সাবেক অধিনায়কের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ পিসিবির, ক্রিকেটার চাইলেন ক্ষমা

রশিদ লতিফের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ করেছিল পিসিবিজিও টিভি

পাকিস্তান ক্রিকেটে অধিনায়ক বদল যেন নিত্যদিনের ঘটনা। দলের ব্যবস্থাপনায়ও আসে ঘন ঘন পরিবর্তন। এ নিয়েই সরব হয়েছিলেন সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ। তিনি দায় চাপিয়েছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির ওপর। লতিফের এসব মন্তব্যের পর পিসিবি অভিযোগ করে বসে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিতে (এনসিসিআইএ)।

প্রথমে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেও শেষ পর্যন্ত অবস্থান বদলেছেন লতিফ। ৫৭ বছর বয়সী এই সাবেক ক্রিকেটার তাঁর মন্তব্যগুলো ‘নিঃশর্তভাবে’ প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে ফিলিস্তিন সমর্থনের বিষয়টি জড়িত—এমন দাবি যে ভিত্তিহীন ছিল, সেটিও স্বীকার করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন

বিরোধের সূত্রপাত গত মাসে রিজওয়ানকে ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরানোর পর। লতিফ এক্সে পোস্ট দিয়ে লেখেন, রিজওয়ান ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশের কারণে অধিনায়কত্ব হারিয়ে থাকতে পারেন। অন্য এক মন্তব্যে তিনি বেটিং কোম্পানির সারোগেট বিজ্ঞাপন নিয়েও কথা বলেন।
এরপরই পিসিবি অভিযোগ করে সাইবার ক্রাইম তদন্ত সংস্থায়। ১৭ নভেম্বর এনসিসিআইএ লতিফকে হাজির হওয়ার নোটিশ দেয়। এর জবাবে লতিফ ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেন।

পাল্টাপাল্টি অবস্থার মধ্যে গত শনিবার এক্সে দীর্ঘ পোস্ট দেন লতিফ। সেখানে তিনি দাবি করেন, তাঁর মন্তব্য কোনো খেলোয়াড়, বোর্ড সদস্য বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করার উদ্দেশ্যে ছিল না। রিজওয়ানের ফিলিস্তিন সমর্থনের প্রসঙ্গ তিনি ‘অযথা’ টেনেছিলেন বলেও স্বীকার করেন, ‘আমি স্বীকার করছি যে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ফিলিস্তিন সমর্থনের প্রসঙ্গ আমি অযথা টেনে এনেছি, যা তাঁর অধিনায়কত্ব হারানোর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলাম। আরও ভেবে দেখার পর উপলব্ধি করছি, অনুমানটি অনুপযুক্ত, ভিত্তিহীন এবং কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই।’

আরও পড়ুন

নিজেকে ‘বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণের প্রবক্তা’ উল্লেখ করে লতিফ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে ক্ষমাও চান, ‘আমার মন্তব্যের কারণে সাধারণ জনগণ, বিশেষ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এবং এর কর্মকর্তাদের কোনো দুঃখ বা বিরক্তির উদ্ভব হয়ে থাকলে আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত। আমার মন্তব্য থেকে উদ্ভূত যেকোনো অনিচ্ছাকৃত ক্ষতির জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি, যা আমি নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করছি এবং নিশ্চিত করছি যে এমন কোনো ক্ষতি করার কোনো উদ্দেশ্য আমার ছিল না।’

পিসিবি চেয়ারম্যান সৈয়দ মহসিন রাজা নাকভি
এএফপি

তবে এখানেই শেষ হয়নি বিতর্ক। সাবেক পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি লতিফের সমর্থনে পোস্ট দিয়ে বোর্ডকে ক্ষমতার অপব্যবহার না করতে অনুরোধ জানান। যদিও পরে তা সরিয়ে ফেলেন। এর জবাবে বর্তমান চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি শেঠির মন্তব্যকে ‘ভুল ব্যাখ্যা ও বাস্তবতাহীন’ বলে আখ্যা দেন। তাঁর দাবি, লতিফের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ ছিল মিথ্যা ও মানহানি রোধে, সমালোচনা দমনে নয়।
লতিফের ক্ষমা প্রার্থনাকে মহসিন নাকভি স্বাগত জানান।

আরও পড়ুন