ওপেনিংয়ে বাবর-বাটলার

ওপেনিংয়ে ডেভন কনওয়ে বা মোহাম্মদ রিজওয়ানের নাম মাথায় এসেছিল, যারা কিপিংও করে। তবে বাবর আজম বা জস বাটলার বড় উপলক্ষের খেলোয়াড়, তাদের ওপর আস্থা আছে। ইনিংস বড় করার সামর্থ্য বিবেচনায় এ দুজনকে রেখেছি। অ্যালেক্স হেলস ভালো খেলেছে, তবে তাকে বিবেচনায় আনিনি। এর বাইরে আহামরি তেমন কিছু কেউ করেওনি। অধিনায়কত্বের ক্ষেত্রেও বাটলার এগিয়ে থাকবে।

তার ম্যাচের পরিস্থিতি বোঝার ও কৌশল ঠিক করার ক্ষমতা ভালো। ‘কুল কাস্টমার’ হিসেবে বাবরকে রেখেছি, প্রয়োজনে স্ট্রাইক বদলাতে পারবে। এ পজিশনে আমাদের লিটন দাসকে আরও প্রমাণ করতে হবে। তবে উইকেটকিপিংয়ের দিকে আরও মনোযোগ দিলে আমার ধারণা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক দলগুলোতে তার সুযোগ বাড়বে।

তিনে বিরাট কোহলির জায়গা নিয়ে সংশয় ছিল না। ফর্ম ফিরে পাওয়ার পর সোনালি একটা সময় যাচ্ছে তার। আর সূর্যকুমার যাদবের চেয়ে ‘রিয়েল ইমপ্যাক্ট’ ক্রিকেটার হিসেবে ভালো কাউকে দেখি না। প্রতিপক্ষ দল ও অধিনায়কের জন্য তার উইকেটে উপস্থিতিই একটা ত্রাস। গ্লেন ফিলিপস, রাইলি রুশোদের কথা ভেবেছি, তবে তারা কোহলির কাছে টেকেনি।

আমার একাদশের পাঁচে থাকা মঈন আলীকে একটু আন্ডাররেটেড মনে হয়। এর আগের চারজনের সামর্থ্য আছে অনেক বল খেলার, সে ক্ষেত্রে একজন ফিনিশার দরকার। এমন পরিস্থিতিতে কয়েকটি বল খেলে ভালো ফিনিশ করতে পারবে মঈন। এরপর বেন স্টোকসের জায়গায় হার্দিক পান্ডিয়াকেও বিবেচনা করেছিলাম। এ ছাড়া পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে এ টুর্নামেন্টে তেমন কাউকে দেখিনি।

শাদাব খান লেগ স্পিনে অনেক ভালো করেছে। ফিল্ডিং ভালো, মিড অন মিড অফের মতো জায়গা থেকে সরাসরি থ্রোয়ের সামর্থ্য আছে। ব্যাটিংয়ে দলের প্রয়োজনে মারার সামর্থ্যও আছে। ধস নামলে ইনিংস পুনর্গঠন বা ফিনিশিংয়ের ক্ষেত্রে সে বেশ ভালো।

পাওয়ারপ্লের পর ডানহাতি বা বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে ধারাবাহিকভাবে বল করতে পারবে, কারণ গুগলি করতে পারে। আর উইকেট একটু স্টিকি হলে মঈনও ১-২ ওভার করে দিতে পারবে। পাশাপাশি ব্যাটিং–সামর্থ্যের কারণে মহীশ তিকসানা বা মুজিব উর রেহমানের চেয়ে এগিয়ে থাকবে মঈন।

শাহিন শাহ আফ্রিদি আমার ‘অটোমেটিক চয়েস’। নতুন বল বা ডেথে সমান কার্যকর। বাঁহাতি পেসারের কথা ভাবলে ট্রেন্ট বোল্ট বা মিচেল স্টার্ক প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। স্যাম কারেন সেখানে নতুন বলে ঘোরাতে পারে, মাঝের ওভারগুলোতে করতে পারে এবং ব্যাটিংয়ের ডেপথ বাড়াতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ায় যেমন উইকেট দেখলাম, ব্যাটিং লাইনআপ লম্বা দরকার। এ কারণেও অর্শদীপ সিংয়ের চেয়ে কারেনকে এগিয়ে রাখব। মোস্তাফিজ ভালো করেছে, তবে তার ফিল্ডিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন আছে।

মার্ক উড লাইন-লেংথ, ইয়র্কারের সামর্থ্য মিলিয়ে ভালো। মাঝেমধ্যে আক্রমণ করতে হবে, সে ব্যাটসম্যানদের চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। চাপে থাকলে ব্যাটসম্যান কাউকে আক্রমণ করে বেরিয়ে আসতে চাইবে। অমন পরিস্থিতিতে ক্রিস ওকস বা লকি ফার্গুসনদের চেয়ে উডকে এগিয়ে রাখব।

ডানহাতি পেসার হিসেবে তাসকিন আহমেদকে ভালোভাবেই বিবেচনা করেছি। তবে ধারাবাহিকতা ও আত্মবিশ্বাস, চাপের মুহূর্ত সামলানোর ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা—এসব ক্ষেত্রে সে পিছিয়ে গেছে একটু। দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে রশিদ খানকে রেখেছি দুটি কারণে। সিডনির মতো উইকেটে স্পিন ধরলে তিন পেসার খেলবে, রশিদের সঙ্গে শাদাব খেলবে। অধিনায়কের কাছে রশিদ বড় একটা অস্ত্র হবে।

গাজী আশরাফ হোসেনের একাদশ

জস বাটলার (অধিনায়ক/উইকেটকিপার) (ইংল্যান্ড), বাবর আজম (পাকিস্তান), বিরাট কোহলি (ভারত), সূর্যকুমার যাদব (ভারত), মঈন আলী (ইংল্যান্ড), বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড), শাদাব খান (পাকিস্তান), স্যাম কারেন (ইংল্যান্ড), মার্ক উড (ইংল্যান্ড), আনরিখ নর্কিয়া (দক্ষিণ আফ্রিকা), শাহিন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান), রশিদ খান (দ্বাদশ খেলোয়াড়) (আফগানিস্তান)।