হারিয়ে যাননি—বল হারানো ছক্কা মেরে মাহমুদউল্লাহর বার্তা

Shamsul Haque Tanku

ইনিংস শুরুই করেছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে ছক্কা মেরে। এরপর পুরো ইনিংসে এই আক্রমণাত্মক মানসিকতার ধারাবাহিকতাই শুধু রক্ষা করেছেন। তা বোলারের নাম টি–টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ মহীশ তিকশানা হোক, কিংবা মাতিশা পাতিরানা হোক! ফিফটি করেছেন ২৭ বলে, প্রমাণ করেছেন, তিনি ফুরিয়ে যাননি!

ফুরিয়ে যাওয়ার কথা আসছে, কারণ, এই মাহমুদউল্লাহই বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েছিলেন। ২০২২ সালে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি খেলাই এর প্রমাণ। কারণ হিসেবে বিভিন্ন সময় মাহমুদউল্লাহর ফর্ম, ফিটনেস, টিম কম্বিনেশন—এসবই সামনে এসেছে। ৩৭ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহ এসব নিয়ে যে খুব একটা উচ্চবাচ্য করেছেন, তা-ও না। তবে দলে ফেরার কাজটা করে গেছেন।

আরও পড়ুন

ফেরার কথা বললে মাহমুদউল্লাহ স্বরূপে ফিরেছেন সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেই। ৭ ইনিংসে ৫৪.৬৬ গড়ে করেছেন ৩২৮ রান, যা ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। তবে শুধু সর্বোচ্চ বলে অবশ্য এই পারফরম্যান্সের মাহাত্ম্য বোঝানো সম্ভব নয়। কারণ, গত বিশ্বকাপে তাঁর বেশির ভাগ রানই দলের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।

এরপরও প্রশ্নটা তো থেকেই যায়। ওয়ানডেতে সময় পাওয়া যায় বলে না হয় পেরেছেন, টি–টোয়েন্টিতে তো সেই সুযোগ নেই। মাহমুদউল্লাহ পারবেন তো?

মাহমুদউল্লাহ অবশ্য এ ম্যাচটা ফিনিশ করে আসতে পারেননি
প্রথম আলো

সেটি তো পারলেন আজ। এ ইনিংসে মেরেছেন ৪টি ছক্কা, যার একটিতে তো স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে গ্যালারির ছাদে পাঠিয়েছেন। যে বল আর মাঠে ফেরেনি। বোঝাই যাচ্ছে, পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজটা ভালোই করেছেন তিনি। আজ ৪ ছক্কা আর ২ চারে ৫৪ রানের ইনিংস খেলার আগেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন বিপিএলে। সেখানে ১৩ ইনিংসে প্রায় ৩০ গড়ে রান করেছেন ২৩৭, স্ট্রাইক রেট ১৩৪.৬৫। অবশ্য সে সংখ্যাও ফরচুন বরিশালের শিরোপা জয়ে তাঁর অবদান কতটুকু ফুটিয়ে তুলতে পারে, সে প্রশ্ন থেকে যায়।

আরও পড়ুন

তবে মাহমুদউল্লাহর আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে হয়তো এমন একটা ইনিংস দরকার ছিল। এমনিতে টি–টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কা তাঁর প্রিয় প্রতিপক্ষ। আজকের ইনিংসটিসহ তাদের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর রান ১৩ ইনিংসে ৩৫২, গড় ৩৯.১১। আর স্ট্রাইক রেট তো দুর্দান্ত—১৪৯.১৫। আর ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাঁর ১৮ বলে ৪৩ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা। প্রিয় শ্রীলঙ্কা আজ তাঁকে একটা সুযোগও দিয়েছিল। ২৭ রানে থাকতে ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান।

ফিনিশার মাহমুদউল্লাহর অবশ্য এই ইনিংসে পুরোপুরি সন্তুষ্ট থাকার কথা নয়। ম্যাচটা তো ফিনিশ করে আসতে পারেননি। কিন্তু এ মঞ্চে তাঁর আরও কিছু দেওয়ার আছে, সেটির ঝলক ঠিকই দেখালেন তিনি সিলেটে।