তিন সেঞ্চুরির দিনে শেষবেলায় ইংল্যান্ডের আশা

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষবেলায় উইকেটের আনন্দ ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দেরছবি: এএফপি

বলে লালা বা থুতু ব্যবহার নিষিদ্ধ। শীতের দিন বলে ঘামও হচ্ছে না তেমন। ইংল্যান্ড দলে বলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার দায়িত্বে থাকা জো রুট বেছে নিলেন অন্য রকম এক কৌশল। জ্যাক লিচের ক্যাপটা খুলে নিয়ে মাথায় বলটা ঘষলেন, এরপর শুরু করলেন নিজের হাতে ঘষা। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ইংল্যান্ড বোলারদের সংগ্রামের প্রতীকী দৃশ্য ধরে নিতে পারেন সেটিকে। অবশ্য সাফল্যও পেয়েছেন তাঁরা। ইমাম-উল-হক, আবদুল্লাহ শফিকের পর বাবর আজম সেঞ্চুরি পেলেও তৃতীয় দিন শেষে পাকিস্তান পিছিয়ে ১৫৮ রানে, হারিয়ে ফেলেছে ৩ উইকেট।

এ টেস্টে ফল আনতে অবশ্য এখনো লম্বা পথই পাড়ি দিতে হবে ইংল্যান্ডকে। আজ প্রথম সেশনে ৩ উইকেট পেলেও দ্বিতীয় সেশনটি উইকেটশূন্যই কাটাতে হয় তাদের। শেষ সেশনে গিয়ে অবশ্য ৪ উইকেটের দেখা মিলেছে বেন স্টোকসের দলের। চমক হয়ে এসেছে উইল জ্যাকসের বোলিং-ও। এর আগে ৪১ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ২১টি উইকেট পাওয়া জ্যাকসই আজ নিয়েছেন ৩ উইকেট।

সেঞ্চুরির পর বাবর আজমের উদ্‌যাপন
ছবি: এএফপি

বিনা উইকেটে ১৮১ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিলেন শফিক ও ইমাম। দিনের ১৬তম ওভারে ইংল্যান্ডকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন অফ স্পিনার জ্যাকসই। তাঁকে কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপার ওলি পোপের হাতে ধরা পড়েন শফিক। পাকিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এ ইনিংসে যিনি পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারে তৃতীয় সেঞ্চুরি করা শফিককে ফিরতে হয় ১১৪ রান করে। শফিকের পর তাঁর ওপেনিং সঙ্গী, আরেক সেঞ্চুরিয়ান ইমাম-উল-হকও বেশিক্ষণ টেকেননি। ১২১ রান করা ইমাম ফেরেন জ্যাক লিচকে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দিয়ে। শফিকের মতো ইমামেরও ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি ছিল এটি। দুজনই গতকাল দিন শেষ করেছিলেন সেঞ্চুরির খুব কাছে থেকেই।  

ইংল্যান্ডকে তৃতীয় উইকেটও এনে দেন লিচ। তাঁর বলে এলবিডব্লু হন আজহার আলী। সে ওভারেই দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েছিল ইংল্যান্ড। আজহার রিভিউ নিয়েছিলেন, তবে এহসান রাজার দেওয়া মাঠের সিদ্ধান্ত তাতে বদলায়নি। পাকিস্তান মধ্যাহ্নবিরতিতে যায় ৩ উইকেটে ২৯৮ রান নিয়ে।  

আবদুল্লাহ শফিক সেঞ্চুরি পাওয়ার পর তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন ইমাম–উল–হক (বাঁয়ে)
ছবি: এএফপি

পরের সেশনে ইংল্যান্ডকে হতাশা করে যান পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর ও সৌদ শাকিল। ৬৮ বলেই ফিফটি পূর্ণ করার বাবর ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১২৬ বলে। চতুর্থ উইকেটে শাকিলের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ১২৩ রান। ওলি রবিনসনের বলে ৩৭ রান করা শাকিল ফেরার পর রিজওয়ানের সঙ্গে বাবরের জুটিতে ৭৫ বলেই ওঠে ৬০ রান। শেষ পর্যন্ত জ্যাকসের বলেই ফিরতে হয় বাবরকে, পয়েন্টে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১৬৮ বলে ১৩৬ রানের ইনিংসে তিনি ১৯টি চারের সঙ্গে মারেন ১টি ছক্কা।

১ ওভার পর পাকিস্তান হারিয়ে ফেলে রিজওয়ানকেও। জেমস অ্যান্ডারসনের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে স্টোকসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ১৯ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে পাকিস্তানের মাটিতে সেটিই প্রথম উইকেট অ্যান্ডারসনের। পরের আঘাত আবারও করেন জ্যাকস। এবার তাঁকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন নাসিম শাহ। দিন শেষে ১০ রানে ব্যাটিং করা আগা সালমানের সঙ্গী জাহিদ মাহমুদ অপরাজিত ১ রানে।