শেষ তিন ব্যাটসম্যানই দলের সর্বোচ্চ স্কোরার—যে কীর্তি আবারও গড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
দুটি ঘটনাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে। একটি ছাপিয়ে গেছে আরেকটিকে।
শেষ থেকে শুরু করা যাক। মুলতানে আজ দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫৪ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখান থেকে এক শ রান হওয়াই খুব কঠিন, সেখান থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ পর্যন্ত অল আউট হয়েছে ১৬৩ রানে। কারণ, শেষের তিন ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তা। নয়ে নামা গুড়াকেশ মোতি করেন ৮৭ বলে ৫৫, দশে নামা কেমার রোচ ৪৫ বলে ২৫ এবং এগারোয় নামা জোমেল ওয়ারিক্যান ৪০ বলে ৩৬ রান করেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ১১ ব্যাটসম্যানের মধ্যে এই তিজনের ইনিংসই সর্বোচ্চ। টেস্টে কোনো দলের ইনিংসে সর্বোচ্চ তিনটি স্কোরই শেষের তিন ব্যাটসম্যানের—এটি একটি রেকর্ড। তবে প্রথম নয়, দ্বিতীয়। আগের রেকর্ডটিও ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই, আর সেটি পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজেই। মুলতানে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দলের সর্বোচ্চ তিনটি ইনিংস ছিল ৯, ১০ ও ১১ নম্বরে নামা মোতি, ওয়ারিক্যান ও জেডন সিলসের।
সেই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস থেমেছিল ১৩৭ রানে। নয়ে নামা মোতি করেছিলেন ১৯, দশে নেমে ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়ারিক্যান, এগারোয় নেমে ২২ রান করেন জেডেন সিলস। টেস্ট ইতিহাসে কোনো দলের ইনিংসে সর্বোচ্চ তিনটি স্কোর শেষের তিন ব্যাটসম্যানের হওয়ার প্রথম ঘটনা ছিল সেটি। আজ একই মাঠে শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে ঘটল পুনরাবৃত্তি।
তবে তিন ব্যাটসম্যানের মধ্যে সিলসের জায়গায় এসেছেন রোচ। পার্থক্য অবশ্য আরও একটি জায়গায় আছে। সিলসকে নিয়ে মোতি, ওয়ারিক্যানরা তুলেছিলেন ৭২ রান। এবার রোচকে নিয়ে তিন ব্যাটসম্যান করেছেন মোট ১১৬ রান। নবম উইকেটে রোচ–মোতি জুটিতে যোগ হয়েছে ৪১ রান, দশম উইকেটে মোতি–ওয়ারিক্যানের জুটিতে ৬৮।
পাকিস্তান–ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার এবারের টেস্ট সিরিজের আগে এই সংস্করণে দুবার এমন ঘটনা দেখা গেছে, যেখানে কোনো দলের ইনিংসে সর্বোচ্চ দুটি স্কোর ছিল শেষের দুই ব্যাটসম্যানের। মানে ১০ ও ১১ নম্বর ব্যাটসম্যানের। প্রথম ঘটনা সিডনিতে ১৮৮৫ সালে। যেখানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন দশে নামা টম গ্যারেট (৫১)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল এগারোয় নামা এডউইন ইভানসের (৩৩)। ১৩৭ বছর পর ২০২২ সালে গ্রেনাডায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে একই ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। দশে নামা জ্যাক লিচ অপরাজিত ছিলেন দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর ৪১ রানে। এগারোয় নামা সাকিব মাহমুদ করেন ৪৯।
লিচ–সাকিবদের সেই কীর্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মোতি, ওয়ারিক্যান ও সিলস ছাপিয়ে যান মুলতানে প্রথম টেস্টে। এরপর সেটাকেও রানসংখ্যায় মোতি, রোচ ও ওয়ারিকান ছাপিয়ে গেলেন মুলতানেই আরেকটি টেস্টে। মজার বিষয়, শেষের তিন ব্যাটসম্যানের দলের ইনিংসে সর্বোচ্চ কিংবা শেষে দুই ব্যাটসম্যানের দলের ইনিংসে সর্বোচ্চ—এসবগুলো নজিরই কিন্তু দেখা গেছে দলগুলোর প্রথম ইনিংসেই!