ওয়েড চোট পেলে অস্ট্রেলিয়ার ‘বিশেষজ্ঞ’ উইকেটকিপার কে

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে ইংলিসের বদলি হিসেবে ক্যামেরন গ্রিনকে ডেকেছেন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকেরাফাইল ছবি: এএফপি

প্রস্তুতি ম্যাচ ও অনুশীলনের মাঝে ছুটির দিনে গলফ খেলতে গিয়ে হাত কেটে ফেলেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান জস ইংলিস। তাঁর বদলি হিসেবে অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনকে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে অস্ট্রেলিয়া।

ইংলিস অস্ট্রেলিয়ার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে ব্যাকআপ উইকেটকিপার হিসেবে ছিলেন, যিনি ব্যাটও করতে পারেন। তাঁর বদলি হিসেবে মিডিয়াম পেস অলরাউন্ডার গ্রিনকে অস্ট্রেলিয়ার ডাকার অর্থ হলো, এবার ১৫ জনের দলে কোনো ব্যাকআপ উইকেটকিপার থাকছে না।

বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মূল উইকেটকিপার ম্যাথু ওয়েড। তিনি চোট পেলে তখন হয়তো এই জায়গায় বদলির কথা ভাববে অস্ট্রেলিয়া। তবে এতেও ঝুঁকি থাকে। ওয়েড ম্যাচের মধ্যে চোট পেলে উইকেটকিপিংয়ে অনভ্যস্ত কাউকে হয়তো হাতে গ্লাভস তুলে নিতে হবে। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে একবার হাতে কিপিং গ্লাভস তুলে নিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার।

বিগ ব্যাশে অ্যারন ফিঞ্চকেও উইকেটকিপার হিসেবে দেখা গেছে। অস্ট্রেলিয়ার কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড তো পেসার মিচেল স্টার্ককেও কিপিংয়ের দায়িত্বে বিবেচনা করেন। স্টার্কের স্ত্রী অ্যালিসা হিলি নিজেই যে কিপার! দীক্ষাটা নিশ্চয় ঘর থেকেই নিয়েছেন।

২৩ বছর বয়সী গ্রিনকে সাদা বলের ক্রিকেটে সম্ভাবনাময় প্রতিভা হিসেবে দেখা হয়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাত্র সাতটি টি–টোয়েন্টি খেলা এই ব্যাটসম্যান অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে থাকলেও সামর্থ্যে নয়।

গত সেপ্টেম্বরে হায়দরাবাদে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টি–টোয়েন্টিতে তাঁর ২১ বলে ৫২ রানের ইনিংসেই সামর্থ্যটা বোঝা গেছে। কিংবা সেপ্টেম্বরেই কেয়ার্নসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে তাঁর ৯২ বলে ৮৯ রানের অপরাজিত ইনিংসটি—দুটো ভিন্ন সংস্করণে দুই রকম মেজাজেই ব্যাট করতে পারেন গ্রিন।

সাদা বলে গ্রিনকে সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার হিসেবে দেখা হয়
ছবি: টুইটার

অস্ট্রেলিয়া এর আগেও একজন বিশেষজ্ঞ উইকেটকিপার নিয়ে বিশ্বকাপে খেলেছে। সেটি ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত সে বিশ্বকাপে ব্রাড হাডিন ছিলেন একমাত্র বিশেষজ্ঞ উইকেটকিপার। অস্ট্রেলিয়ার কোচ ম্যাকডোনাল্ড অবশ্য সাহস পাচ্ছেন, ‘বিশ্বকাপে স্কোয়াডগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন, অস্ট্রেলিয়া অনেকবারই একজন (বিশেষজ্ঞ) উইকেটকিপার নিয়ে খেলেছে। দলের ব্যাটিং ও বোলিং নিয়ে কিছু কাজের ক্ষেত্রে তা সুবিধাই করে দেবে। ছোট ছোট ঝুঁকির চিন্তা বাদ দিয়ে আমরা আসলে নিজেদের কতটা সুযোগ দিতে চাই, সেটাই ভেবেছি।’

গত মঙ্গলবার ছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তুতি ম্যাচ আর বৃহস্পতিবার নেট অনুশীলন। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের জন্য মাঝের দিন, অর্থাৎ বুধবার ছিল ছুটি। সেই ছুটিতে গলফ খেলতে গিয়ে হাত কেটে ফেলেন ইংলিস। একটি শট খেলতে গিয়ে গলফ স্টিকের ধাতব হাতল দিয়ে আঘাত পান। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষায় বড় কোনো চিড় ধরা পড়েনি। তবে আঘাতের যেটুকু তীব্রতা, তাতেই দুই সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে ইংলিসকে।

চোটে পড়েছেন জস ইংলিস
ফাইল ছবি: এএফপি

গ্রিনকে বেছে নেওয়ার আগে অ্যালেক্স ক্যারি, জস ফিলিপে, বেন ম্যাকডরমট ও নাথান এলিসকে ইংলিসের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে ভেবেছেন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকেরা। কিন্তু টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে পরিকল্পনায় গ্রিনকে নেওয়া হয় এবং তার পর থেকেই তিনি দলের সঙ্গে ছিলেন—এসব বিচারে নির্বাচকেরা শেষ পর্যন্ত গ্রিনেই আস্থা রেখেছেন।

তবে তাঁকে যে সরাসরি একাদশে খেলানো হবে না, সে বিষয়ও জানিয়ে রাখলেন ম্যাকডোনাল্ড, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ক্যামেরন গ্রিনকে যদি একাদশের জন্যই ভাবা হতো, তাহলে সে বিশ্বকাপের ১৫ জনের স্কোয়াডে থাকত। কিন্তু তাকে সেখানে রাখা হয়নি। অর্থাৎ আরেকজনের চোট ছাড়া তাকে খেলানোর পথ নেই।’