বিপিএল: বাবর এসেই জেতালেন রংপুরকে

৫৬ রানে অপরাজিত ছিলেন বাবর আজমপ্রথম আলো

সাকিব আল হাসান নেই। তবে বাবর আজম আছেন। পাকিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যানের সৌজন্যেই এখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছে রংপুর রাইডার্স।

সিলেট স্ট্রাইকার্সকে মাত্র ১২০ রানে থামিয়ে দেওয়ার পর তাড়া করতে নেমে একটা পর্যায়ে ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে রংপুর। সেখান থেকে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে নিয়ে জুটি গড়ে বাবর রংপুরকে এনে দেন এবারের বিপিএলে প্রথম জয়। ১০ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে জেতা ম্যাচে বাবর অপরাজিত ছিলেন  ৪৯ বলে ৫৬ রান করে, ওমরজাই করেছেন ৩৫ বলে অপরাজিত ৪৭ রান।

লক্ষ্য মাত্র ১২১, আর রান তাড়া করতে নামছেন বাবর। দৃশ্যটা দেখেই প্রেস বক্সে একজন বলে উঠলেন, ‘বাবর তো এই রান ১০ উইকেট হাতে রেখে শেষ করবে।’ কথাটা খুব দ্রুতই ভুল প্রমাণ করেন রংপুরের ব্যাটসম্যানরা।

সপ্তম উইকেটে ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে রংপুরকে জিতিয়েছেন বাবর–ওমরজাই
প্রথম আলো

আরেক ওপেনার রনি তালুকদারকে (৬) দিয়ে শুরু হয় ধস। এরপর ব্রেন্ডন কিং (০), নুরুল হাসান (৮) আউট হয়েছেন। টপ অর্ডারের এই ব্যাটসম্যানদের মধ্যে নুরুলের আউটটা দৃষ্টিকটু। তানজিম হাসানের কোমরের ওপর করা লেংথ বলে বাজে শট খেলে স্কয়ার লেগে থাকা একমাত্র ফিল্ডার বেন কাটিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

এরপরের গল্পটা লঙ্কান লেগ স্পিনার দুশান হেমন্তর। ইনিংসের সপ্তম ওভার করা হেমন্তর শেষ ৪ বলে রংপুরের ৩ ব্যাটসম্যান আউট, ৩ জনই এলবিডব্লিউ! একে একে ফিরে যান শামীম হোসেন, মোহাম্মদ নবী ও শেখ মেহেদী হাসান। চোখের পলকে ৩ উইকেটে ৩৯ থেকে ৬ উইকেট ৩৯ হয়ে যায় রংপুর।

বাবর অন্য প্রান্তে অসহায়ের মতো দেখছিলেন ব্যাটিং ধস । ১২০ রানও তখন অনেক দূরের লক্ষ্য মনে হচ্ছিল। পরে আজমতউল্লাহ ওমরজাই এসে বাবরের সঙ্গে জুটি গড়লেন। ৬৮ বলে ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন সে জুটি নিশ্চিত করে রংপুরের জয়। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া হেমন্ত ছিলেন সিলেটের সেরা বোলার।

হারের পর হতাশ সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি
প্রথম আলো

রংপুরের মতো সিলেটের ইনিংসের শুরুটাও ছিল ভুলে যাওয়ার মতো। মাঠে আসা দর্শকদের একটা বিরাট অংশ নিজেদের চেয়ার খুঁজে বসার আগেই সিলেটের একের পর এক উইকেট পড়েছে। কেউ বাজে শট খেলছেন, কেউ হচ্ছেন রান আউট। তাতেই ৮.২ ওভারের মধ্যে ৩৯ রানে ৫ উইকেট নেই সিলেটের।

আরও পড়ুন

আউট হওয়া ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন আবার মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিন নম্বরে নেমে ৭ বল খেলে করেন ৬ রান। নাজমুল হোসেন আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ১৪ রান। মোহাম্মদ মিঠুন, ইয়াসির আলী  দুই অঙ্কেই যেতে পারেননি। আগের ম্যাচে ৭০ রান করা জাকির হাসান আজ করেছেন ১ রান।

বেন কাটিং ও বেনি হাওয়েল ওই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ৫৬ বলের জুটিতে যোগ করেন ৬৮ রান। হাওয়েল ৩৬ বল খেলে করেছেন ৪৩ রান, কাটিং ৩১ বলে ৩১। তাতে টেনেটুনে সিলেটের রান যায় ৮ উইকেটে ১২০ রানে। রংপুরের শেখ মেহেদী হাসান ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। রিপন মন্ডলও ২ উইকেট নিয়েছে ৩ ওভারে ১৯ রানে।

ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে আজমতউল্লাহ ওমরজাই
প্রথম আলো

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট স্ট্রাইকার্স : ২০ ওভারে ১২০/৮ (নাজমুল ১৪, মিঠুন ৫, মাশরাফি ৬, ইয়াসির ৯, জাকির ১, হাওয়েল ৩৭, কাটিং ৩৭, তানজিম ২*, হেমন্ত ১, এনগারাভা ১*; আজমতউল্লাহ ০/১০, মেহেদী ২/১৮, হাসান ০/২৬, নবী ১৭/১, মুরাদ ১/২৯, রিপন ২/১৯)।

রংপুর রাইডার্স : ১৮.২ ওভারে ১২৫/৬ (রনি ৬, বাবর ৫৬*, কিং ০, নুরুল ৮, শামীম ২, নবী ০, মেহেদী ০, আজমতউল্লাহ ৪৭*; এনগারাভা ১/২৮, তানজিম ১/৩৬, নাজমুল ১/১৮, হেমন্ত ৩/২০, হাওয়েল ০/২২)।

ফল : রংপুর রাইডার্স ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : আজমতউল্লাহ ওমরজাই (রংপুর রাইডার্স)।