নারী ক্রিকেট দলকে ‘রাবিশ’, ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’ বলার পর আজহারের অতীত নিয়ে ‘খোঁচা’

অতীত নিয়ে আজহারকে খোঁচাফাইল ছবি

মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের টুইটের ভাষাটাই ছিল আক্রমণাত্মক। তিনি সেখানে ব্যবহার করেছেন ‘রাবিশ’ শব্দটি। ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের ‘কমনসেন্স’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক।

আজহার টুইটটি করেছিলেন কমনওয়েলথ গেমসের ক্রিকেটে ভারতীয় নারী দল ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৯ রানে হেরে যাওয়ার পর। সেখানে তাদের ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা করতে গিয়ে দিয়েছেন ‘রাবিশ’ তকমা। নারী ক্রিকেট দলের ব্যাটিং কাণ্ডজ্ঞানহীন ছিল বলেও মন্তব্য তাঁর। তারা পাতে তুলে দেওয়া ‘জেতা ম্যাচ’ হেরেছে বলেই মনে করেন আজহার।

খেলায় হারজিত আছেই। জয়ের বন্দনা যেমন আছে, ঠিক তেমনি আছে হারের জন্য সমালোচনা। কিন্তু সেই সমালোচনা আক্রমণাত্মক না হওয়াই ভালো—আজহারের সমালোচনা দেখে এমন আলোচনায় চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভারতের সাবেক অধিনায়ক আজহারকে এ নিয়ে ধুয়ে ফেলা হচ্ছে। এমন আক্রমণাত্মক মন্তব্যের সমালোচনা করতে গিয়ে টানা হচ্ছে তাঁর অন্ধকার অতীতও।

আজহারউদ্দিনের সেই টু্ইট

ক্রিকেটপ্রেমীদের বেশির ভাগই একমত যে রুপা জয়ের জন্য ভারতীয় দলকে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত। ক্রিকেটারদের সমালোচনা করা উচিত নয়। কেননা, একটা খারাপ দিনের জন্য সারা টুর্নামেন্টের ভালো খেলাকে উপেক্ষা করা যায় না।

তা ছাড়া অনেকে এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়া যে রকম মেয়েদের ক্রিকেটে বিনিয়োগ করে, ভারতে তেমনটা দেখা যায় না। তাই উৎসাহ দেওয়ার বদলে মেয়ে ক্রিকেটারদের হতাশ করার কোনো অধিকার আজহারের নেই বলেও অনেকে দাবি করেন।

কমনওয়েলথ গেমসের ক্রিকেটে রুপা জিতেছে ভারত
ছবি: এএফপি

কমন্টওয়ইটারে আজহারের মন্তব্যের নিচে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। তাঁদের কথা, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল ফাইনালে হেরে গেলেও সেটি যথেষ্ট ভালো ফল। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়াতে নারী ক্রিকেটের পেছনে যেভাবে বিনিয়োগ হয়, তার ধারেকাছেও ভারত নেই। সীমিত প্রাপ্তির এই নারী ক্রিকেট দল ভারতকে এর আগে যথেষ্ট সাফল্য উপহার দিয়েছে, তাই একটা ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর এ ভাষায় সমালোচনা করার কোনো অধিকার আজহারের নেই। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, আজহার যখন অধিনায়ক ছিলেন, তখন ভারত অস্ট্রেলিয়াকে কয়বার হারিয়েছিল!

২০০০ সালে ম্যাচ পাতানো-কাণ্ডে আজহার আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। নতুন শতকের শুরুতে আজহারের সেই নিষেধাজ্ঞা বিমূঢ় করে দিয়েছিল ক্রিকেট দুনিয়াকে। কেবল আজহার নন, ম্যাচ পাতানো-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন অজয় জাদেজা আর মনোজ প্রভাকরও। পাকিস্তান তো কমিশন বসিয়ে আজীবন নিষিদ্ধ করেছিল সাবেক অধিনায়ক সেলিম মালিককে।

অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেই সোনার পদক হারিয়েছে ভারত
ছবি: এএফপি

আজহার অবশ্য এরপর আদালতের নির্দেশেই ‘নির্দোষ’ প্রমাণিত হয়েছেন। জড়িত হয়েছেন হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে। কয়েক বছর ধরে গণমাধ্যমেও বেশ সক্রিয় তিনি। সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সৌরভ গাঙ্গুলী, মহেন্দ্র সিং ধোনি ও বিরাট কোহলির আগে ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক হিসেবেই ধরা হতো আজহারকে। কমনওয়েলথ গেমসে ফাইনাল নিয়ে তাঁর টুইটের নিচে অনেকেই মন্তব্য করেছেন তাঁর ম্যাচ পাতানোর অতীত নিয়ে, ‘ওরা তো খেলে হেরেছে, তোমার মতো ম্যাচ তো আর পাতায়নি।’

হারমানপ্রীত কৌরদের সমালোচনা করে আজহারের এখন রীতিমতো ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি অবস্থা!