৬ ফুট ২ ইঞ্চি আর ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি দুই পেসারের লড়াই আজ

ব্লেসিং মুজারাবানি একটু মন খারাপও করতে পারেন। সিলেট টেস্টের আগে আলোচনার কেন্দ্রে শুধুই যে নাহিদ রানা। দুই দলের দুই প্রতিনিধির সংবাদ সম্মেলনেই নাহিদ রানার প্রসঙ্গ উঠেছেই। কারণ? ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এই পেসারের গতি, বাউন্স আর সিলেটের বাউন্সি উইকেট। এটা যদি নাহিদের জন্য সত্যি হয়, তাহলে তা মুজারাবানির জন্যও তো সত্যি।

লম্বা তো আর তিনি নাহিদের চেয়ে কম নন! বরং আরও ৬ ইঞ্চি বেশি, গতিও কাছাকাছি। ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতির আশপাশেই বোলিং করতে পারেন। আর সাম্প্রতিক ফর্মও তো মুজারাবানির পক্ষেই কথা বলবে। বরং এখানে নাহিদ রানার চেয়েও এগিয়ে তিনি। নাহিদ ৫ উইকেট পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে।

কাল সিলেটে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে নাহিদ রানাকে নির্ভারই মনে হয়েছে
শামসুল হক

অন্যদিকে সর্বশেষ দুই টেস্টেই ৫ উইকেট আছে মুজারাবানির। উইকেট নিয়েছেন ৮টি (দুবার ৫ উইকেট) করে। গত ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫৮ রানে ৭ উইকেট তো টেস্টে এক ইনিংসে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার।

এমন একজন তো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চোখরাঙানি দিতেই পারেন। অনেকটা কাগিসো রাবাদার মতো অ্যাকশনে বোলিং করা এই পেসারের ফুল লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিগুলো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে পারে। বিশেষ করে ওপেনারদের। কারণ, নতুন বল তো মুজারাবানিই হাতে নেবেন। সর্বশেষ টেস্টে নতুন বলেই আইরিশ টপ অর্ডারকে ধসিয়ে দিয়েছেন এই পেসার।

নাহিদ রানা হয়তো বোলিংয়ে আসবেন বলটা একটু পুরোনো হলে। হয়তো তৃতীয় পেসার হিসেবে। যে সময়ে ভালো ব্যাটসম্যানদের আউট করতে অনেক সময় একটু বেশি গতির প্রয়োজন হয়, সেই সময়টাতে। আর এই সামর্থ্য ভালোমতোই আছে নাহিদ রানার।

আরও পড়ুন

তাঁর সঙ্গে লড়াইটা জমে যেতে পারে জিম্বাবুয়ের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শন উইলিয়ামসের। নাহিদ রানা প্রসঙ্গে যিনি বলেছেন, বোলিং মেশিনে এর চেয়ে বেশি গতির বল খেলে তাঁরা অভ্যস্ত। ক্রিকেটাররা স্বীকার করুন বা না করুন, খেলার মাঠে বাইরের কথার প্রভাব তো থাকেই। বোলিং মেশিনের সঙ্গে নিজের পার্থক্যটা উইলিয়ামসকে বুঝিয়ে দেওয়ার একটা তাড়না নাহিদ রানার মধ্যে থাকতেই পারে। আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের বার্তাও কিন্তু পরিষ্কার—যত পারো জোরে বোলিং করো। নাহিদ রানাকে দল থেকে কী বার্তা দেওয়া হয়, এই প্রশ্নে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘যখন ও কিছুই খেলেনি, একাডেমিতে অনুশীলন করত, তখন থেকেই চিনি। তখন থেকে এখন পর্যন্ত একটি বার্তাই দেওয়া হয়েছে, ও যেন ১৪০–এর বেশি গতিতে বল করে।’ উইলিয়ামসের বিপক্ষে গতিটা হয়তো ১৪০ ছাড়িয়েই যাবে!

লড়াইয়ের প্রশ্নে মুজারাবানি অবশ্য একজনকে মিস করতে পারেন। না, কোনো ব্যাটসম্যানকে নয়, তাসকিন আহমেদকে! ২০২১ সালে হারারে টেস্টে একে অন্যের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন এই দুজন, যেটি গড়িয়েছিল ঠোকাঠুকি পর্যন্তও। সেই  ঘটনায় দুজনই পেয়েছিলেন শাস্তি। চোটের কারণে এই সিরিজে নেই তাসকিন।
যাঁদের লড়াই এই টেস্টের অন্যতম বড় আকর্ষণ, সেই নাহিদ রানা ও মুজারাবানি অবশ্য কালকের দিনটা খুব আরামেই কাটিয়েছেন। অনুশীলনে খুব একটা ঘাম ঝরাতে দেখা যায়নি কাউকেই। দুজনই হয়তো ব্যাটসম্যানদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলার মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছেন!

আরও পড়ুন