কীভাবে গুগলি শিখলেন রিশাদ
সর্বশেষ আয়ারল্যান্ড সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টির ঘটনা। কার্টিস ক্যাম্ফারকে বোল্ড করলেন রিশাদ হোসেন। গ্যালারিতে তখন একটু বাড়তি উচ্ছ্বাসই হলো। ম্যাচে তখন বাংলাদেশই সুবিধাজনক অবস্থায়, গ্যালারি থেকে ভেসে আসা বাড়তি এই উচ্ছ্বাস শুধু একটি উইকেট পাওয়ার জন্য নয়, ক্যাম্ফারকে রিশাদ যে বোল্ড করেছেন গুগলিতে!
বাংলাদেশের জন্য একটা লেগ স্পিনার পাওয়াই একসময় ছিল আরাধ্য। গত বছর রিশাদ তাতে আলোকবর্তিকা হয়েই পা রাখেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরুতে গুগলি করতে দেখা যেত না তাঁকে—জোরের ওপর করা লেগ স্পিনই এত দিন ছিল ভরসা। ধীরে ধীরে উন্নতি করা রিশাদ এখন গুগলিতেও পটু হয়ে উঠছেন।
এশিয়া কাপ থেকে নিয়মিতই রিশাদকে দেখা যাচ্ছে গুগলি করতে। দেড় বছর ধরে তাঁর এ উন্নতির পথের সঙ্গী বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ। পাকিস্তানের সাবেক এই লেগ স্পিনার রিশাদকে গুগলি শেখানোর কারিগর। প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে গল্পই জানিয়েছেন মুশতাক।
মুশতাকের মুখেই তা শুনুন, ‘আমার মনে হয়, রিশাদ এখন তার রিস্ট পজিশনটা বুঝতে পারছে। যখন আপনি গুগলি করতে যাবেন, তখন বডির শেপ হারিয়ে ফেলবেন, মাথা একদিকে হেলে যাবে, এটাকে আমি সহজ করার চেষ্টা করেছি। ওকে বলেছি, শুধু রিস্ট পজিশনটা বদলালেই হবে, এমনকি গ্রিপও বদলানোর প্রয়োজন নেই।’
মুশতাক জানালেন, রিশাদ তাঁর কথা শুনেছেন, ‘সে এই কথা মাথায় রেখে অনেক অনুশীলন করেছে, একইভাবে বারবার বল করেছে, এভাবেই গুগলি শিখেছে। গুগলিতেও লেগ ব্রেকের মতোই বলটা একই অ্যাঙ্গেল থেকে আসবে, শুধু রিস্ট পজিশনটা বদলাতে হবে, লেগ স্পিনের চেয়ে উল্টোভাবে। বলটা একটু বেশি তালু থেকে বেরোবে, লেগ স্পিনের ক্ষেত্রে যেটা আঙুল থেকে বেরোয়।’
রিশাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেক ২০২৩ সালে। পরের বছরই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে এ পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেটে নেওয়ার রেকর্ড গড়েন। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৩৫ উইকেট নেওয়া রিশাদ এ বছরও এই সংস্করণে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি (৩৩)। ২০২৫ সালে সব সংস্করণ মিলিয়েই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এই লেগ স্পিনার। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে বাংলাদেশের হয়ে ৩২ ম্যাচে ৫০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এত অল্প সময়ে তাঁর উন্নতির পেছনেও ভূমিকা রেখেছে মুশতাকের কিছু টোটকা।
সেটিও প্রথম আলোকে জানিয়েছেন মুশতাক, ‘এক বছর ধরে সে অনেক পরিশ্রম করেছে। সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে অ্যাকশন নিয়ে। আগে একই অ্যাকশনে টানা বল করতে পারত না। এখন সে তার অ্যাকশনটা ভালো বুঝতে পারছে। আগে হয়তো একটা ভালো বল করত, কিন্তু একটা ভালো ওভার করতে পারত না; এখন তা পারছে। এই জিনিসটা ঠিক হওয়ার পর এখন বল আরও বেশি ঘোরানো আর গুগলি নিয়ে কাজ করছে। দেখেছেনই তো, গুগলিতে উইকেটও পাচ্ছে।’
মুশতাকের পুরো সাক্ষাৎকার পড়ুন আজ প্রথম আলোর অনলাইন ও ছাপা সংস্করণে