হাসতে হাসতে কামিন্স বললেন, ইংল্যান্ডের হারে কষ্ট পেয়েছেন

অনুশীলনে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্সএএফপি

প্যাট কামিন্স কষ্ট পেয়েছেন। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের এমন দুর্দশা দেখে খারাপ লাগছে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের এমন অবস্থা দেখে কামিন্স অমন মন্তব্য করতেই পারেন। অবশ্য কামিন্স কষ্ট পাওয়ার ব্যাপারটি বলেছেন হাসতে হাসতে।

প্রথম ৫ ম্যাচে ৪ হারে সেমিফাইনালের আগেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়াটা প্রায় নিশ্চিত ইংল্যান্ডের। সর্বশেষ গত রাতে বেঙ্গালুরুতে শ্রীলঙ্কার কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে ইংল্যান্ড। কোচ ম্যাথু মটও বলেছেন, তাঁরা মেনেই নিয়েছেন সেমিফাইনালের আশা আর নেই। মাথা উঁচু করে টুর্নামেন্ট শেষ করতেই বাকি ম্যাচগুলো খেলবেন তাঁরা।

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বড় ব্যবধানে হারের পর কার্যত প্রতিটি ম্যাচই বাঁচা-মরার ছিল ইংল্যান্ডের, যার শুরুটা ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ। তবে সেখানেও মুখ থুবড়ে পড়েছে জস বাটলারের দল। আগামীকাল ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে কামিন্সকে ইংল্যান্ডের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।

এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল এমন, ‘প্যাট, আপনি অন্য দলে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কথা বললেন। গত রাতে ইংল্যান্ডের অমন হারের পর আপনার নিশ্চয়ই হৃদয়টা ভেঙে গেছে। দুই ম্যাচ পর তাদের সঙ্গে খেলবেন, এর আগে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?’

সেমিফাইনালের আগেই ইংল্যান্ডের বিদায় মোটামুটি নিশ্চিত এখন
এএফপি

প্রশ্নের মাঝামাঝি সময়েই হাসির রোল উঠেছিল সংবাদ সম্মেলনে। কামিন্স অবশ্য জোর করে হাসি আটকানোর চেষ্টা করছিলেন। এরপর হাসিটা ঠিক আটকাতে পেরেছেন, তা বলা যাবে না। হাসতে হাসতেই বলেছেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই দুই ম্যাচ পর তাদের সঙ্গে খেলা আমাদের, ফলে আমরা আরও ভালোভাবে খেয়াল করব। কিন্তু হ্যাঁ, এটা দেখাটা দুঃখের।’ কামিন্স যা বলেছেন আর তাঁর চোখে-মুখে যা ফুটে উঠেছে—দুটি যে এক নয়, সেটি বোঝা যায় সহজেই। অবশ্য উত্তরটা খুব একটা দীর্ঘ করেননি তিনি এরপর। শেষে বলেছেন, ‘বেশি কিছু (বলার) নেই।’

গত বিশ্বকাপে প্রথম পর্বে ইংল্যান্ডকে হারালেও সেমিফাইনালে গিয়ে তাদের কাছে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। দুই দল এবার মুখোমুখি হবে আগামী ৪ নভেম্বর আহমেদাবাদে। ইংল্যান্ড এখনই বিদায় দেখলেও অস্ট্রেলিয়া লড়াইয়ে আছে ভালোভাবেই। বিশ্বকাপের শুরুটা হোঁচট খেয়ে হলেও টানা তিন জয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে কামিন্সের দল। এবার তাঁদের সামনে বাধা প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ড।

আরও পড়ুন

এমনিতে অস্ট্রেলিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বরাবরই ইংল্যান্ডের কথা বলা হলেও ভৌগোলিক দিক দিয়ে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গেও লড়াইয়ের ইতিহাস আছে তাদের। তবে সেটি ঠিক ভারত-পাকিস্তানের মতো উত্তাপ ছড়ায় না ক্রিকেটে। ব্যাপারটিতে আরেকটু ঝাঁজ থাকলে ভালো হতো কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবও দিতে হয়েছে কামিন্সকে।

অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক বলেছেন, ‘মনে হয় না। আমার মনে হয় কিউইদের অধিকাংশই বেশ শান্ত প্রকৃতির, আমরাও তাই। যেমনটি বলেছি, আমরা একসঙ্গে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। তাদের মধ্যে কয়েকজন আমাদের বেশ ভালো বন্ধুও। যদি কিছু থেকে থাকে, সেটি হচ্ছে আপনি বন্ধুকে আরও বেশি করে হারাতে চাইবেন। তবে হ্যাঁ, মাঠে উত্তাপ থাকে।’

বিশ্বকাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে চলে এলেও এখন পর্যন্ত তেমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচ দেখা যায়নি। ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্তান আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে নেদারল্যান্ডস অঘটনের জন্ম দিলেও ফলের ব্যবধান বেশ বড়ই ছিল শেষ পর্যন্ত। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে কি দেখা যাবে হাড্ডহাড্ডি লড়াই?

তবে এখন পর্যন্ত কেন প্রায় সব ম্যাচই একপেশে, সে ব্যাপারে কামিন্সের মন্তব্য এমন, ‘প্রায় সময়ই এটা নিয়ে কথা হয়, প্রতিপক্ষ যে স্কোরই দাঁড় করাক না কেন আপনি তাড়া করবেন। এ টুর্নামেন্টে দলগুলোর ধাঁচটা এমন, বোর্ডে বড় স্কোর দাঁড় করান, এরপর যদি রান রেটের খোঁজ করেন তাহলেই ছিটকে যাবেন। ঠিক জানি না, তবে ব্যাপারটি বিস্ময়করই। খুব কাছাকাছি গেছে, তেমন কোনো ম্যাচ নেই।’