‘হিরো অথবা জিরো’ জাদেজা এবং পান্ডিয়ার ‘প্রতিশোধ’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ের পর রবীন্দ্র জাদেজা ও হার্দিক পান্ডিয়াইনস্টাগ্রাম

পিচের ওপর ট্রফিটি রেখে দাঁড়িয়ে হার্দিক পান্ডিয়া। হাত দিয়ে ট্রফি দেখিয়ে চোখেমুখে তাঁর এমন ভঙ্গি যে এ তো হওয়ারই কথা ছিল!

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত এক ম্যাচও হারেনি। শক্তি এবং কন্ডিশনের সুবিধা বিচারে আসলে ভারতেরই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা। তবে কাল রাতের ফাইনালটি পান্ডিয়ার জন্য ছিল বিশেষ উপলক্ষ। এটা ছিল তাঁর জন্য প্রতিশোধের ফাইনাল।

আরও পড়ুন

২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিশ্চয়ই মনে আছে? সেবার ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল ভারত। এবার ফাইনালে ৮ বছর আগের সেই হারের ক্ষতমোচন করতে চেয়েছিলেন পান্ডিয়া। নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ক্ষতমোচনের পর সাংবাদিকদের ভারতের এই অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘এখন যেহেতু জিতেছি, তাই বলতে পারি ২০১৭ ফাইনাল হারের প্রতিশোধ নিলাম। কিন্তু আট বছর অনেক লম্বা সময়, অনেক কিছুই ঘটে গেছে। আমার কাছে ভারতের জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সমর্থকেরা খুশি; নিজেদের জায়গা থেকে আমরা এটাই সর্বোচ্চ করতে পারি।’

পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক হলেও প্রতিবেশী দেশটিতে একটি ম্যাচও খেলেনি ভারত। নিজেদের সব ম্যাচ দুবাইয়ে খেলেছে রোহিত শর্মার দল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগেই ভারত জানিয়ে দিয়েছিল, পাকিস্তানে তাঁরা খেলতে যাবে না। এ কারণে টুর্নামেন্টটি হাইব্রিড পদ্ধতিতে আয়োজন করা হয়।

দুবাইয়ে বসবাসরত পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন পান্ডিয়া। তবে ভারত কী কারণে পাকিস্তানে খেলতে যায়নি, সেই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দিতে পারেননি এই তারকা, ‘আমি নিশ্চিত দুবাইয়ে বসবাস করা পাকিস্তানিরা আমাদের পারফরম্যান্স উপভোগ করেছেন। আমরা কেন (পাকিস্তানে) যাইনি, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।’

ফাইনালে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৫১ রান তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। তাড়া করতে নেমে ষষ্ঠ উইকেটে লোকেশ রাহুল–হার্দিক পান্ডিয়ার ৩৬ বলে ৩৮ রানের জুটি জয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ৪৭.৩ ওভারে পান্ডিয়া যখন ১৮ বলে ১৮ রানে আউট হন, ১৫ বলে ১১ রান দরকার ছিল ভারতের। ৬ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকা রবীন্দ্র জাদেজা চার মেরে দলকে জেতান।

আরও পড়ুন

পান্ডিয়া যখন ক্রিজে আসেন, ৫ উইকেট হাতে রেখে ৫১ বলে ৪৯ রান দরকার ছিল ভারতের। তখন দ্রুত একটি–দুটি উইকেটের পতনে বিপদ হতেই পারত। রাহুল–পান্ডিয়ার জুটি তা হতে দেয়নি এবং তারপর দলকে আরামসেই জেতান জাদেজা, যেটা তাঁর কাজ।

সেই কাজ ভালোভেবে সেরে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কথা বলেছেন জাদেজা। গতকাল আটে নামলেও এ সংস্করণে ছয়ে ও সাতেই বেশি ব্যাট করেন এই স্পিন অলরাউন্ডার। এসব পজিশনে নেমে ম্যাচ জিতিয়ে আসা কিংবা দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেওয়াই আসল দায়িত্ব। জাদেজার ভাষায় সেটা করতে পারলে ‘হিরো’ না পারলে ‘জিরো।’

ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সম্প্রচারকদের জাদেজা বলেছেন, ‘আমার ব্যাটিং পজিশন এমন যে ম্যাচ শেষে হয় নায়ক কিংবা খলনায়ক হব। সৌভাগ্যবশত হার্দিক ও রাহুল শেষ ১০ ওভারে খুব ভালো ব্যাট করে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েছে। মাঝে রান তোলা সহজ নয়। কিন্তু আমাদের ওপর থেকে চাপ শুষে নেওয়ার কৃতিত্বটা তাদের।’

সপ্তম উইকেটে রাহুল–জাদেজার ৯ বলে ১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জেতে ভারত। ৩৩ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন রাহুল।