বাংলাদেশের হারের দায় নিয়ে হৃদয় বললেন, ‘ম্যাচ হেরেছি আমার আউটে’

ছন্দে আছেন তাওহিদ হৃদয়বিসিবি

সেরা ছন্দে আছেন তাওহিদ হৃদয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ২০ বলে ৪০ রানের পর কাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছেন ৩৪ বলে ৩৭ রানের ইনিংস। ইনিংসের ১৮ তম ওভারে তিনি যখন আউট হন, তখন বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৭ বলে মাত্র ২০ রান। সেই রানও নিতে পারেননি বাংলাদেশের বাকি ব্যাটসম্যানরা, দল হেরেছে ৪ রানে। এরপরও হৃদয় হারের দায়টা সতীর্থদের কাঁধে দিচ্ছেন না, নিয়েছেন নিজের কাঁধে। এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের মতে, খেলাটা তাঁরই শেষ করা উচিত ছিল।

ম্যাচ–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘এমন সংগ্রহ তাড়া করতে পারব বলে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আমারই ম্যাচটি শেষ করা উচিত ছিল। এই কন্ডিশন নতুন ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে আমারই খেলা শেষ করা উচিত ছিল।আউটফিল্ডও ধীরগতির। ইনটেন্ট দেখানোটাই তাই ভালো। এই মাঠ ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং। প্রত্যেক ব্যাটসম্যান এখানে ধুঁকেছে। ম্যাচ হেরেছি আমার আউটে। ওখানে ম্যাচটা যদি শেষ করতাম, তাহলে ম্যাচটা হারতাম না। তারা (অন্য ব্যাটসম্যান) তো অনেক আগেই আউট হয়ে গেছে, আমি শেষ পর্যন্ত ছিলাম। আজকের ম্যাচটা আমিই জেতাতে পারতাম, আউট হয়ে যাওয়ায় পারিনি।’

নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রান করাটা অনেক কঠিন। সেটা এতটাই কঠিন যে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দুই দাপুটে ব্যাটসম্যান ডেভিড মিলার ও হাইনরিখ ক্লাসেনের ব্যাটও কথা বলে না। বাংলাদেশের বিপক্ষে কাল ওয়ানডে মেজাজে খেলে মিলার করেছেন ৩৮ বলে ২৯, হাইনরিখ ক্লাসেন ৪৪ বলে করেছেন ৪৬ রান। সেই তুলনায় হৃদয় আরও বেশি সাবলীল ছিলেন।

নিজের ব্যাটিং কৌশল নিয়ে হৃদয় বলেছেন, ‘আমার লক্ষ্য থাকে, ইনটেন্ট নিয়ে ব্যাটিং করব। পরিস্থিতি যেমন থাক, এটা রানের খেলা, পরিকল্পনাই থাকে কীভাবে রান করব। কিছু সময় পরিস্থিতি কঠিন থাকে, চেষ্টা করি সেটা বুঝে বাস্তবায়ন করতে। এই উইকেটে অনেক বড় বড় ব্যাটসম্যানও রান করতে পারেনি। এটা ভিন্ন ধরনের উইকেট। আমাদের শুরু, মিডল ওভারের ব্যাটিং—সবই ভালো ছিল, শুধু শেষটা করতে পারিনি। আমার কাছে মনে হয়েছে ওখানে আমি থাকলে, কিংবা ম্যাচটা আমি শেষ করতে পারলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত।’

আরও পড়ুন

দল হারলেও বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন তানজিম হাসান। ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সাইফউদ্দিনকে বাদ তানজিমকে বিশ্বকাপে দলে নেওয়া হয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত তখন বেশ আলোচনাও হয়েছে। হৃদয় মনে করেন এই সিদ্ধান্ত কাজে দিয়েছে, ‘আমরা সবাই জানি (তানজিম) সাকিবের সামর্থ্য আছে। আমাদের ওর ওপর বিশ্বাস আছে। গত কয়েক মাস, কয়েক ম্যাচে ও দারুণ বোলিং করেছে। ওর চিন্তাভাবনা পরিষ্কার। আজও খুবই ভালো বোলিং করেছে। ও–ই ম্যাচটা পরিবর্তন করে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আমাদের কাজে দিয়েছে।’

তানজিম নিয়েছেন ১৮ রানে ৩ উইকেট
বিসিবি

কাল আনরিখ নর্কিয়ার বলে পুল খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ও সাকিব আল হাসান। ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় যে দুটি শটই এড়িয়ে যাওয়া যেত বলে মনে করেন অনেকে। তবে নাজমুল-সাকিবের মনোভাবে কোনো সমস্যা দেখছেন না হৃদয়, ‘আমার কাছে মনে হয়, খুব ভালো শট ছিল। ও বেশির ভাগ বলই ব্যাক অফ লেংথে করে, ওর বিপক্ষে রান করতে গেলে গতিটা কাজে লাগাতেই হবে। এটা আজকে ভালো হয়নি, পরবর্তীতে এটাই ছক্কা হবে।’

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ সুপার এইটে যাওয়ার মতো দল কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আমরা শুধু সুপার এইটে নয়, সেমিফাইনালে যাওয়ার মতো দল। এটা আমি বিশ্বাস করি। হ্যাঁ, আমাদের ব্যাটসম্যানরা রান করছে না। সেটা প্রতিটা ম্যাচই যদি দেখেন, সবাই রান করছে না। এক, দুজন, তিনজনই খেলে। আমার কাছে মনে হয়, যে দুই–তিনজন যেদিন খেলবে, সেই দিনই যেন খেলাটা শেষ করে।’

এরপর হৃদয় যোগ করেন, ‘আমার কাছে কখনো মনে হয়নি ম্যাচটা হারব। এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। যে ভুলগুলো আছে, সেটা সামনের ম্যাচে কমানোর চেষ্টা করব।’