মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট
দুর্দান্ত ডাফিতে সর্বনাশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের, রেকর্ড জয়ে সিরিজ নিউজিল্যান্ডের
দুই ওপেনার ৮৭ রান তুললেও এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে আর ৫১ রানই যোগ করতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিউজিল্যান্ড জিতেছে ৩২৩ রানে।
৩২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান!
মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের শেষ দিনের দ্বিতীয় সেশনে এমন মন্থর ব্যাটিংই করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচ বাঁচাতে অন্য কোনো উপায় তো ছিল না ক্যারিবীয়দের। কিন্তু ম্যাচ তাঁরা বাঁচাতে পারল কই। যা সর্বনাশ হওয়ার তা তো প্রথম সেশনেই হয়ে গেছে। ১১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ভালো শুরুটাকে জলাঞ্জলি দিয়েছে তাঁরা। এরপর দ্বিতীয় সেশনের ওই কচ্ছপগতির ব্যাটিং, আর শেষ সেশনে শেষ ২ উইকেট হারিয়ে হার। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে ৩২৩ রানে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আর এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজটা ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এ নিয়ে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সর্বশেষ পাঁচটি টেস্ট সিরিজই জিতল কিউইরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দলটি সর্বশেষ হেরেছে ২০১২ সালে।
ম্যাচ জিততে রান তাড়ার নিজেদের বিশ্ব রেকর্ড ভাঙতে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। দুই ওপেনার টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়ের জোড়া সেঞ্চুরির অদ্বিতীয় কীর্তিতে গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৬২ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ওই রান পেরিয়ে জয়ের মতো সময়ই ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তারা যেটি পারত মাটি কামড়ানো ব্যাটিং করে বড়জোর ড্র করতে।
ভালো শুরুই এনে দিয়েছিলেন দলটির দুই ওপেনার জন ক্যাম্পবেল ও ব্রেন্ডন কিং। গতকাল ১৬ ওভারে ৪৩ রান তুলে দিন শেষ করেন তাঁরা। আজ জুটিটা ভাঙে ৮৭ রানে। কিউই পেসার জ্যাকব ডাফি প্রথম আঘাতটা হানেন। ৯৬ বলে ৬৭ রান করা কিং লাফিয়ে ওঠা বলে গালিতে গ্লেন ফিলিপসের হাতে ক্যাচ দেন।
পরের ওভারে বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফিলিপসের দারুণ এক ক্যাচের শিকার হন ১৬ রান করা ক্যাম্পবেল। মিড অন থেকে পেছনে দৌড়ে ক্যাচটি নিয়েছেন ‘জিপি’। নিজের পরের ওভারে কাভেম হজকেও ফেরান প্যাটেল। এরপর ডাফি যখন অ্যালিক অ্যাথানেজ ও জাস্টিন গ্রিভসকে ফেরালেন, রীতিমতো ধ্বংসস্তূপ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিনা উইকেটে ৮৭ থেকে ১০ ওভারের মধ্যে ৯৮/৫। আর ১ রান যোগ করে চা বিরতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর দ্বিতীয় সেশনের সেই মন্থর ব্যাটিং।
দ্বিতীয় সেশনে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রোস্টন চেজকে ফিরিয়ে চতুর্থ উইকেট পাওয়া ডাফি জেইডেন সিলসকে বোল্ড করে ম্যাচের সমাপ্তি টানেন তৃতীয় সেশনে। তাতে সিরিজে তৃতীয়বার ৫ উইকেট পেয়ে যান ৩১ বছর বয়সী পেসার। ম্যাচে ৯ উইকেট নেওয়া ডাফি দ্বিতীয় ইনিংসে ২২.৩ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৪২ রান। ৩ টেস্টে ২৩ উইকেট নেওয়া ডাফিই হয়েছেন সিরিজসেরা। নিউজিল্যান্ডের হয়ে এক টেস্ট সিরিজে এর চেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন মাত্র দুজন—রিচার্ড হ্যাডলি (৩৩) ও ব্রুস টেলর (২৭)।
ম্যাচসেরা হয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি করা ওপেনার ডেভন কনওয়ে।
২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জেতা নিউজিল্যান্ড এর আগে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটা ৩-১ ও ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ৫৭৫/৮ ডি. ও ৩০৬/২ ডি.।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪২০ ও ৮০.৩ ওভারে ১৩৮ (কিং ৬৭, ক্যাম্পবেল ১৬; ডাফি ৫/৪২, প্যাটেল ৩/২৩)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ৩২৩ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩-ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ২-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডেভন কনওয়ে
ম্যান অব দ্য সিরিজ: জ্যাকব ডাফি