ফুল টস দিয়েছিলেন নাসিম শাহ। এমন নির্বিষ বলে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ব্যাট থেকে বিশাল এক ছক্কা প্রত্যাশিত ছিল। মাত্রই ফিফটি পেরোনো হাসারাঙ্গা শ্রীলঙ্কাকে জয়ের দিকেই নিয়ে যাচ্ছিলেন।
কিন্তু এমন এক বল পেয়েও ব্যাটের মাঝ বরাবর লাগাতে পারলেন না। বল চলে গেল লং অনে বাবর আজমের হাতে। বাবরের মুখে তখন স্বস্তির হাসি, সঙ্গে বাকি সতীর্থদেরও।
ছক্কাটা হলে হয়তো ম্যাচটাই হাতছাড়া হয়ে যেত পাকিস্তানের। তবে স্নায়ুচাপ ধরে রেখে, হাসারাঙ্গার ‘চোখ রাঙানি’ থামিয়ে শেষমেশ ওই ৬ রানেই জিতল শাহিন আফ্রিদির দল।
রাওয়ালপিন্ডিতে আজ প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ২৯৯ রান করেছিল পাকিস্তান। লক্ষ্য তাড়ায় শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেট হারিয়ে করতে পারে ২৯৩।
৬ রানের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১–০ তে এগিয়ে গেল পাকিস্তান। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ রাওয়ালপিন্ডিতেই আগামী বৃহস্পতিবার।
ব্যাটিংয়ে নেমে ১০০–এর আগেই প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে (ফখর, আইয়ুব, বাবর, রিজওয়ান) হারিয়ে কিছুটা বিপদে পড়েছিল পাকিস্তান। চার উইকেটের তিনটিই হাসারাঙ্গার শিকার।
এই পরিস্থিতি থেকে দলকে উদ্ধার করেন টি–টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও ব্যাটিং অলরাউন্ডার হুসেইন তালাত। পঞ্চম উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ১২১ বলে ১৩৮ রানের জুটি।
ব্যক্তিগত ৬২ রানে থাকতে তালাত মহীশ তিকশানার বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়লে ভাঙে এই জুটি। তবে পাকিস্তান ততক্ষণে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায়।
এরপর মোহাম্মদ নেওয়াজকে নিয়ে সালমান ৩৯ বলে ৬৬ রানের অবিচ্ছিন্ন গড়লে শ্রীলঙ্কাকে ঠিকঠিক ৩০০ রানের লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান। আগা পান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
প্রথম ৩০ ওভারে ৪ উইকেটে ১১৯ রান তোলা পাকিস্তান সালমান, তালাত আর নেওয়াজের দারুণ ব্যাটিংয়ে শেষ ২০ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে যোগ করে আরও ১৮০ রান।
লক্ষ্য তাড়ায় শ্রীলঙ্কাকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন পাতুম নিশাঙ্কা ও কামিল মিশারা। উদ্বোধনী জুটিতে দুজন ৭০ বলে তোলেন ৮৫ রান।
তবে এ দিন বল হাতে পাকিস্তানের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন রাওয়ালপিন্ডির ছেলে হারিস রউফ। মিশারাকে আউট করার পরের বলেই তিনে নামা কুশল মেন্ডিসকেও ফেরান রউফ। এরপর নিশাঙ্কা ও সাদিরা সামাবিক্রমাও তাঁর শিকারে পরিণত হন।
শ্রীলঙ্কার বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানের শুরুটা ভালো হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কা (৩২) ও অলরাউন্ডার জানিত লিয়ানাগেও (২৮) উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন।
এক পর্যায়ে ২১০ রানে ৭ উইকেট হারালে মনে হচ্ছিল শ্রীলঙ্কার হার সময়ের ব্যাপার। কিন্তু এরপর দুষ্মন্ত চামিরা ও তিকশানাকে নিয়ে দারুণ লড়াই করে জয়ের সম্ভাবনা জাগান হাসারাঙ্গা। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর ৫২ বলে ৫৯ রানের ইনিংসটা বৃথা গেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৯৯/৫ (সালমান ১০৫*, তালাত ৬২, নেওয়াজ ৩৬*, ফখর ৩২; হাসারাঙ্গা ৩/৫৪, আসিতা ১/৪২, তিকশানা ১/৬৪)।
শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৯৩/৯ (হাসারাঙ্গা ৫৯, সামারাবিক্রমা ৩৯, মিশারা ৩৮, আসালাঙ্কা ৩২; রউফ ৪/৬১, আশরাফ ২/৪৯, নাসিম ২/৫৫)।
ফল: পাকিস্তান ৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সালমান আলী আগা।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ১–০ তে এগিয়ে।