক্যাচ দিয়েছেন বোলারের হাতেই। ফেরার আগে ১৬ বল খেলে করেছেন ১৫ রান, মেরেছেন ২টি চার।

আরও পড়ুন

বিগ হিট করার চেষ্টা ছিল নাজমুলেরও। তবে সেটা একটু দেখেশুনেই, অন্য প্রান্তে দুটি উইকেট পড়ে গেছে। কিন্তু চার চারে তাঁর ২৯ বলে ৩৩ রানের ইনিংসটিও থেমেছে বড় শট খেলার চেষ্টা করতে গিয়ে। কমিয়ে আনা লেংথ, গুগলি। ইস সোধিকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে টাইমিং না হওয়ায় লং অফে থাকা মার্ক চাপম্যানকে পার করাতে পারেননি এ বাঁহাতি। নাজমুলের উইকেটটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সোধির ১০০তম। সাউদির পর দ্বিতীয় নিউজিল্যান্ড বোলার হিসেবে এ কীর্তি হলো সোধির। নাজমুলের পর সোধির দ্বিতীয় শিকার হয়ে দ্রুত ফিরে যান মোসাদ্দেক হোসেনও (২)।

বড় শট খেলার চেষ্টা করেও খুব একটা সফল হতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা
ছবি: এএফপি

এরপর ইয়াসির আলীকে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন আফিফ। কিন্তু সেই চেষ্টাও সফল হয়নি। দুজনের পঞ্চম উইকেট জুটি স্থায়ী হয় মাত্র ১৭ বল। ব্রেসওয়েলের বলে মাত্র ৭ রান করে ইয়াসির আউট হওয়ার আগে জুটিতে যোগ হয় ১২ রান। স্পিনারদের ওপর চঢ়াও হওয়ার চেষ্টার অংশ হিসেবে ব্রেসওয়েলকে তুলে মারতে গিয়েছিলেন ইয়াসির। অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে টেনে মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েছেন তিনি।

ইয়াসির আউট হলে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক উইকেটে আসার খানিক পরই অবশ্য ফিরে যান আফিফ। ট্রেন্ট বোল্টের অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়ার আগে ২৬ বলে ২৪ রান করেছেন তিনি। এরপর সাকিব ও তাসিক আহমেদের উইকেট দুটি হারিয়ে ১৩৭ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ।