শেষ ওভারের আগে নিজেকে ‘অপরাধী’ ভাবছিলেন আর্শদীপ

বেন ম্যাকডারমটের উইকেট নেওয়ার পর সতীর্থদের সঙ্গে আর্শদীপ সিংএএফপি

দলের সম্বল ১৬০ রান, সেখানে প্রথম ৩ ওভারে একাই দিয়েছিলেন ৩৭ রান। আর্শদীপ সিং ভেবেছিলেন, ম্যাচে ‘অপরাধী’ হতে যাচ্ছেন তিনিই। কিন্তু বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ম্যাচের শেষ ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর ভারতের নায়কই বনে গেছেন ২৪ বছর বয়সী এই পেসার।

শেষ ম্যাচে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৬ রানে হারিয়ে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে ভারত। ১৬১ রানের লক্ষ্যে ১৭ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১২৯ রান ছিল অস্ট্রেলিয়ার। আবেশ খানের ১৮তম ওভারে তিন চার মেরে সমীকরণটা সহজ করে আনেন ম্যাথু ওয়েড, তবে ১৯তম ওভারে মুকেশ কুমার ৭ রানের বেশি দেননি। এর ফলে শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ১০ রান।

আরও পড়ুন

শেষ ওভার করতে আসেন তখন পর্যন্ত খরুচে থাকা আর্শদীপ। ওয়েডের বিপক্ষে প্রথম ২ বল দেন ডট, যদিও এর একটি ওয়াইড হওয়ার কথা থাকলেও আম্পায়ার তা দেননি। তৃতীয় বলে লং অনে ক্যাচ তোলেন ওয়েড। একটু আগেও ব্যাকফুটে থাকা ভারত এগিয়ে যায় তাতেই। শেষ ৩ বলে ৩টি সিঙ্গেল দেন আর্শদীপ, ভারত পায় দারুণ এক জয়।

প্রথম ৩ ওভারে ৩৭ রান দিয়েছিলেন আর্শদীপ
এএফপি

কিন্তু শেষ ওভার করতে আসার আগে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট ছিলেন না আর্শদীপ, ‘ম্যাচের অনেকটা সময়, প্রায় প্রথম ১৯ ওভারে আমি ভাবছিলাম যে বেশি রান দিয়ে ফেলেছি এবং আমিই ম্যাচের অপরাধী হতে যাচ্ছি।’

সত্যি বলতে কি, আমার মনের মধ্যে কিছুই চলছিল না। সূর্য (অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব) ভাই আমাকে বলেছিলেন, যা ঘটার তা ঘটবেই।
আর্শদীপ সিং, ভারতীয় পেসার

সেটি হয়নি। নিজের ওপর অবশ্য আর্শদীপ আস্থা রেখেছিলেন ঠিকই, ‘তবে ঈশ্বর আমাকে আরেকটি সুযোগ দিয়েছেন, নিজের ওপর বিশ্বাস রেখেছি আমি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমি এটি ডিফেন্ড করতে পেরেছি। (কোচিং) স্টাফের পাশাপাশি যাঁরা আমার ওপর ভরসা রেখেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।’

শেষ ওভারে ব্লকহোল তাক করে বোলিং করে সফল হয়েছেন তিনি। সে ওভারে নিজের মনোভাব প্রসঙ্গে ৪০তম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা পেসার বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, আমার মনের মধ্যে কিছুই চলছিল না। সূর্য (অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব) ভাই আমাকে বলেছিলেন, যা ঘটার তা ঘটবেই।’

আরও পড়ুন

এ মাঠে ১৬০ বা এর কম রান করেও কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতার সর্বশেষ ঘটনা ছিল ২০১৭ সালে। এরপরও আর্শদীপ কৃতিত্ব দিয়েছেন ব্যাটসম্যানদের, ‘তারা আমাদের সত্যিই একটা ভালো সংগ্রহ এনে দিয়েছে কঠিন এক উইকেটে। আমাদের অতিরিক্ত ১৫ থেকে ২০ রানের একটা বর্ম ছিল।’

এমনিতে বেশ বড় স্কোরই হয় চিন্নাস্বামীতে। তবে বৃষ্টির কারণে উইকেটের চরিত্র বদলে গিয়েছিল গতকালের ম্যাচে, ১৬০ রানই সেখানে হয়ে উঠেছে জয়ের মতো। তাতে বোলিংটাও হতে হতো দারুণ। ভারত অবশ্য পেয়েছে ভাগ্যের সহায়তাও। বেন ম্যাকডারমট ও ম্যাথু শর্ট—দুজনই আউট হয়েছেন ফুলটস বলে।

আর্শদীপ দলের বোলিং পারফরম্যান্স নিয়ে বলেছেন, ‘ভারতীয় দলে বোলিং বিভাগের যে মান আমরা ঠিক করেছি, এটি এর ধারেকাছেও ছিল না। তবে অনেক শিক্ষা পেয়েছি। ভবিষ্যতে ভুল শুধরে আরও ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়ানো নিশ্চিত করব আমি।’