এবার আর আমিরাতকে হারাতে কষ্ট হলো না নুরুল-মিরাজদের

আগে ব্যাটিং করে ১৬৯ রান তোলে বাংলাদেশবিসিবি

প্রথম ম্যাচে জয় পেতে বেশ বেগই পেতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য নুরুল হাসানের দল জিতল ৩২ রানের মোটামুটি বড় ব্যবধানেই। দুই ম্যাচের সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ। তবে ১৬৯ রান তাড়ায় ২৯ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের অধিনায়ক সি পি রিজওয়ান ও বাসিল হামিদ বড় একটা সময় অস্বস্তিতেই রেখেছিলেন বাংলাদেশকে। পঞ্চম উইকেটে দুজন যোগ করেছেন ৭১ বলে ৯০ রান। হামিদ ৪০ বলে ৪২ রান করে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ৩৬ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান।

প্রথম ৪ ওভারে চারজন বোলারকে আনেন নুরুল, প্রথম সাফল্য এনে দেন নাসুম আহমেদ। তৃতীয় ওভারে তাঁর কাছে ফিরতি ক্যাচ দেন আগের ম্যাচে সর্বোচ্চ স্কোরার চিরাগ সুরি। অবশ্য নিজের পরের ওভারে এসে মুহাম্মদ ওয়াসিমের কাছে দুটি ছক্কা খান নাসুম, দুটি বলই ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ওয়াসিমকে ফেরান তাসকিন আহমেদ, তাঁর ফুললেংথের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন ওয়াসিম। পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান তোলে আরব আমিরাত।

আরও পড়ুন

পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে নিজের প্রথমটি করতে এসেই জোড়া আঘাত করেন মোসাদ্দেক হোসেন। আরিয়ান লাকরা ক্যাচ তোলার পর জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ভৃত্য অরবিন্দ। সিপি রিজওয়ান ও বাসিল হামিদের জুটি আসে এরপরই। ১৯তম ওভারে গিয়ে সেটি ভাঙেন ইবাদত হোসেন, তাঁর অফ স্টাম্পের বাইরের লো ফুল টসে ব্যাট চালিয়ে আফিফের হাতে ধরা পড়েন ৪০ বলে ৪২ রান করা হামিদ। রিজওয়ান অবশ্য ঠিকই পান ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংসে মারেন ২টি করে চার ও ছয়।

ওপেনিংয়ে নেমে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন মিরাজ
বিসিবি

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সমন্বিত চেষ্টায় বাংলাদেশ তোলে ১৬৯ রান। উইকেটে আজ বল এসেছে বেশ থেমে থেমে, টাইমিং করতেও বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের। এমন স্কোরের পেছনে অবদান রেখেছেন কমবেশি সবাই। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রথম সাত ব্যাটসম্যানই ছুঁয়েছেন দুই অঙ্ক, সর্বোচ্চ ৩৭ বলে ৪৬ রান মেহেদী হাসান মিরাজের। নুরুল খেলেন ১০ বলে ১৯ রানের ক্যামিও।

আরও পড়ুন

আবার বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করতে আসা মিরাজ ও সাব্বির তোলেন ২৭ রান। শুরুটা নড়বড়ে করার পর সাবির আলীর ফ্রি হিটে একটি ছয় মারা সাব্বির শেষ পর্যন্ত ফেরেন আরিয়ানের বলে এলবিডব্লু হয়ে। অবশ্য বল হাঁটুর বেশ ওপরে লেগেছিল বলে নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন তিনি।

২৭ রানের ওপেনিং জুটির পর পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৪৮ রান। লিটন ৪ চারে ২৫ রান করলেও খেলেছেন ২০ বল। আয়ানকে বেশ খানিকটা জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন। দুই ম্যাচেই তিনে নেমে বাঁহাতি স্পিনার আয়ানের বলে ফিরতে হলো লিটনকে। দ্বিতীয় উইকেটে মিরাজের সঙ্গে লিটন যোগ করেন ৪১ রান।

নামার এক ওভার পর জহুর খানকে এক্সট্রা কাভার ও স্কয়ার লেগ দিয়ে দুটি চার মেরেছিলেন আফিফ, আগের ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন, আজ শুরু করেছিলেন সেখান থেকেই। তবে যেভাবে আউট হয়েছেন, তাতে ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপটা বাড়ার কথা এ বাঁহাতির। আয়ানের কাছ থেকে ফুল টস পেলেও মিডউইকেট পার করাতে পারেননি সেটি, অবশ্য মিয়াপ্পন সামনে ডাইভ দিয়ে নিয়েছেন দারুণ একটি ক্যাচ।

১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান তোলে বাংলাদেশ, ভিতটাও তাই শক্তই পায় তারা। তবে ইনিংসের মাঝপথের স্কোরকে দ্বিগুণের চেয়ে খুব বড় করতে পারেনি বাংলাদেশ। আফিফ ফেরার পর মোসাদ্দেক ও মিরাজের জুটিতে ওঠে ৩২ রান। মিরাজের ইনিংসে তাঁর চেষ্টার কমতি ছিল না, তবে স্কোরিংয়ের জন্য মাঝে মাঝেই উদ্ভাবনী পথ বের করতে হয়েছে তাঁকে। ৫টি চার মেরেছেন, সবগুলোতে যে পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল তা নয়। সাবিরকে স্কুপ করে চার মেরে আগের সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংসকে ছাড়িয়ে যান মিরাজ। তাঁকেও অবশ্য ফিরতে হয় আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে। সাবিরের বলটি পড়েছিল লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে, তবে তাতেই মিরাজকে দেওয়া হয় এলবিডব্লু। ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিটাও তাই পাওয়া হয়নি তাঁর।

পিচের গতি বুঝতে সমস্যা হয়েছে প্রায় সব ব্যাটসম্যানকেই। মোসাদ্দেক জোরের ওপর খেলে দুটি চারের সঙ্গে মারেন একটি ছয়। মিয়াপ্পানকে স্লগ করতে গিয়ে অবশ্য ক্যাচ তোলেন, ২২ বলে ২৭ রান করে। নেমেই পুল করে একটি চার মারেন ইয়াসির আলী, শেষ পর্যন্ত ১৩ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ২১ রান করে। শেষ বলে ছক্কা মারেন নুরুল, শেষ ৩ ওভারে ইয়াসিরের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ৩২ রান।