আইসিসির বর্ষসেরা উদীয়মান পুরস্কারের তালিকায় বাংলাদেশের মারুফা

বাংলাদেশের পেসার মারুফা আক্তারশামসুল হক

২০২৩ সালে আইসিসির বর্ষসেরা উদীয়মান নারী ক্রিকেটারের পুরস্কারে মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশের পেসার মারুফা আক্তার। চারজনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় মারুফার সঙ্গে আছেন অস্ট্রেলিয়ার ফিবি লিচফিল্ড, ইংল্যান্ডের লরেন বেল এবং স্কটল্যান্ডের ডার্সি কার্টার।

এ ছাড়া বর্ষসেরা উদীয়মান পুরুষ ক্রিকেটার বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন ভারতের যশস্বী জয়সোয়াল, নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র, দক্ষিণ আফ্রিকার জেরাল্ড কোয়েৎজি এবং শ্রীলঙ্কার দিলশান মাদুশঙ্কা।

বর্ষসেরা উদীয়মান নির্বাচিত হবেন গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের প্যানেল, আইসিসি ভোটিং একাডেমি এবং সমর্থকদের ভোটে। আইসিসির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সমর্থকেরা ভোট দিতে পারবেন।

মারুফা আক্তার (বাংলাদেশ)

ওয়ানডে: ৯ উইকেট, ২৪.৭৭ গড়
টি–টোয়েন্টি: ১০ উইকেট, ২৩.৩০ গড়

মারুফা আক্তারের ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি অভিষেক ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ ম্যাচই খেলেছেন ২০২৩ সালে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আইসিসি নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন মারুফা। ১৯ বছর বয়সী এই পেসার বিশ্বকাপে মোট ৪ উইকেট নেন ৬.৩১ ইকোনমি রেটে। বছরের মাঝামাঝিতে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের দারুণ জয়ের ম্যাচে নেন ২৯ রানে ৪ উইকেট।

লরেন বেল (ইংল্যান্ড)

টেস্ট: ৬ উইকেট, ৩১.৮৩ গড়
ওয়ানডে: ৭ উইকেট, ২৭.৭১ গড়
টি–টোয়েন্টি: ৯ উইকেট, ২৬ গড়

লরেন বেল নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ৪ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। দীর্ঘদেহী এই ইংলিশ পেসার দ্রুতই জায়গা করে নেন ইংল্যান্ডের টেস্ট এবং ওয়ানডে দলেও।

আরও পড়ুন

ডার্সি কার্টার

টি–টোয়েন্টি: ২২৪ রান, ২২.৪০ গড়; ১৩ উইকেট, ১২.০৭ গড়

১৮ বছর বয়সী ডার্সি কার্টার ব্যাটিং–বোলিং দুটিতেই আবির্ভাবে নজর কেড়েছেন। জুলাইয়ে স্কটল্যান্ড, থাইল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের ত্রিদেশীয় সিরিজের মাধ্যমে টি–টোয়েন্টি অভিষেক তাঁর। পরে খেলেছেন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও, যেখানে ৪৫ রানের ইনিংস আছে কার্টারের। এ ছাড়া অফ স্পিন বোলিংয়ে আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে নেন ৩ উইকেট।

ফিবি লিচফিল্ড (অস্ট্রেলিয়া)

টেস্ট: ৮৭ রান, ২১.৭৫ গড়
ওয়ানডে: ৩৪৪ রান, ৪৯.১৪ গড়
টি–টোয়েন্টি: ৮৮ রান, ৮৮ গড়
অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি এ ব্যাটার বছর শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে টানা দুই অর্ধশতকে। বছরের মাঝামাঝিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ডাবলিনে খেলেন ১০৬ রানের ইনিংস। বছরের প্রথম টি–টোয়েন্টি খেলতে নামেন অক্টোবরে। আর সেই ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ১৯ বলে ৫ ছক্কায় খেলেন ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস।

ছেলেদের ক্রিকেটে বর্ষসেরা উদীয়মানের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন দুই পেসার ও দুই ব্যাটসম্যান—ভারতের জয়সোয়াল, শ্রীলঙ্কার মাদুশঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়েৎজি ও নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র।

