কোহলিদের রেখে বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক পতিদার কেন
মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ভালো ছক্কা মারতে পারেন। টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাইকরেটটাও সব সময় ভালোই থাকে। তাই বলে ভারত টি-টোয়েন্টি দলের আলোচনায় থাকেন, তেমনটাও নয়। ভারতের হয়ে ৪টি ম্যাচ খেলেছেন, এর মধ্যে ৩টিই টেস্ট, ১টি ওয়ানডে।
বোঝাই যাচ্ছে, যার সম্পর্কে কথা বলা হচ্ছে, সেই রজত পতিদার ওই অর্থে ভারতের ক্রিকেটে ‘হাইপ্রোফাইল’ কেউ নন। এমন একজনই এবারের আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর অধীনে খেলবেন বিরাট কোহলি, ভুবনেশ্বর কুমার, লিয়াম লিভিংস্টোনরা।
প্রশ্ন তাই স্বাভাবিকভাবেই ওঠে—এতজন অভিজ্ঞ ও সিনিয়র খেলোয়াড় থাকতে পতিদার কেন অধিনায়ক? দলে ভারত জাতীয় দলকে তিন সংস্করণে নেতৃত্ব দেওয়া কোহলি আছেন। ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বেঙ্গালুরুকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। তবে ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান নিজেই আর অধিনায়কত্বে ফিরতে চান না। চার বছর আগে দায়িত্ব ছাড়ার সময়ই সেটা বলে দিয়েছেন।
যদিও পরে সময়ে দলের প্রয়োজনে আপৎকালীন দায়িত্ব সামলেছেন কোহলি। ২০২২ আসর থেকে বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ছিলেন ফাফ ডু প্লেসি। এবার বেঙ্গালুরু ডু প্লেসিকে ধরে না রাখায় নতুন কাউকে নেতৃত্ব দিতে হতো দলটির। পতিদার সেই নতুন মানুষ।
পতিদারের অধিনায়ক হওয়ার পেছনে কোহলিরও ভূমিকা থাকতে পারে। কারণ, ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান যে কোহলির প্রিয়পাত্র, এই কথা অনেকবারই শোনা গেছে। আর বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক কোহলির প্রিয় হোন বা না হোন, অপ্রিয় কেউ হবেন না, সেটি না বললেও চলছে।
পতিদার ছাড়া খুব বেশি বিকল্পও অবশ্য বেঙ্গালুরুর হাতে ছিল না। কোহলি ও ভুবেনেশ্বর কুমার ছাড়া এই দলটিতে সিনিয়র কোনো ক্রিকেটার ওই অর্থে নেই। আছেন লিয়াম লিভিংস্টোন, বিদেশি একজনকে নেতৃত্ব দেওয়া যায় তখনই, যখন তাঁর পারফরম্যান্স নিয়মিত একাদশে থাকার মতো। লিভিংস্টোনকে নিয়ে বেঙ্গালুরু ঝুঁকি নিতে চায়নি। আর ভারতীয় পেসার ভুবনেশ্বরের মধ্যেও ‘অধিনায়ক উপাদান’ দেখেনি আরসিবি।
অধিনায়ক হিসেবে পতিদার একেবারে আনকোরা কেউও নন। সর্বশেষ সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে মধ্যপ্রদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তুলেছেন পতিদার। তাঁর পারফরম্যান্সও ছিল চোখে পড়ার মতো। ৯ ইনিংসে রান করেছিলেন ৪২৮। ৫ ফিফটির পথে রান তুলেছেন ১৮৬ স্ট্রাইকরেটে।
পতিদারকে অধিনায়ক করার ভাবনাও একদম নতুন নয়। অধিনায়কত্ব পেয়ে পতিদারের প্রতিক্রিয়াতে সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট, ‘গত মৌসুমে আমার মনে হয় বেঙ্গালুরুর ডিরেক্টর অব ক্রিকেটের (মো বোব্যাট) সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। মো জানতে চেয়েছিল, অধিনায়কত্বে আমার আগ্রহ আছে কি না। আমি তাকে বলেছিলাম, আরসিবির হয়ে অধিনায়কত্ব করার আগে আমি রাজ্য দলকে নেতৃত্ব দিতে চাই। সেখানে থেকেই ইঙ্গিত পাই যে আমি অধিনায়কত্ব পেতে পারি।’
বেঙ্গালুরুতে ৩১ বছর বয়সী পতিদার খুব বেশি দিন আগে আসেননি। ২০২১ সালে প্রথমবার বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলা এই ব্যাটসম্যান সব মিলিয়ে খেলেছেন ২৭ ম্যাচ। এর মধ্যেই হয়তো তাঁর মধ্যে বিশেষ কিছুই দেখেছে এখনো শিরোপা না জেতা দলটি। কোহলি তো ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে অধিনায়কের নাম ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই পতিদারকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে শুভকামনা জানিয়েছেন।