রাজনীতি সাকিব-মাশরাফিদের কাজ নয়, বললেন জয়াসুরিয়া

শ্রীলঙ্কা দলের কোচ ও সাবেক ক্রিকেটার সনাৎ জয়াসুরিয়া। আজ কলম্বোর একটি হোটেলে।প্রথম আলো
আজ প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেন শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেটার সনাৎ জয়াসুরিয়া, যিনি এক সময় রাজনীতিতে যোগ দিয়ে উপমন্ত্রীও হয়েছিলেন।

সাকিব আল হাসান দেশান্তরি। মাশরাফি বিন মুর্তজা আত্মগোপনে। গতকাল গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান।

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার এই হলো পরিণতি। দেশের ক্রিকেটের জন্য তাঁদের যতই অবদান থাকুক, রাজনৈতিক পরিচয় তাঁদেরকে আর তাঁদের অবস্থানে রাখেনি। রাজনীতিতে যোগ দিয়ে সমালোচিত হয়েছেন প্রত্যেকে। সরকার বদলের পর এখন তো তাঁরা দেশেই ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন।

শুধু বাংলাদেশে নয়; ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার উদাহরণ উপমহাদেশে অনেকই আছে। শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান কোচ সনাৎ জয়াসুরিয়াও আছেন সেই দলে। ২০১০ সালে ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্সের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। নির্বাচনে জিতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মাতারার সংসদ সদস্য ছিলেন, হয়েছিলেন উপমন্ত্রীও।

আজ দুপুরে কলম্বোর সিনামন গ্র্যান্ড হোটেলে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে জয়াসুরিয়ার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গও। মাতারার সাবেক সংসদ সদস্য ১০ বছরের বেশি সময় হলো রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। তবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর মধ্যে অনুশোচনা রয়ে গেছে এখনো। জয়াসুরিয়া বলেছেন, রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত।

শ্রীলঙ্কা দলের ক্রিকেটার, অধিনায়ক, নির্বাচক, কোচ—সবই হয়েছেন জয়াসুরিয়া। ক্রিকেটের বাইরে সংসদ সদস্য হওয়ার কথা তো বলাই হলো। সাক্ষাৎকারে জয়াসুরিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এসবের মধ্যে তাঁর দৃষ্টিতে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে কোন দায়িত্বটা।

কোচের কাজটা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে সনাৎ জয়াসুরিয়ার।
আইসিসি

জবাব দিতে গিয়ে জয়াসুরিয়া শুরুতেই বলেছেন, ‘সংসদ সদস্য হয়ে অবশ্যই আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে কাজটা করেছি। আমি জীবনে আর এটা করব না।’
পরে বলেছেন, কোচের ভূমিকাটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে, ‘ক্রিকেটের কথা যদি বলেন, খেলোয়াড় এবং কোচ দুই ভূমিকাতেই অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। তবে আমি দীর্ঘ সময় ধরে ক্রিকেট খেললেও আগে কখনো কোচ হইনি। কাজেই এটাই বেশি চ্যালেঞ্জিং।’

বাংলাদেশে ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে জড়ানোর পরিণতির কথা জানেন জয়াসুরিয়াও। সে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাবেক লঙ্কান অধিনায়কের মন্তব্য, ‘এটা (রাজনীতি) আসলে ক্রিকেটারদের কাজ নয়।’ পরে আবারও রাজনীতিতে জড়ানো নিয়ে নিজের অনুশোচনা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘কে কী বলবে জানি না। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, রাজনীতিতে যোগ দিয়ে আমি ভুল করেছিলাম। খেলা সবাই ভালোবাসে। পুরো জাতি আপনাকে ভালোবাসবে। রাজনীতি করলে সেটা ভাগ হয়ে যাবে। কাজেই ক্রিকেটারদের ক্রিকেটই উপভোগ করা উচিত, সেটা যেভাবেই হোক।’

সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মুর্তজা দুজনই খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারে রাজনীতিতে জড়িয়েছেন।
প্রথম আলো ফাইল ছবি

একসময়ের সংসদ সদস্য জয়াসুরিয়া এখন আবার পুরোই ডুবে গেছেন ক্রিকেটে। শ্রীলঙ্কা দল নিয়েই এখন তাঁর সব ধ্যানজ্ঞান। রাজনীতি নিয়ে কথা বলাটাও এখন তাঁর অপছন্দ, ‘রাজনীতিতে জড়িয়ে আমি জীবনের সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম। ১০ বছরের বেশি হলো তা থেকে সরে এসেছি। এখন আমি এমনকি রাজনীতি নিয়ে কথা বলতেও পছন্দ করি না।’

সাক্ষাৎকারে ক্রিকেটের বিবর্তন, শ্রীলঙ্কা দল নিয়ে তাঁর ভাবনা, নিজের কোচিং দর্শন এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়েও কথা বলেছেন সনাৎ জয়াসুরিয়া।

** সনাৎ জয়াসুরিয়ার পুরো সাক্ষাৎকার পড়ুন আগামীকাল অনলাইন সংস্করণে।