রাচিন রবীন্দ্র (নিউজিল্যান্ড)

ওয়ানডে: ৮২০ রান, ৪১ গড়, ১০৮.০৩ স্ট্রাইক রেট; ১৮ উইকেট, ৬.০২ ইকোনমি
টি–টোয়েন্টি: ৯১ রান, ১৮.২০ গড়, ১৩৩.৮২ স্ট্রাইক রেট; ৫ উইকেট, ৯.১১ ইকোনমি

রাচিন রবীন্দ্রর টেস্ট ও টি–টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছিল ২০২১ সালেই। ২০২৩ সালে পা রাখেন ওয়ানডে ক্রিকেটে। মার্চে অভিষেকের পর স্বপ্নের মতো একটি বছর কাটিয়েছেন এ বাঁহাতি। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের হয়ে এক বিশ্বকাপ আসরে সর্বোচ্চ ৩টি শতক করেন। তাঁর তোলা ৫৭৮ রান ছিল আসরের চতুর্থ সর্বোচ্চ।

বিশ্বকাপে তিনটি শতক করেন রাচিন রবীন্দ্র
এএফপি

জেরাল্ড কোয়েৎজি (দক্ষিণ আফ্রিকা)

টেস্ট: ১০ উইকেট, ২১.৭০ গড়, ৩.৮৭ ইকোনমি
ওয়ানডে: ৩১ উইকেট, ২৩.২২ গড়, ৬.৪৮ ইকোনমি
টি–টোয়েন্টি: ৬ উইকেট, ২৩.৩৩ গড়, ১০.৫০ ইকোনমি

বছরজুড়েই ধারাবাহিক ছিলেন জেরাল্ড কোয়েৎজি। ২০২৩ সালে তিন সংস্করণে অভিষেক হওয়া পেসার টেস্টে ইনিংসে গড়ে নেন দুটি করে উইকেট। আর ওয়ানডেতে উইকেটে নিয়েছেন প্রতি ১৩ বলে একটি করে। ২৩ বছর বয়সী কোয়েৎজি ফেব্রুয়ারিতে অভিষেক টেস্ট ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৮ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট নিয়ে বিশেষভাবে দৃষ্টি কাড়েন। নিয়মিত বলে গতিও রাখতে পারেন ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটারের আশপাশে।

দিলশান মাদুশঙ্কা (শ্রীলঙ্কা)

ওয়ানডে: ৩১ উইকেট, ২৪.০৬ গড়, ৬.০৯ ইকোনমি
টি–টোয়েন্টি: ৬ উইকেট, ৩৩ গড়, ১২.৩৭ ইকোনমি

বাঁহাতি এ পেসারের অভিষেক হয়েছিল গত জানুয়ারিতে, ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে। তবে দলে থিতু হয়েছেন জুনে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব দিয়ে। দুষ্মন্ত চামিরার চোটে বদলি হিসেবে সুযোগ পাওয়া মাদুশঙ্কা বছরের বাকি সময় ছিলেন দুর্দান্ত। বিশ্বকাপের প্রথম ৪ ম্যাচে ১১টিসহ মোট নেন ২১ উইকেট। যা আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ।

বিশ্বকাপে ২১ উইকেট নেন দিলশান মাদুশঙ্কা
এএফপি

যশস্বী জয়সোয়াল (ভারত)

টেস্ট: ২৮৩ রান, ৭০.৭৫ গড়
টি–টোয়েন্টি: ৪৩০ রান, ৩৩.০৭ গড়, ১৫৯.২৫ স্ট্রাইক রেট

যশস্বী জয়সোয়ালের টেস্ট অভিষেক হয় জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে। ডমিনিকায় প্রথম টেস্টেই খেলেন ১৭১ রানের ইনিংস। যা তাঁকে ম্যাচসেরার স্বীকৃতিও এনে দেয়। একই সময়ে অভিষেক হয় টি–টোয়েন্টি সংস্করণেও। সেখানে দ্বিতীয় ম্যাচে ৫১ বলে ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। পরে এশিয়ান গেমসে নেপালের বিপক্ষে খেলেন ৪৯ বলে ১০০ রানের ইনিংস।