টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে কেমন করে বাংলাদেশ

ডালাসে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে নাজমুল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমানবিসিবি

বিশ্বকাপের ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হার অনেক কিছুই এলোমেলো করে দিয়েছে বাংলাদেশ দলের। সময়টা আগের মতো আর স্বস্তিকর নেই। কিন্তু যেকোনো কিছুতেই তো শুরু একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ভালো একটা শুরু ঠিক করে দিতে পারে একজন মানুষের জীবনের গতিপথ। তেমনই কোনো টুর্নামেন্টে একটা জয়ে ভালো একটা শুরু যেকোনো দলকে নিয়ে যেতে পারে বহুদূর।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টি তেমন নয়। এর আগে আটটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ। শুরুটা অম্লমধুর অভিজ্ঞতার। আট বিশ্বকাপের চারটিই জয় দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ, চারটিতে শুরু করেছে হার দিয়ে। কিন্তু শুরুটা জয় বা হার, যেটা দিয়েই হোক, এখন পর্যন্ত কোনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই দুটির বেশি ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ।

এবার ‘ডি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে শ্রীলঙ্কা হেরে যাওয়ার পর অবশ্য অনেকেই অন্য হিসাব করছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবার শুরুর ম্যাচটি জিততে পারলে বাংলাদেশ সুপার এইটেও যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এ ক্ষেত্রে আশা দেখাচ্ছে ২০ দলের বিশ্বকাপের ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অন্য প্রতিপক্ষদের নামগুলো। শ্রীলঙ্কা ছাড়া এই গ্রুপে বাংলাদেশ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।

আরও পড়ুন
ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে নিজেদের তৈরি করছে বাংলাদেশ দল
বিসিবি

সব মিলিয়ে ভালো শুরুর সঙ্গে নাজমুল-সাকিবদের কাছ থেকে সুপার এইটে ওঠাও আশা করছেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। তা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটির আগে দেখে আসা যেতে পেরে, এর আগে খেলা আটটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুগুলো কেমন ছিল এবং সেই শুরুর পর কী করতে পেরেছে তারা।

২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলেছিল ‘এ’ গ্রুপে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ১৬৪ রান বাংলাদেশ টপকে যায় ২ ওভার হাতে রেখে। ওই একটি ম্যাচ জিতে সুপার এইটে উঠলেও আর কোনো ম্যাচ সেবার জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে পরের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আবারও পড়েছিল ‘এ’ গ্রুপে। প্রথম ম্যাচ দূরে থাক, সেবার ৩ ম্যাচ খেলে কোনো জয়ই পায়নি বাংলাদেশ। ২০১০ ও ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই অবস্থা হয়েছে।

২০১৪ সালে বাংলাদেশে বসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পঞ্চম আসর। এবার গ্রুপপর্বে ২ ম্যাচ জিতে গ্রুপসেরা হয়ে সুপার টেনে ওঠে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়েছিল তারা ৯ উইকেটে। আফগানিস্তান ২০ ওভারে করেছিল ৭২ রান, ১২ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। গ্রুপপর্বে এরপর নেপালকে হারালেও হংকংয়ের কাছে হেরেছিল তারা। সুপার টেনে অবশ্য কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন
ডালাসে অনুশীলনে তাসকিন আহমেদকে কিছু একটা বোঝাচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন
বিসিবি

২০১৬ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গল্পটা ছিল ২০১৪-এর মতো। শুরুর ম্যাচটিসহ দুটি ম্যাচ জিতে গ্রুপসেরা হয়ে সুপার টেনে ওঠে বাংলাদেশ। তবে সেখানে কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি। সেবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হারিয়েছিল নেদারল্যান্ডসকে। ২০ ওভারে ১৫৭ রান করেছিল বাংলাদেশ। ২০ ওভার ব্যাট করে ওই ৭ উইকেটই হারিয়ে ডাচরা তুলতে পেরেছিল ১৪৫ রান।

পরের বিশ্বকাপে ২০২১ সালেও বাংলাদেশ গ্রুপপর্বে দুটি ম্যাচ জিতেছে। তবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছিল ৬ রানে। স্কটল্যান্ড আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে তুলেছিল ১৪০ রান। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে বাংলাদেশ তুলতে পারে ১৩৪ রান। সুপার টুয়েলভে কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি তারা। ২০২২ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলেছে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচটি জিতলেও উঠতে পারেনি সেমিফাইনালে। কারণ, নেদারল্যান্ডস ছাড়া মাত্র জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই জিততে পেরেছিল বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন