২০২৫ সালের জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়া–ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের তৃতীয় টি–টোয়েন্টি ছিল এটি। ক্যারিবীয়দের ২১৪ রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৬১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর মাঠে নামেন টিম ডেভিড। এরপর যখন মাঠ ছাড়েন, নামের পাশে ৩৭ বলে ১০২ রানের ইনিংসের ঝোড়ো ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতে যায় ২৩ বল হাতে রেখেই। ডেভিডের ৬ চার ও ১১ ছক্কায় খেলা ইনিংসটি আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে যৌথভাবে দশম দ্রুততম।
সমান বলে টি–টোয়েন্টি সেঞ্চুরি আছে নামিবিয়ার জেজে স্মিট (কেনিয়ার বিপক্ষে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে), মাল্টার প্রিয়ান পুষ্পরঞ্জন (এস্তোনিয়ার বিপক্ষে ২০২৫ সালের মে–তে), হাঙ্গেরির শেখ রাসিক (মাল্টার বিপক্ষে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে) এবং ভারতের অভিষেক শর্মার।
শুরু থেকে মেরে খেলা তাঁর সহজাত। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও একইভাবে শুরু করেন অভিষেক শর্মা। ভারতের এই বাঁহাতি ওপেনার ৫ ছক্কা আর ৩ চারে ১৭ বলেই ছুঁয়ে ফেলেন ৫০ রানের মাইলফলক। পরের পঞ্চাশ যোগ করতে অবশ্য কিছু বল বেশি লেগেছে। সব মিলিয়ে ৩৭ বলে সেঞ্চুরি। অভিষেক অবশ্য সেখানেই থামেননি, ৫৪ বল খেলে ১৩ ছক্কা ও ৭ চারে করেছেন ১৩৫ রান। ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করা ভারত তোলে ২৪৭ রান, জিতেছে ১৫০ রানে।
২০১৯ সালের আগস্টে রোমানিয়ায় চলছিল ছয়টি ইউরোপীয় দেশের কন্টিনেন্টাল কাপ। ৩০ আগস্ট বুখারেস্টের কাছে ইলফভ কাউন্টিতে ছিল তুরস্কের বিপক্ষে চেক প্রজাতন্ত্রের ম্যাচ। এই ম্যাচেই ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করেন চেক প্রজাতন্ত্রের সুদেশ বিক্রমাসেকারা।
তাঁর ইনিংসে ছিল ১০টি ছয় ও ৮টি চার। সেদিন চেক প্রজাতন্ত্র ২০ ওভারে করে ২৭৮ রান। তাড়া করতে নেমে তুরস্ক অলআউট হয় মাত্র ২১ রানে। আটজনই আউট হন কোনো রান না করে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইন্দোরের ম্যাচটিতে রোহিত শর্মা ফিফটি করেন ২৩ বলে। তবে পরের পঞ্চাশ নিতে লাগে মাত্র ১২ বল। ৮ ছক্কা আর ১১ চারে ৩৫ বলে সেঞ্চুরিটি করেন ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। তখন এটিই ছিল আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে যৌথভাবে দ্রুততম সেঞ্চুরি। তাঁর রেকর্ডের ভাগীদার ছিলেন ডেভিড মিলার।
রোহিত শর্মা রেকর্ড ছোঁয়ার দুই মাস আগে ২০১৭ অক্টোবরে ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন ডেভিড মিলার। পচেফস্ট্রুমের ম্যাচটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। দশম ওভারে এবি ডি ভিলিয়ার্স আউট হওয়ার পর মাঠে নামা মিলার ৭ চার ও ৯ ছক্কায় সেঞ্চুরি করেন, অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ১০১ রানে।
এটি ছিল এশিয়ান গেমসের ম্যাচ। চীনের হাংঝুতে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপালের কুশল মাল্লা সেঞ্চুরি করেন ৩৪ বলে। এই ম্যাচেই মাত্র ৯ বলে ফিফটি করেন তাঁর সতীর্থ দীপেন্দ্র সিং ঐরি। দীপেন্দ্র ৬১ রান করে আউট হয়ে গেলেও মাল্লা ইনিংসের শেষ পর্যন্ত উইকেটে ছিলেন। ৮ চার ও ১২ ছক্কায় ৫০ বলে করেন অপরাজিত ১৩৭ রান।
২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দুয়ারে দাঁড়িয়ে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরই আফ্রিকান অঞ্চলের বাছাইয়ে গাম্বিয়াকে রীতিমতো দুঃস্বপ্ন ‘উপহার’ দেন জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা।
সপ্তম ওভারে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক একের পর এক চার–ছক্কায় সেঞ্চুরি করে ফেলেন ৩৩ বলেই। শেষ পর্যন্ত ৭ চার ও ১৫ ছক্কায় ৪৩ বলে করেন অপরাজিত ১৩৩ রান।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নেদারল্যান্ডস ও নামিবিয়াকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করে নেপাল। ২৭ ফেব্রুয়ারি কীর্তিপুরে স্বাগতিক বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেন নামিবিয়ার নিকোল লফটি–ইটন। ১১ চার ও ৮ ছক্কায় ৩৩ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি।
৫ চার ও ৫ ছক্কা—মাত্র ১৩ বলেই ফিফটি। সোফিয়ায় তুরস্কের বিপক্ষে বুলগেরিয়ার মুহাম্মাদ ফাহাদের শুরুটাই ছিল ঝোড়ো গতির। এরপর সেঞ্চুরিও হয়ে যায় ২৯ বলে।
৯ চার ও ১০ ছক্কায় গড়া তিন অঙ্কের ইনিংসটি অবশ্য এখানেই থামেনি। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচটিতে তুরস্কের বিপক্ষে বুলগেরিয়ার ফাহাদ করেন ৩৪ বলে ১২০ রান।
আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টির দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি এখন সাহিল চৌহানের। ২০২৪ সালের ১৭ জুন সাইপ্রাসের মাটিতে তাদেরই বিপক্ষে মাত্র ২৭ বলে সেঞ্চুরি করেন এস্তোনিয়ার সাহিল। সেদিন সাইপ্রাসের ১৯১ রান তাড়ায় সাহিল ব্যাট করতে নামেন দল ৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর।
তবে ওই পরিস্থিতিতে রক্ষণাত্মক না হয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন সাহিল। ফিফটিতে পৌঁছান ১৪ বলে, সেঞ্চুরি ২৭ বলে। তাঁর ইনিংসটিতে ছিল ৫ চার ও ১৩ ছক্কা। ৭ ওভার হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে যায় এস্তোনিয়া। ৬ চার ও ১৮ ছক্কায় ৪১ বলে ১৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন সাহিল।